কিডনির ক্যান্সার (Kidney cancer)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

কিডনির কোষের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়াকে কিডনির ক্যান্সার বলে । প্রাপ্তবয়স্করা সাধারণত রেনাল টিউবিউলে সৃষ্ট রেনাল সেল কারসিনোমা নামক এক ধরনের কিডনির ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। সার্জারির মাধ্যমে এই রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। রেডিয়েশন থেরাপি ও কেমোথেরাপির মাধ্যমে রেনাল সেল কারসিনোমার চিকিৎসা সম্ভব নয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে ইমিউনোথেরাপি কাজ করতে পারে। বংশে কিডনির ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তির উপস্থিতি, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন ও ডায়ালিসিসযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ কিডনির ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। শিশুরা সাধারণত উইলমা টিউমার নামক এক ধরনের কিডনির ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।

কারণ

রেনাল সেল কারসিনোমার কারণ স্পষ্ট নয়। তবে চিকিৎসকদের মতে, কিছু কিডনির কোষের ডিএনএ (DNA)-তে রূপান্তর (মিউটেশন) ঘটলে কিডনির ক্যান্সার হয়ে থাকে। এই মিউটেশন কোষগুলিকে দ্রুত  বৃদ্ধি ও বিভক্ত হওয়ার জন্য সংকেত প্রদান করে । এই অস্বাভাবিক কোষগুলি টিউমারের সৃষ্টি করে যা কিডনির বাইরেও প্রসারিত হতে পারে। এর মধ্যে কিছু কোষ বিস্তৃত হয় এবং শরীরের দূরবর্তী অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:

চিকিৎসা

 চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত ঔষধগুলি গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন: 

bevacizumab doxorubicin hydrochloride
ifosfamide interferon alpha
paclitaxel vincristine
vinblastine

চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত টেস্টগুলি করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন: 

ইলেক্ট্রোলাইটস, সেরাম (Electrolytes, serum)
কিডনী ফাংশন টেস্ট (Kidney function test)
লিভার ফাংশন টেস্ট (Liver function tests)
এস-জি-ও-টি / এ-এস-টি (SGOT/AST)
এস-জি-পি-টি/ এ-এল-টি (SGPT/ALT)
সি-বি-সি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট) (CBC, Complete Blood Count)
ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স ইমেজিং (এম-আর-আই) (Magnetic resonance imaging (MRI))
ইউরিন এনালাইসিস (Urinalysis)
রেনাল বায়োপসি (Renal Biopsy)
সিটি স্ক্যান (CT scan)

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নে লিখিত বিষয়গুলি কিডনির ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে:

  • বয়স: বয়স বাড়লে কিডনি ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • ধূমপান: অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের কিডনির ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • অতিরিক্ত ওজন: শরীরের ওজন অতিরিক্ত হলে কিডনির ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায়।
  • কিডনি ফেইলিওরের চিকিৎসা: কিডনি ফেইলিওরের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে ডায়লিসিস করা হলে কিডনির ক্যান্সার হতে পারে।
  • বংশগত প্যাপিলারি রেনাল সেল কারসিনোমা: বংশগত এই রোগটির কারণেও কিডনির ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। নারীদের মধ্যে এই বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাত: কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ২ গুণ কম। শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পরতা সম্ভাবনা থাকে। হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ বেশিরভাগ কিডনির ক্যান্সারই বংশগত নয়।

উত্তরঃ সাধারণত কিডনির ক্যান্সার প্রাণঘাতী হয়ে থাকে। তবে কিছু বিষয়ের কারণে কিডনির ক্যান্সার অনেক সময় প্রাণঘাতী নাও হতে পারে। রোগীর বয়স, টিউমার বৃদ্ধির হার ও টিউমারের আকার ইত্যাদি বিষয়গুলি এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে।

উত্তরঃ কিডনির ক্যান্সারের ৪টি পর্যায় আছে। প্রথম দুইটি স্তরে ক্যান্সার কিডনিতে সীমাবদ্ধ থাকে। তৃতীয় স্তরে ক্যান্সার কিডনির দেওয়ালের (গেরোটাস ফ্যাসিয়া) বাইরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ৪র্থ পর্যায়ে ক্যান্সার পার্শ্ববর্তী আক্রান্ত অঙ্গগুলিকে আক্রমণ করে।

হেলথ টিপস্‌

নিম্নে লিখিত বিষয়গুলি অনুসরণের মাধ্যমে কিডনির ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব-

  • ধূমপান ত্যাগ করা: ধূমপান ত্যাগ করুন। কিছু ঔষধ ও নিকোটিন প্রতিস্থাপনকারী দ্রব্য গ্রহণের মাধ্যমে ধূমপান ত্যাগ করা সম্ভব। এই ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
  •  ফল ও শাকসবজি খাওয়া: আপনার খাদ্যতালিকায় অধিক পরিমাণে ফল ও শাকসবজি রাখুন। বিভিন্ন ধরনের ফল ও শাকসবজি গ্রহণ আপনাকে প্রয়োজনীয় সব নিউট্রিয়েন্ট পেতে সাহায্য করবে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন: শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনাকে সচেষ্ট হতে হবে। আপনার ওজন বেশি হলে প্রতিদিন কম ক্যালরিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করুন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ওজন কমানোর অন্যান্য পদ্ধতি সম্পর্কে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ:  চিকিৎসককে আপনার রক্তচাপ মেপে দেখতে বলুন, উচ্চ রক্তচাপ থাকলে  চিকিৎসকের সাথে তা নিয়ন্ত্রনে আনার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। ব্যায়াম, ওজন হ্রাস এবং খাদ্যাভ্যাস এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।  কিছু ব্যক্তির এ জন্য ঔষধও গ্রহণ করা লাগতে পারে।     

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ মাসুম কামাল খান

নেফ্রোলজি ( কিডনি) ( Nephrology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), এমডি (নেফ্রোলোজি)

ডাঃ মোঃ রাশেদ আনোয়ার

নেফ্রোলজি ( কিডনি) ( Nephrology)

এমবিবিএস, এমডি(নেফ্রোলজী)

অধ্যাপক ডাঃ মোঃ ফিরোজ খাঁন

নেফ্রোলজি ( কিডনি) ( Nephrology)

এমবিবিএস, , এমডি(নেফ্রোলজী), , এফআরসিপি(ইংল্যাড), , আই এস এন ফেলো(জাপান)

ডাঃ লুৎফুন নাহার

অঙ্কোলজি ( ক্যান্সার) ( Oncology)

এমবিবিএস(ঢাকা), এমফিল(রেডিওথেরাপী)

জেঃ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আজিজুল ইসলাম

মেডিসিন ( Medicine), অঙ্কোলজি ( ক্যান্সার) ( Oncology)

এমবিবিএ(ঢাকা),, এফসিপিএস(মেডিসিন) , ওজেটি(মেডিসিন অনকোলজী)

অধ্যাপক মোঃ মোশারফ হোসেন

অঙ্কোলজি ( ক্যান্সার) ( Oncology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস, ডিএমআরটি

অধ্যাপক ব্রিঃ জেঃ ডাঃ মোঃ ফজলুল হক

মেডিসিন ( Medicine), নেফ্রোলজি ( কিডনি) ( Nephrology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), ডিপ্লোমা নেফ্রোলজী(চীন)

ডাঃ মোঃ মোরশেদ আলম

নেফ্রোলজি ( কিডনি) ( Nephrology)

এম বি বি এস, এম ফিল, ফেলোশিপ ইন নেফ্রোলজী (জাপান)