বাহুর সমস্যা (Arm symptoms)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

বাহুর সমস্যা বলতে বাহুর ব্যথা, বাহু অবশ হওয়া, বাহু শক্ত হওয়া অথবা বাহু নাড়ানোর সমস্যাকে বোঝায়। বাহুর ব্যথা তীব্র, প্রদাহযুক্ত ও কেটে যাওয়ার অনুভুতির মতো হতে পারে। এই ব্যথা মাঝারি থেকে উচ্চ মাত্রার হতে পারে।  অনেক  ক্ষেত্রে শরীরের  অন্য কোনো স্থান আঘাতপ্রাপ্ত হলে বা রোগে আক্রান্ত হলে সেখান থেকেও বাহুর সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

বাহুর হাড়, সন্ধি,  টেনডন (tendon) , স্নায়ু, মাংসপেশী, সংযোগকারী টিস্যু, ত্বক, শিরা ও ধমনী আঘাতপ্রাপ্ত হলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাহুর সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাহুর সমস্যা সম্পূর্ণ বাহুতেও দেখা  দিতে পারে, আবার শুধু বাহুর উপরের অংশ, নীচের অংশ, কনুই বা আরো ছোট অংশেও দেখা দিতে পারে। বাহুর সমস্যা স্থায়ী ও অস্থায়ী- দুই ধরনেরই হতে পারে। বাহু নাড়াচাড়া করলে এই সমস্যা অনেক ক্ষেত্রে কমে যেতে পারে, আবার অনেক ক্ষেত্রে আরও বেশি হতে পারে।

অনেক ক্ষেত্রে স্নায়ু ও মাংসপেশীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন  রোগের সাথে বাহুর সমস্যার সম্পর্ক থাকে, যেমন- সেলেব্রাল পালসি (cerebral palsy) এবং পলিমাইওসাইটিস (polymyositis)-এর মতো মাংসপেশীর ইনফ্লামেশনজনিত রোগ। এছাড়া ব্রাকিয়াল প্লেক্সাস [brachial plexus( এক গুচ্ছ স্নায়ু, যা মেরুদণ্ড থেকে কাঁধ, বাহু এবং হাতে সংকেত প্রেরণ করে।)] কাঁধ বা কাঁধের আশেপাশের অংশের আঘাত বা  অন্য সমস্যার কারণেও বাহুর সমস্যার সূত্রপাত ঘটতে পারে। মেরুদণ্ডের  ইনফেকশন, ফাটল, টিউমার  অথবা ডিস্ক ডিজিজের (disc disease) কারণেও বাহুর সমস্যা হয়ে থাকে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: বাহুতে রক্ত জমাট বেধেছে কিনা, তা ঠিকভাবে বোঝার জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিৎ। আপনার বাহু পরীক্ষা করার পর চিকিৎসক তার ভিত্তিতে আপনাকে পরামর্শ দেবেন।

উত্তর: ব্যথা হওয়া, ফুলে ওঠা এবং কালো দাগ পড়া।

উত্তর: বাহুর অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ হওয়ার ফলে বাহুতে কালো দাগ, ব্যথা, পিণ্ড ও শক্তভাব দেখা দিতে পারে। লক্ষণগুলি মূলত রক্তক্ষরণের গতি, গভীরতা এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে।

হেলথ টিপস্‌

বাহুর সমস্যা তীব্র রূপ ধারণ করলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। তবে বাহুর সাধারণ ব্যথা, ফোলা, শক্তভাব এবং ক্র্যাম্প নিম্নোক্ত বিষয়গুলি অনুসরণ করে কমানো সম্ভব-

  • আক্রান্ত স্থান সুরক্ষিত রাখা: বাহুতে ব্যথা হলে এমন কোনো কিছু করা উচিৎ নয় যার ফলে ব্যথা বৃদ্ধি পায়।
  • বরফ প্রয়োগ: বাহু ফুলে গেলে তা কমানোর জন্য ফোলা অংশে বরফ প্রয়োগ করুন। দিনে ২০-৩০ মিনিট করে কমপক্ষে ৩ বার বাহুতে বরফ দিতে হবে।
  • ব্যথাযুক্ত স্থান উঁচুতে রাখা: বাহুর ফোলা কমানোর জন্য  বাহু উঁচু (হৃৎপিণ্ডের  অনুভূমিক তলের  উপরে ) করে রাখার  চেষ্টা করুন।  
  • রিং, ব্রেসলেট, ঘড়ি বা গহনা হাতে না পরা: হাত ফুলতে থাকলে হাত থেকে গহনা খুলতে অসুবিধা হতে পারে। এছাড়া গহনা থাকা অবস্থায় হাত ফুলে গেলে স্নায়ুর সংকোচন এবং রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
  • হাত ঝুলিয়ে রাখা: প্রয়োজনে হাত ব্যান্ডেজ দিয়ে ঝুলিয়ে রাখুন। তবে ৪৮ ঘন্টার বেশি ঝুলিয়ে রাখা প্রয়োজন হলে এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • মাসাজ করা: ব্যথা কমানো এবং রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য হাতে মাসাজ করা যেতে পারে। তবে মাসাজের কারণে হাতে ব্যথা হলে মাসাজ করা উচিৎ নয়।
  • ধূমপান ও অন্যান্য তামাক জাতীয় দ্রব্য পরিহার: ধূমপান ও অন্যান্য তামাক জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে । এ জাতীয় দ্রব্য গ্রহণের ফলে  রক্ত সরবরাহ কমে যায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষ স্বাভাবিক হতে সময় বেশি লাগে।