কান দিয়ে পুজঁ বের হওয়া (Pus draining from ear)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

এ অবস্থায় কানের ভেতরের বা বাইরের অংশ থেকে ঘন, সাদা বা হলদেটে এবং কখনো কখনো দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ বের হয়। ঠাণ্ডা লাগার কারণে শ্বাসনতন্ত্রের উপরের অংশে ইনফেকশন দেখা দিলে মধ্যকর্ণেও ইনফেকশন হতে পারে। মধ্যকর্ণে তরল জমার ফলে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ইনফেকশনের সৃষ্টি হয়। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এই ইনফেকশনের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে উঠলে কানে পুঁজ জমতে শুরু করে। পুঁজ ও তরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে তা কানের পর্দার উপর চাপ সৃষ্টি করে। ফলে শ্রবণশক্তি ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।

শিশুদের ক্ষেত্রে কিছুদিনের জন্য জ্বর হতে পারে এবং কয়েক ঘন্টার জন্য এই ব্যথা খুব তীব্র হতে পারে। এ্ই সমস্যা নিরাময়ের জন্য চিকিৎসকেরা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কানের ইনফেকশন কোনো ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই শরীরের নিজ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার মাধ্যমেই ভালো হয়ে যায়। তবে এই ইনফেকশন গুরুতর আকার ধারণ করলে কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে এবং জমে থাকা তরল ও পুঁজ বের হয়ে আসতে পারে। এ অবস্থায় ইনফেকশন, জ্বর এবং ব্যথা থাকে। কানের পর্দায় যে ক্ষতি হয় তা স্বাভাবিকভাবে (দুই সপ্তাহের মধ্যে) ভালো হয়ে যায়।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যেমন:

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলো:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ক্ষেত্রে যেসকল ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় রয়েছে সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো:

  • যেসকল শিশু ডে-কেয়ার বা চাইল্ড কেয়ারে থাকে তাদের ঠান্ডা-সর্দি বেশি হয়ে থাকে। সুতরাং এ ধরনের শিশুদের ক্ষেত্রে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
  • যেসব শিশু বুকের দুধের পরিবর্তে ফিডারে খাবার খেয়ে অভ্যস্ত, তাদের ক্ষেত্রে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। বিশেষত শোয়া অবস্থায় ফিডার খাওয়ার কারণে কানে ইনফেকশন ও পুঁজ বেশি হয়।
  • শরৎ ও শীতকালে ঠান্ডা-সর্দি বেশি হয় বলে বছরের এ সময়ে কানের এ সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
  • সিগারেটের ধোঁয়া ও বায়ু দূষণের কারণে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতি: হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। কৃষ্ণাঙ্গ, শ্বেতাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। 

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ কান থেকে নির্গত তরল বা পুঁজের রঙ সাদা, হলদেটে বা স্বচ্ছ ও রক্তমিশ্রিত হলে কিংবা কোনো আঘাতের কারণে কান থেকে তরল বা পুঁজ বের হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এছাড়াও এই লক্ষণ পাঁচ দিনের বেশি স্থায়ী হলে, তীব্র ব্যথা হলে এবং একই সাথে জ্বর বা মাথাব্যথা থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।  

হেলথ টিপস্‌

যেসব শিশু বুকের দুধ খেয়ে থাকে তারা মায়ের শরীর থেকে অ্যান্টিবডি পেয়ে থাকে। ফলে মাতৃদুগ্ধ কানের ইনফেকশনের প্রতিরোধে সাহায্য করে।  ফিডারে খাবার খেয়ে অভ্যস্থ যেসব শিশু, তাদের  কানের ইনফেকশন প্রতিরোধের জন্য কাৎ করে বা শায়িত অবস্থায় ফিডার খাওয়ানো যাবে না।

বাইরের কোনো জিনিস দিয়ে কান খোঁচালে কানের পর্দায় আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ ধরনের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে কানে ইয়ার প্লাগ ব্যবহার করতে হবে।

এছাড়াও গোসল বা সাঁতারের পর কানে যাতে পানি না থাকে সেজন্য ভালোভাবে কান পরিষ্কার করতে হবে, এবং কানের ভেতরের অংশ শুষ্ক রাখতে হবে। কানে পানি ঢুকলে মাথা কাৎ করে পানি বের করার চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া বেশ কিছু কানের ড্রপ রয়েছে যা ব্যবহারের মাধ্যমে কানের ইনফেকশন প্রতিরোধ করা যায়।