লেইশম্যানিয়াসিস বা কালাজ্বর (Leishmaniasis)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

কালাজ্বর পরজীবি দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ। এটি স্যান্ডফ্লাই (Sandfly) নামক এক প্রকার মাছির মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে।

দুইভাবে এই রোগ প্রকাশ পেতে পারে-

  • কিউটেনিয়াস লেইশম্যানিয়াসিস (Cutaneous leishmaniasis): এটি ত্বকে হয়ে থাকে এবং খুব বেশি গুরুতর নয়।
  • ভিসেরাল লেইশম্যানিয়াসিস (Visceral leishmaniasis): এটি দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহের ক্ষতিসাধন করে। এর ফলে রোগী মৃত্যুবরণ করতে পারে।

স্যান্ডফ্লাই সাধারণত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে বেশি পাওয়া যায়। কালাজ্বর সাধারণত গ্রাম অঞ্চলে বেশি হয়।

কারণ

লেইশম্যানিয়া বর্গের পরজীবীর সংক্রমণের কারণে কালাজ্বর হয়ে থাকে।  এই পরজীবী স্ত্রী স্যান্ডফ্লাইয়ের অভ্যন্তরে জীবনধারণ এবং বংশবৃদ্ধি করে। এরা গ্রীষ্মকালের আর্দ্র পরিবেশে সবসময় সক্রিয় থাকে এবং কুকুরের মতো গৃহপালিত পশু এই পরজীবীর বাহক হিসেবে কাজ করে। এরা কুকুর থেকে স্যান্ডফ্লাই আর স্যান্ডফ্লাই থেকে মানবদেহে বিস্তার লাভ করে।

এই পরজীবী রক্ত প্রদান বা একই সিরিঞ্জের ব্যবহারের মাধ্যমে ছড়ায়।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:

চিকিৎসা

 চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত ঔষধগুলি গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন: 

allopurinol interferon gamma
itraconazole ketoconazole
sodium stibogluconate amphotericin B liposomal

চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত টেস্টগুলি করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন: 

লিভার ফাংশন টেস্ট (Liver function tests)
সি-বি-সি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট) (CBC, Complete Blood Count)
পি-বি-এফ (পেরিফেরাল ব্লাড ফিল্ম) (PBF (Peripheral Blood Film))
পি-টি (প্রোথ্রম্বিন টাইম) (PT (Prothrombin time))
বায়োপসি (Biopsy)
টিস্যু কালচার (Tissue culture)
পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (Polymerase chain reaction, PCR)
আই-সি-টি ফর কালাজ্বর (ICT for Kala-Azar)

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নলিখিত বিষয়ের কারণে কালাজ্বর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়:

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউ-এইচ-ও (WHO) অনুসারে এই রোগটি দারিদ্রতার সাথে সম্পর্কযুক্ত।

যেসব এলাকায় নিম্নলিখিত সমস্যাগুলো থাকে সেসব এলাকায় এই রোগটি বেশি দেখা যায়:

  • দারিদ্র্য (Poverty)।
  • অপুষ্টি (Malnutrition)।
  • নিরক্ষরতা।
  • দুর্ভিক্ষ।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ  পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতিঃ  কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ২ গুণ বেশি। হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ৩ গুণ বেশি। শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম। অন্যান্য জাতির মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ৯ গুণ বেশি।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ যদি ভিসেরাল লেইশম্যানিয়াসিসের চিকিৎসা করা না হয় তবে গর্ভাবস্থায় শিশুর মৃত্যু হতে পারে।

উত্তরঃ কালাজ্বর একটি সংক্রামক রোগ। এই রোগের জীবাণু লালা, কফ, বায়ু, রক্ত, ব্যবহৃত সূচ, রক্ত প্রদান, যৌন সম্পর্ক এবং মায়ের গর্ভে থাকাকালীন ছড়িয়ে থাকে। জিনগত বা বংশগত কারণে এই রোগ বিস্তার লাভ করে না।

