পোস্টপার্টম হেমারেজ/ প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ (Postpartum Hemorrhage)
শেয়ার করুন
বর্ণনা
বিশ্বব্যাপি মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ হচ্ছে পোস্টপার্টম হেমারেজ (প্রসব
পরবর্তী রক্তক্ষরণ) বা সংক্ষেপে পি-পি-এইচ (PPH)। প্রসবের পর স্বাভাবিকের
তুলনায় রক্তপাত হলে, বিশেষ করে নরমাল ডেলিভারীর পর ৫০০ মি.লি এর বেশি বা
সিজার ডেলিভারীর পর ১০০০ মি.লি এর বেশি রক্তক্ষরণ হলে তাকে পোস্টপার্টম
হেমারেজ বলে।
কারণ
বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-
সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ
এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ
নিম্লিখিত বিষয়ের জন্য এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়ঃ
পূর্বে এই সমস্যা দেখা দিলে পরবর্তীতে আবার এটি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
গর্ভকালীন
সময়ে ব্লাড প্রেশার বেড়ে গেলে, দেহে পানি জমলে বা প্রস্রাবে প্রোটিনের
পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেলে এই সমস্যা দেখা যায়। এই সমস্যাকে
প্রি-অ্যাক্লেম্পসিয়া বলে।
প্লাসেন্টা বা অমরায় কোনো ধরনের ত্রুটি থাকলে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
যেসব মহিলারা অধিক মোটা তাদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেশি।
প্রথমবার
প্রসবের সময় বা একাধিক বার সন্তান প্রসবের ফলে অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের
মাত্রা বেড়ে গেলে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে
লিঙ্গঃ মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।
জাতিঃ
শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।
হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যান্য জাতিদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ২ গুণ কম।
উত্তরঃ ২ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশ প্রসবের ক্ষেত্রে পোস্টপার্টম হেমারেজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তরঃ পোস্টপার্টম হেমারেজের কারণে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে। যার ফলে
ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যায়, মাথা ঘোরায়, শ্বাসকষ্ট হয় ও হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়।
হেলথ টিপস্
নিম্নলিখিত পন্থা অবলম্বন করে এই লক্ষণ প্রতিরোধ করা
প্রসবের পূর্বেঃ
ব্যক্তির বিভিন্ন অন্তর্নিহিত
সমস্যা যেমন অ্যানিমিয়া, প্রি-অ্যাক্লেম্পসিয়া, হেরিডিটারী ব্লাড ক্লটিং
ডিজঅর্ডার, ইনফেকশন থাকলে তা নির্ণয় করতে হবে এবং এর চিকিৎসা করাতে হবে।
গর্ভাবস্থার তৃতীয় দশায় গর্ভবতী মহিলাদের ইউটেরোনিক মিসোপ্রস্টল ঔষধ দিতে হবে।
প্রসবের সময়ঃ
যতক্ষণ না প্রয়োজন ততক্ষণ পর্যন্ত বিভিন্ন পদ্ধতি ইন্ডাকশন, অগমেনশন, এপিসিওটমি, ফরসেপ্স, ভ্যাকিউম বা সিজার প্রয়োগ করা যাবে না।
ইউটেরাস বা জরায়ু মুখ সম্পূর্ণভাবে প্রসারিত হওয়ার পূর্বে জোরপূর্বক চাপ প্রয়োগ করা যাবে না।
পেটের উপর কোনো ধরনের ফান্ডাল প্রেশার দেওয়া যাবে না।
ইউটেরাসের উপর চাপ প্রয়োগ করা যাবে না।
দরকার না হলে কর্ড ট্র্যাকশন ব্যবহার করা যাবে না।
প্রসবের পরঃ
প্রসবের পর জননাঙ্গে কোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা দেখা দিচ্ছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
প্রসবের
পর আড়াই ঘন্টা পর্যন্ত প্রতি ১৫ মিনিট পর পর ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং হচ্ছে
কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং ইউটেরাস ম্যাসাজ করতে হবে।