অ্যাবডোমিনাল হার্নিয়া (Abdominal hernia)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

কোনো একটি অঙ্গ বা  টিস্যুর অংশ তার স্বাভাবিক স্থান হতে বাইরে বেরিয়ে আসলে তাকে হার্নিয়া বলে। যেমনঃ অন্ত্র বা অন্ত্রের অংশ তলপেটের প্রাচীরের দুর্বল অংশ দিয়ে বেরিয়ে আসা। তলপেটের প্রাচীর বিভিন্ন পেশী এবং টিস্যুর তৈরী স্তর দ্বারা গঠিত। এই স্তরের কোন কোন অংশ দুর্বল হয়ে পড়লে তার মধ্য দিয়ে পেটের মধ্যে থাকা অন্ত্র বা অন্ত্রের অংশ বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে। হার্নিয়া সবচেয়ে বেশি কুঁচকিতে [ইনগুইনাল হার্নিয়া(Inguinal hernias)] এবং মধ্যচ্ছদায় [হাইয়াটাল হার্নিয়া (Hiatal hernias)] হয়ে থাকে। এটি জন্মগতও হতে পারে আবার জন্মের পরেও যেকোনো সময় হতে পারে।

কারণ

হার্নিয়া জন্মগত ভাবেও হতে পারে আবার জন্মের পর ধীরে ধীরে তলপেটের প্রাচীরের দুর্বল অংশে হতে পারে। তলপেটের গহবরে চাপ বৃদ্ধির সাথে সাথে তা এর দুর্বল অংশে চাপ দেয় এবং হার্নিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

তলপেটের ভেতর বিভিন্ন কারনে চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে। যেমনঃ ক্রনিক (দীর্ঘদিন ধরে) কাশি, তলপেটের গহবরে তরল জমে যাওয়া এবং তলপেটের ভিতর টিউমার হওয়া বা ফুলে যাওয়া। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত ভারী বস্তু তোলার ফলে, প্রস্রাব বা মলত্যাগের সময় চাপ প্রয়োগ করলে, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য থাকলে, গর্ভাবস্থা, অতিরিক্ত মেদ এবং পেটে আঘাতের কারনেও হার্নিয়া হতে পারে।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

যদি হার্নিয়া অতিরিক্ত পরিমানে বৃদ্ধি পায় এবং তা থেকে আরোগ্য লাভ করা কঠিন হয়ে যায়, তখন তাকে ইরিডিউসিবল হার্নিয়া (irreducible hernia) বলে। এমতাবস্থায়  প্রসারিত অন্ত্র বা মেদ টিস্যুতে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।, তখন তাকে স্ট্র্যানগুলেটেড হার্নিয়া (Strangulated hernia) বলে যা একটি গুরুতর অবস্থা যার জরুরী অপারেশন প্রয়োজন।

হার্নিয়া হলে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ প্রয়োজনঃ

  • আক্রান্ত স্থান বেশি বেদনাদায়ক, নরম এবং লালবর্ণ হলে ।
  • দূর্বল বোধ করলে এবং অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন এবং ফ্যাকাসে চেহারা নিয়ে মূর্ছা যাওয়া ।
  • অসুস্থ বোধ এবং বমি করলে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতিঃ কৃষ্ণাঙ্গ এবং হিস্পানিকদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। শ্বেতাঙ্গ এবং অন্যান্যদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ প্রচণ্ড ব্যথাসহ তলপেট ফুলে যাওয়া হল এ্যাবডোমিনাল হার্নিইয়ার সাধারণ লক্ষণ। এটি সবচেয়ে বেশি হয় নাভী, কুঁচকি, পূর্বে অপারেশন হয়েছে এমন স্থান এবং মধ্যচ্ছদায়। ইনভেসিভ ল্যাপারোস্কোপিক অপারেশনের মাধ্যমে এর থেকে আরোগ্য লাভ করা যায় এবং খুব জলদি কাজে ফিরে যাওয়া যায়।

উত্তরঃ  তলপেটকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কিছু পোশাক ব্যবহার করা যায়, যা দিয়ে এ্যাবডোমিনাল হার্নিয়া্র কিছু লক্ষণ থেকে সাময়িক আরাম পাওয়া যায়। তবে এর অভ্যন্তরীণ অসুস্থতা থেকে সম্পুর্ণ আরোগ্য লাভ করা যায় না। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।

উত্তরঃ  এ্যাবডোমিনাল হার্নিইয়া হলে তলপেট ফোলা ছাড়াও ঐ স্থানে টান বা চুলকানি অনুভুত হয়ে থাকে। লক্ষণগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে যদি কাশি বা ভারী বস্তু তোলার জন্য ঐ স্থানে টান লাগে।

হেলথ টিপস্‌

যেসব কারণে এ্যাবডোমিনাল হার্নিয়া্ বেশি হয়ে থাকে সেসব কারণ  প্রতিরোধ করতে হবে। নিচে কতগুলো উপায় দেওয়া হলঃ

  • ঘন ঘন কাশি ও হাঁচি দেওয়ার কারণ খুজে বের করতে হবে এবং তার চিকিৎসা করতে হবে। ধূমপান হলো স্থায়ী কাশি হওয়ার সাধারন কারন। এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • অন্ত্রের কার্যকলাপ সঠিকভাবে যেন হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, আর এজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলমূল, সবজি এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  •  শরীরে মেদ যেন অতিরিক্ত পরিমানে বেড়ে না যায় সেদিকে খেয়াল এবং সঠিক ওজন বজায় রাখতে হবে।
  • অতিরিক্ত ভারী বস্তু তোলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

ডাঃ মোঃ মোশাররফ হোসেন

জেনারেল সার্জারী ( General Surgery)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(সার্জারী)

ডাঃ এবিএম মোস্তফা

জেনারেল সার্জারী ( General Surgery), ইউরোলজি ( মূত্রতন্ত্রের সার্জারী) ( Urology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(সার্জারী), এমআরসিএস, ইডিএমআইএস(ইউকে)

ডাঃ রনজিৎ কুমার মল্লিক

জেনারেল সার্জারী ( General Surgery)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(সার্জারী)

ডাঃ সৈয়দ আহসান আলী

জেনারেল সার্জারী ( General Surgery)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(সার্জারী)

অধ্যাপক ডাঃ ফিরোজ কাদের

জেনারেল সার্জারী ( General Surgery)

এমবিবিএস , এফসিপিএস , এফআইসিএস

ডাঃ মোঃ আমিনুল ইসলাম জোয়ারদার

জেনারেল সার্জারী ( General Surgery)

এমবিবিএস, এসএস(জেনারেল সার্জারি)

ডাঃ মোঃ শরিফ হোসেন মঈন

জেনারেল সার্জারী ( General Surgery)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(পার্ট-২), (জেনারেল সার্জারী ও ইউরোলজী), সিসিডি(ডায়াবেটিস বারডেম)

ডাঃ মোঃ ইকবাল হোসেন তালুকদার

জেনারেল সার্জারী ( General Surgery)

এমবিবিএস, , এফসিপিএস(সার্জারী)