হেলথ টিপস্‌

নিম্নলিখিত বিষয়ের মাধ্যমে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব:

এই রোগের চিকিৎসার জন্য কোনো ধরনের ভ্যাকসিন বা প্রোফাইল্যাক্টিক মেডিসিন নেই। স্যান্ডফ্লাইয়ের বিস্তার রোধের মাধ্যমেই এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

স্যান্ডফ্লাই কামড় থেকে বাঁচতে হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করতে হবে:

  • লম্বা প্যান্ট বা লম্বা হাতাযুক্ত জামা ব্যবহার করতে হবে, যাতে করে শরীরের বেশিরভাগ অংশ ঢেকে থাকে। পায়ের সুরক্ষার জন্য লম্বা মোজাও ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • পোকামাকড় বা মশা-মাছি প্রতিরোধক ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করতে হবে।
  • বাড়ির ফাঁকা জায়গাগুলোতে কীটনাশক ব্যবহার করে মশা-মাছি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • উচুঁ বিল্ডিংয়ের ফ্ল্যাটে থাকা যেতে পারে। কারণ খুব উচুঁতে উড়তে পারে না।
  • খুব সকালে এবং সন্ধ্যা বেলায় বাইরের কাজ করা থকে বিরত থাকতে হবে, কারণ এই সময় এই মাছি বেশি সক্রিয় থাকে।
  • ঘরের ভেতরে থাকা অবস্থায় জানালায় পর্দা দিয়ে রাখতে বা এয়ার কন্ডিশনার অন করে রাখতে হবে।
  • ঘুমানোর সময় মশারী ব্যবহার করতে হবে, কারণ এই মাছি অন্যান্য মশার তুলনায় ক্ষুদ্রাকৃতির।

এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে এমন অঞ্চলে ভ্রমণের আগে মশারী, কীটনাশক ও মশা-মাছি প্রতিরোধক ক্রিম বা লোশন সঙ্গে নিতে হবে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

ডাঃ শরিফ উদ্দীন খান

মেডিসিন ( Medicine), নিউরোলজি ( স্নায়ুতন্ত্র) ( Neurology)

এমবিবিএস, এমডি(নিউরোলজী ), এমডি(নিউরোলজী )

ডাঃ এম রহমান

মেডিসিন ( Medicine), গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology)

এমবিবিএস, এমসিপিএস, ডিএসএম(গ্যাস্ট্রো), এমডি(গ্যাস্ট্রো), এফসিপিএস(মেডিসিন)

অধ্যাপক ডাঃ ফজলুর রহমান

মেডিসিন ( Medicine), কার্ডিওলজি ( হার্ট) ( Cardiology)

এমবিবিএস(ঢাকা), , এমসিপিএস(মেডিসিন), , ডি-কার্ড(ডিইউ), , এমডি(হৃদরোগ),, এফএসিসি(আমেরিকা)

ডাঃ মহিউদ্দিন আহমেদ

মেডিসিন ( Medicine), নিউরোলজি ( স্নায়ুতন্ত্র) ( Neurology)

এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস(স্বাস্থ্য), এফসিপিএস(মেডিসিন), এমডি(নিউরোমেডিসিন)

ডাঃ মোঃ ইলিয়াস ভূঞা

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন শেষ পর্ব), এমআরসিপি(পার্ট-২)

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল আলীম (অবঃ)

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস(ঢাকা), এফসিপিএস(মেডিসিন), এফএসিপি(ইউএসএ), এফআরসিপি(গ্লাসগো), সিনিয়র ফেলোসিপ(সিঙ্গাপুর)

ডাঃ রকিবুল ইসলাম

মেডিসিন ( Medicine), গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology)

এম বি বি এস, , এম ডি(গ্যাসট্রোলজি),, এফ সি পি এস (মেডিসিন)

ডাঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস (ঢাকা), ডিটিসিডি (ঢাঃবিঃ), এফসিপিএস (আমেরিকা)