সাধারণ সর্দি-কাশি (Common cold)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

সাধারণ সর্দি-কাশি মারাত্মক কোনো রোগ নয়। শ্বাসযন্ত্রের উপরের অংশ (গলা ও নাক) ভাইরাল ইনফেকশন দ্বারা আক্রান্ত হলে সর্দি-কাশি হয়ে থাকে। এই অবস্থায় একই সাথে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন- নাক ও চোখ দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি, কাশি এবং নাকে বদ্ধতা অনুভব করা। প্রায় একশ ভাইরাসের মধ্যে যে কোনো একটির দ্বারা সর্দি-কাশি হতে পারে। 

৩-৫ বছর বয়সী শিশুদের ঘনঘন সর্দি-কাশি দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তবে স্বাস্থ্যবান যেকোনো প্রাপ্তবয়স্কেরও এই সমস্যা হতে পারে। সাধারণত এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে এই রোগ এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তবে এই সময়ের মধ্যে রোগী ভাল না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সাধারণ সর্দি-কার্শির সমস্যা অ্যাকিউট রাইনাইটিস (Acute Rhinitis) বা অ্যাকিউট ন্যাসোফ্যারিঞ্জাইটিস (Acute Nasopharyngitis) নামে পরিচিত।

কারণ

মূলত রাইনোভাইরাসের কারণে সর্দি-কাশি হয়ে থাকে। এটি অতিমাত্রায় ছোঁয়াছে। অসুস্থ কোনো ব্যক্তি হাঁচি বা কাশি অথবা কথা বললে এই ভাইরাস বাতাসে  ভেসে বেড়ায় এবং নাক, চোখ বা মুখগহ্বরের মাধ্যমে সরাসরি অন্য কোনো ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করে। আবার হাতের স্পর্শের মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র যেমন থালা-বাসন ও তোয়ালে ব্যবহার করলেও এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

লক্ষণ

চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখতে পানঃ

চিকিৎসা

চিকিৎসকেরা এই রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নের ঔষধগুলো দিয়ে থাকেনঃ

desloratadine dextromethorphan
fexofenadine hydrochloride paracetamol
pseudoephedrine

চিকিৎসকেরা এই রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নের টেস্টগুলো দিয়ে থাকেনঃ

ইনফ্লুয়েঞ্জাভাইরাস অ্যান্টিবডি অ্যাসে (Influenzavirus antibody assay)
এক্স-রে, চেস্ট পি-এ ভিউ (X-ray, Chest P/A view)

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

সর্দি-কাশির ভাইরাস সবসময়ই পরিবেশে উপস্থিত থাকে। তবে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের প্রভাবে সর্দি কাশি হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়, যেমন-

  • বয়স: নবজাতক ও ৩-৫ বছর বয়সী শিশুদের এ রোগ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। কেননা এই বয়স সীমার মধ্যে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অপরিণত অবস্থায় থাকে, যার ফলে তা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে না। তবে শুধুমাত্র অপরিণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে না। অন্যান্য কিছু বিষয়ও এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে, যেমন- শিশুদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব। আক্রান্ত ব্যক্তি/শিশুর সাথে খেলাধুলার পর ভালোভাবে হাত না ধুলে বা হাঁচি-কাশির সময় নাক ও মুখ না ঢাকার কারণে খুব সহজেই সর্দি-কাশি হতে পারে। নবজাতকের ক্ষেত্রে সর্দি-কাশির জন্য শ্বাসকষ্টও হতে পারে।
  • দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা: দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়ার কারণে শিশুদের এ রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। বয়স বাড়ার সাথে আমাদের দেহে বিভিন্ন অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা ভাইরাস প্রতিরোধে সাহায্যে করে। কোনো কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়লে বা এই অ্যান্টিবডি কাজ না করলে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও ঘনঘন সর্দি-কাশি দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • বছরের নির্দিষ্ট সময়: সাধারণত শরৎ ও শীতকালে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু উভয়ের ক্ষেত্রে সর্দি-কাশির প্রকোপ বেশি থাকে। আবার উষ্ণমণ্ডলের দেশসমূহে বর্ষাকালে সর্দি-কাশি বেশি হয়ে থাকে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

