প্রস্রাবের সাথে পুজঁ বের হওয়া (Pus in urine)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় প্রস্রাবের সাথে পুঁজ বের হওয়াকে পাইউরিয়া (Pyuria) বলা হয়। এর ফলে মিডস্ট্রিম ইউরিনে (ইউরিনেশন বা মূত্রত্যাগের মাঝামাঝি পর্যায়কে মিডস্ট্রিম ইউরিন বলা হয়) প্রতি হাই পাওয়ার ফিল্ডে নিউট্রীফিলসের পরিমাণ ৬-১০ বা এর অধিক হয়ে থাকে। এটি ব্যাকটেরিয়াল ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (মূত্রনালীর ইনফেকশন) এর লক্ষণ হতে পারে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বয়স্ক ব্যক্তিদের বা ইনফেকশনে আক্রান্ত রোগীদের এ সমস্যা হতে পারে।

কারণ

বিভন্ন কারণে প্রস্রাবের সাথে পুঁজ বের হতে পারে। বিভিন্ন যৌনরোগ যেমন ক্ল্যামেডিয়া বা গনোরিয়ার জন্য এমন হতে পারে। আবার অন্যান্য ইনফেকশন যেমন ভাইরাল ইনফেকশন, মাইকোপ্লাজমা, অ্যানারোবিক ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন, ফাস্টিডিয়াস ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন, ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা টিউবারকুলেসিসের কারণেও প্রস্রাবের সাথে পুঁজ বের হয়ে থাকে। পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রস্টেটে ইনফেকশন হওয়ার ফলে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সংক্রমণ ব্যতীত অন্য কারণেও পাইউরিয়া হতে পারে। যেমন গর্ভাবস্থায় এবং বয়স বাড়ার সাথে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কোনো শারীরিক অসুস্থতার জন্য গ্লুকোকর্ডিকয়েড ঔষধ ব্যবহারের ফলে, টিউমারের কারণে বা কিডনিতে পাথর হলে প্রস্রাবের সাথে পুঁজ দেখা দিতে পারে।

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

মূত্রনালীতে ইনফেকশন হলে বিশেষ করে, ইউরেথ্রাইটিস দেখা দিলে এর সাথে পাইউরিয়া দেখা দিতে পারে। ক্যাথেটারাইজেশন ও ইউরিন ইনকন্টিনেন্স (মূত্রের বেগ ধরে রাখতে না পারা) এর কারণে পাইউরিয়া দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ৯ গুণ কম।

জাতিঃ শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ৪ গুণ কম। হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা  ৩ গুণ কম।  অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ ঠিক কি কারণে পাইউরিয়া দেখা দিয়েছে, তার উপর রোগীর আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা নির্ভর করে। অ্যাসিম্পটোম্যাটিক পাইউরিয়া (কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ ছাড়া কোনো রোগ দেখা দিলে তাকে অ্যাসিম্পটোম্যাটিক বলা হয়) সাধারণত এমনিতেই সেরে যায় বা এর জন্য অন্য কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয় না। যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্যে চিকিৎসা করা হলে মূত্রনালীর ইনফেকশন খুব সহজে ভালো হয়ে যায়। অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি ছাড়াও এই ইনফেকশন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে সুস্থ হতে কিছুটা বেশি সময় লাগে। 

হেলথ টিপস্‌

পাইউরিয়া প্রতিরোধ করতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করা যেতে পারে-

  • মূত্রনালীর ইনফেকশন প্রতিরোধের জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। বিশেষ করে  যৌনাঙ্গ ও মলদ্বার ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। কেননা দেহের এসব অংশে বিভিন্ন জীবাণু থাকে যা খুব সহজে দেহে প্রবেশ করতে পারে।
  • যৌনমিলনের আগে ও পরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য গোসল করতে হবে।
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এর ফলে মূত্র বা প্রস্রাবের সাথে মূত্রনালীতে উপস্থিত ব্যকটেরিয়া বাইরে বেরিয়ে আসে।