আচরণগত সমস্যা (Behavioral disturbances)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

আচরণগত সমস্যা ডিমেনশিয়ার [ dementia(স্মৃতিভ্রংশ)] একটি লক্ষণ।  ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত অধিকাংশ ব্যক্তির মধ্যে কোনো না কোনো পর্যায়ে এই সমস্যা দেখা যায়।

আচরণগত সমস্যার কারণে একজন ব্যক্তি অত্যন্ত অস্বস্তি বোধ করেন, এবং অনেক ক্ষেত্রে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এই সমস্যা দূর করার জন্য সুচিন্তিত ও বিশদ পরিকল্পনার প্রয়োজন। আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার আশেপাশের সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কার্যকরভাবে আচরণগত সমস্যার চিকিৎসা করার জন্য এর কারণগুলিকে সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে।  সমস্যাটির কিছু কারণ হলো কোমরবিড মেডিকেল ইলনেস (comorbid medical illnesses), পলিফারম্যাসি (polypharmacy). ব্যথা ও ব্যক্তিগত আকাঙ্খা ইত্যাদি। উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানোর মতো আচরণগত সমস্যাগুলির চিকিৎসা ঔষধের মাধ্যমে করা যায় না। সাধারণত ঔষধ প্রদান ব্যতীত অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি এই সমস্যার জন্য বেশি কার্যকর। তবে ঔষধ প্রয়োগ করা হলে তার কার্যকারিতা কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ (যেমন- বিষণ্নতা, উদ্বিগ্নতা এবং সাইকোসিস) এবং সেগুলির তীব্রতা নির্ণয়ের উপর নির্ভর করে। ঔষধ প্রয়োগ করলে আচরণগত সমস্যা থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে সাধারণত মাঝারি/মধ্যম মাত্রার প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তবে সমস্যাগুলি সম্পর্কে রোগী, রোগীর পরিবার এবং রোগীর পরিচর্যাকারীদের ধারণা প্রদান করে এ জাতীয় কিছু সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রাথমিক পর্যায়ে সমস্যাগুলি চিহ্নিত করা এবং সেগুলির চিকিৎসা করা হলে  আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়া প্রয়োজন নাও হতে পারে। তবে এই সমস্যা দূর করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিৎ।  আচরণগত সমস্যার শারীরিক কারণ নির্ণয়ও এর চিকিৎসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যেমন:

  • শারীরিক অসুস্থতা বা অক্ষমতা।
  • অপুষ্টি।
  • মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া।
  • বংশগত সমস্যার কারণে খুব সহজেই রাগ করা বা উদ্বিগ্ন হওয়া।
  • সহজেই রাগ করা।
  • নিজের দোষ অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়া।
  • কতৃপক্ষের আদেশ না মানা।
  • ঝগড়া করা এবং রাগ করে কোনো কিছু ছুড়ে মারা।
  • হতাশা সামলাতে  না পারা।

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি আচরণগত সমস্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। তবে সব ক্ষেত্রেই যে বিষয়গুলির জন্য আচরণগত সমস্যার সৃষ্টি হবে, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই।

  • শৈশবে নিগৃহীত হওয়া।
  • অন্যের আচরণ বুঝতে না পারা।
  • পরিবারে/বংশে মানসিক রোগে আক্রান্ত বা মাদকাসক্ত ব্যক্তি থাকা।
  • অসঙ্গত এবং অতিরিক্ত নিয়মের মধ্যে থাকা।
  • তত্ত্বাবধানের অভাব।
  • মাদকাসক্ত পিতামাতা।
  • সামাজিকতার অভাব।
  • বাড়িতে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাপে থাকে।
  • বসবাসের স্থানে সমস্যা (অস্থায়ী বাসস্থান ব গৃহহীন হওয়া)।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ  আপনার শিশু প্রকৃতপক্ষে  অলস নাও হতে পারে।  তার দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ব্যস্ততা এবং আপনার প্রত্যাশার কারণে সৃষ্ট মানসিক চাপের কারণে তাকে অলস মনে হতে পারে। কিছু শিশু এতো বেশি পরিমাণ কাজের সাথে জড়িত যে বাড়তি কোনো কিছু করার সময় তাদের থাকে না।  এছাড়া ইদানিং শিশুরা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র ব্যবহার করে বলে তাদের অনেক সময় ব্যয় হয়।  তাই আপনার শিশুর সাথে কথা বলুন, এবং তাকে জানান আপনি তার কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করেন।  প্রয়োজনে শিশুর টিভি দেখা ও কমপিউটার/ভিডিও গেমস খেলার সময় কমিয়ে দিন।

 

হেলথ টিপস্‌

শিশুদের পরিবারের সদস্যরা তাদের আচরণগত সমস্যার ঝুঁকি হ্রাস করতে সাহায্য করতে পারে। নিম্নোক্ত বিষয়গুলি অনুসরণ করে এই ঝুঁকি হ্রাস করা যায়:

  • শিশুকে প্রশংসা ও দণ্ড দেওয়ার সুনির্দিষ্ট বিধান রাখা।
  • শিশুদের কার্যকলাপের সাথে জড়িত থাকা।
  • শিশুদের কার্যকলাপের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা।
  • বাড়িতে শিশুদের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি না করা।
  • শিশুর কাছ থেকে আপনি কোন কোন বিষয়গুলি প্রত্যাশা করছেন, সেগুলি সুনির্দিষ্ট করা।