জাতি: কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ সাধারণ সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে গলা বসে যায়, নাক বন্ধ হয়ে যায় ও কাশি হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে  জ্বরও হয়ে থাকে। ফ্লুয়ের ক্ষেত্রে গলা বসে যায় ও জ্বর হয়। একই সাথে মাথাব্যথা, পেশীতে ব্যথা, কাশি, নাক ও গলায় আবদ্ধতা অনুভূত হয়। তবে এই দুটি সমস্যাই ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে এবং সাধারণত তিন থেকে সাত দিন স্থায়ী হয়।

উত্তরঃ সর্দি-কাশি হলে বিভিন্ন উপসর্গ যেমন নাক ও চোখ দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি ও কাশি দেখা দেয়।  এছাড়া পরীক্ষা করার মাধ্যমেও এ রোগ নির্ণয় করা হয়ে থাকে।

হেলথ টিপস্‌

সাধারণ সর্দি-কাশির কোনো ভ্যাক্সিন বা প্রতিষেধকের ব্যবস্থা নেই। এই ভাইরাল ইনফেকশন অতিমাত্রায় ছোঁয়াছে হয়ে থাকে। তাই এর বিস্তার প্রতিরোধে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। যেমন-

  • সাবান ও পানি দিয়ে হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। প্রয়োজনে Hand-santizer ব্যবহার করতে হবে।
  • সর্দি-কাশি হলে বারবার চোখ, নাক ও মুখে হাত লাগানো উচিৎ নয়। এতে ভাইরাস খুব সহজে সরাসরি শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে, স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে ও পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।
  • পরিবারের কেউ সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হলে ঘরবাড়ি ও এর আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  • হাঁচি ও কাশির সময় টিস্যুর সাহায্যে নাক ও মুখ ঢাকতে হবে এবং ব্যবহৃত টিস্যু ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

ডাঃ মোঃ জহিরুল ইসলাম

ফ্যামিলি মেডিসিন ( Family Medicine)

এমবিবিএস(ঢাকা), এফসিজিপি, পোষ্ট ফেলোশিপ ট্রেনিং ইন পেডিয়াট্রিক্‌

ডাঃ মোঃ সাজ্জাদ হোসেন

মেডিসিন ( Medicine), ডায়াবেটোলজিষ্ট ( Diabetologist)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), ট্রেইন্ড ইন কার্ডিওলজী

ডাঃ মোঃ ছালেহ আহমেদ সোহেল

ফ্যামিলি মেডিসিন ( Family Medicine)

এমবিবিএস (ঢাকা), পিজিটি (শিশু মেডিসিন), এফসিজিপি (এফ মেডিসিন), সি-আল্ট্রা

ডাঃ শারমিন জাহান

মেডিসিন ( Medicine), এন্ডোক্রাইনোলজি এন্ড মেটাবলিজম ( হরমোন) ( Endocrinology & Metabolism), ডায়াবেটোলজিষ্ট ( Diabetologist)

এমবিবিএস(ডিএমসি), এফসিপিএস(মেডিসিন), এমডি(এন্ডোক্রাইনোলজী)

ডাঃ মোস্তফা আওলাদ হোসাইন(সফি)

ফ্যামিলি মেডিসিন ( Family Medicine)

এমবিবিএস(ডিইউ), এমপিএইচ, এফসিজিপি, এফসিপিএস(পার্ট-২), এমআরসিপি(পার্ট-২), সিসিডি(বারডেম), সিডিডি(আইসিডিডিআরবি)

ডাঃ নন্দিতা পাল

মেডিসিন ( Medicine), কার্ডিওলজি ( হার্ট) ( Cardiology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), ডি-কার্ড

ডাঃ ফারুক আহমেদ

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন)

অ্যাপক ডাঃ ফেরদৌস আরা জে . জানান

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস ,, এমডি (আমেরিকা ) , এফ আইবিএ (ইংল্যান্ড) , এফসিপিএস (এম) , এফ আরসিপি (এডিন), , এফএসিপি (আমেরিকা)