অস্বাভাবিক থুতু (Abnormal sputum)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

গলা, শ্বাসনালী (bronchial passages) এবং ফুসফুসে সৃষ্ট ঘন, পিচ্ছিল ও আঠালো  পদার্থকে থুতু (শ্লেষ্মা) বলে। এর মধ্যে মিউকাস (mucus) এবং অন্যান্য কিছু উপাদান বিদ্যমান থাকে। অন্যান্য এই উপাদানগুলির মধ্যে মৃত কোষ, পাস (pus) এবং ধূলার মতো বাহ্যিক উপাদান থাকতে পারে। তবে নিউমোনিয়ার মতো শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশনের কারণে কাশি না হলে  শ্লেষ্মার উপস্থিতি টের পাওয়া যায় না। সিসটিক ফাইব্রোসিস এবং অ্যাজমার মতো যেসব রোগের কারণে অতিরিক্ত পরিমাণে শ্লেষ্মা উৎপন্ন হয়, সেগুলিতে আক্রান্ত হলেও এর উপস্থিতি টের পাওয়া যায়।

যখন শ্লেষ্মা কোনো রোগ বা অস্বাভাবিক শারীরিক অবস্থার কারণে দেখা দেয়, তখন এতে নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা দেয়। বৈশিষ্ট্যগুলি হলোঃ

  • শ্লেষ্মা অস্বাভাবিক ঘন এবং পুঁজপূর্ণ।
  • রক্তপূর্ণ বা ঈষৎ রক্ত থাকা।
  • শ্লেষ্মা অতিরিক্ত পরিমাণে উৎপন্ন হওয়া।
  • হলুদ বা সবুজাভ রঙ।

সাধারণত কাশি দেওয়ার মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাসের পথ পরিষ্কার করে ফেলা সম্ভব। তবে আপনি যদি দুর্বল হন, বা আপনার শরীরে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে শ্লেষ্মা উৎপন্ন হয় তাহলে আপনার এক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত ঘন শ্লেষ্মা উৎপন্ন হলেও আপনার সমস্যা হতে পারে।

বেশ কিছু সাধারণ বা গুরুতর শারীরিক সমস্যার কারণে থুতুর সাথে সম্পর্কযুক্ত লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে, যেমন- ইনফেকশন, ইনফ্লামেশন (প্রদাহ), অ্যালার্জি, ট্রমা (মানসিক আঘাত), ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া।

কিছু ক্ষেত্রে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (chronic obstructive pulmonary disease) ও ফুসফুসের ক্যানসারের মতো কিছু কিছু গুরুতর এবং প্রাণনাশী রোগ বা শারীরিক অবস্থার কারণেও এই লক্ষণগুলি দেখা দেয়। শ্লেষ্মা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে উৎপন্ন বা নির্গত হয় তাহলে  চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। এছাড়া শ্লেষ্মায় অস্বাভাবিকতা  দেখা দিলে, দীর্ঘ সময় ধরে তা নির্গত হলে বা বারবার দেখা দিলেও আপনার চিকিৎসা নিতে হবে।

শ্লেষ্মার কারণে আপনার যদি শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, গলা ফোলা, মুখ ফোলা, মুখগহ্বর ফোলার মতো সমস্যা হয়, তাহলে আপনার দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। শ্লেষ্মায় রক্ত দেখা দিলে বা তা গোলাপী (লাল) ও ফেনাযুক্ত হলেও দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: বিভিন্ন স্থান থেকে আসা রক্ত শ্লেষ্মার সাথে মিশতে পারে। নাকের মধ্যকার অংশ শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়ার কারণে সেখান থেকে রক্তপাত হলে তা ফ্যারিঙ্কসে (pharynx) প্রবেশ করে শ্লেষ্মার সাথে মিশতে পারে। মুখগহ্বর, ফ্যারিঙ্কস, শ্বাসনালী অথবা  খাদ্যনালীতে ইনফেকশন হলে বা ক্ষত হলে এসব স্থান থেকেও রক্ত আসতে পারে। ফুসফুস থেকে উঠে আসা শ্লেষ্মা পরীক্ষা করে দেখা উচিৎ, কারণ তা ইনফেকশন বা ক্যানসারের কারণে দেখা দিতে পারে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া  উচিৎ।

উত্তর: স্পুটাম কালচারে ধরা পড়তে বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়ার কয়েক ঘন্টা বা কয়েক দিন সময় লাগে। টি বি ও এর সাথে সম্পর্কযুক্ত ইনফেকশন সৃষ্টিকারী জীবাণু ধরা পড়তে ২ মাসও লাগতে পারে। কিছু কিছু জীবাণু কালচারে জন্ম নেয় না। মনে রাখা প্রয়োজন যে, কালচারে ধরা পড়া সব  জীবাণু ইনফেকশন সৃষ্টি করে না, এবং কালচারের ফলাফল নেগেটিভ হলেও কিছু ইনফেকশনের সম্ভাবনা থেকে যায়। যে কোনো পরীক্ষার মতোই কালচারে ভুল নেগেটেভ বা পজেটিভ ফলাফল আসতে পারে।