কনজাঙ্কটিভাইটিস (Conjunctivitis)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

চোখের কনজাঙ্কটিভার (চোখের সর্বাপেক্ষা বাইরের ও চোখের পাতার ভিতরের অংশ) প্রদাহ বা জ্বালাপোড়াকে কনজাঙ্কটিভাইটিস বলে। এটি পিঙ্ক আই বা মাদ্রাজ আই নামেও পরিচিত। সাধারণত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট ইনফেকশনের কারণে কনজাঙ্কটিভাইটিস হয়ে থাকে। তবে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ার কারণেও এই রোগ দেখা দিতে পারে। কনজাঙ্কটিভাইটিসের কারণে চোখে জ্বালাপোড়া হলেও এটি সাধারণত দৃষ্টির উপর কোনো প্রভাব ফেলে না। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তি চোখের অস্বাভাবিক অবস্থা দূর করতে পারেন। যেহেতু কনজাঙ্কটিভাইটিস একটি সংক্রামক রোগ, তাই দ্রুত নির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে এর বিস্তার রোধ করা উচিৎ।

কারণ

নিম্নে কনজাঙ্কটিভাইটিসের বিভিন্ন কারণের বর্ণনা দেওয়া হল-

ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত কনজাঙ্কটিভাইটিস: ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট কনজাঙ্কটিভাইটিস এক চোখ বা দুই চোখকেই আক্রান্ত করতে পারে। ভাইরাসজনিত কনজাঙ্কটিভাইটিসের কারণে চোখ থেকে পানি আর ব্যাকটেরিয়াজনিত কনজাঙ্কটিভাইটিসের কারণে চোখ থেকে হলুদ-সবুজ রংয়ের ঘন পদার্থ নির্গত হয়। ঠান্ডা লাগা ও গলায় ঘায়ের মতো, শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশনের সাথে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত কনজাঙ্কটিভাইটিস সম্পর্কযুক্ত।

অ্যালার্জিজনিত কনজাঙ্কটিভাইটিস: অ্যালার্জিজনিত কনজাঙ্কটিভাইটিস দুই চোখকেই আক্রান্ত করে। অ্যালার্জি সৃষ্টিকর বস্তুর (যেমন রেণু) সংস্পর্শের কারণে এ্ই সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। এই ধরনের বস্তুর সংস্পর্শে এলে শরীরে ইমিউনোগ্লোবুলিন ই (আ-জি-ই) নামে এক ধরনের অ্যান্টিবডি সৃষ্টি হয়। এই অ্যান্টিবডি চোখের মিউকাসের স্তরে মাস্ট সেল নামক এক ধরনের বিশেষ কোষকে প্রভাবিত/সক্রিয় করে এবং এই কারণে হিস্টামিন সহ কিছু প্রদাহ সৃষ্টিকারী পদার্থ নির্গত হয়। এই হিস্টামিনের নির্গমনের কারণে চোখ লাল হওয়া সহ আরও কিছু অ্যালার্জিক লক্ষণ দেখা দেয়।

প্রদাহজনিত কনজাঙ্কটিভাইটিস: চোখে তরল রাসায়নিক পদার্থের ছিটা বা বাইরের অন্য কোনো বস্তু প্রবেশ করার সাথে কনজাঙ্কটিভাইটিসের সম্পর্ক রয়েছে। এই বস্তুগুলি বের করার জন্য পানির ঝাপটা দিলেও চোখে প্রদাহ হতে পারে বা চোখ লাল হয়ে যেতে পারে। প্রদাহজনিত কনজাঙ্কটিভাইটিস হলে চোখ থেকে পানি ও মিউকাস (শ্লেষ্মা) নির্গমনের মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে এই সমস্যাগুলি সাধারণত স্বাভাবিকভাবেই এক দিনের মধ্যে কমে যায়।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:

চিকিৎসা

 চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত ঔষধগুলি গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন: 

ciprofloxacin, opthalmic dexamethasone sodium phosphate, ophthalmic
erythromycin gentamicin, opthalmic
tobramycin, opthalmic desloratadine
fexofenadine hydrochloride

চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত টেস্টগুলি করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন: 

আই এক্সাম (Eye exam)

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নে লিখিত বিষয়গুলি কনজাঙ্কটিভাইটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে-
  • অ্যালার্জি সৃষ্টি করে এমন কোনো বস্তুর সংস্পের্শে যাওয়া।
  • ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত কনজাঙ্কটিভাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া।
  • কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করা।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। নারীদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাত: শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। হিস্প্যানিক, কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির  মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পরতা সম্ভাবনা থাকে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উ: ভাইরাল কনজাঙ্কটিভাইটিসের চিকিৎসা করা না হলে চোখের শুষ্কতা তীব্র আকার ধারণ করে এবং কর্নিয়ায় ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে।

উ: কনজাঙ্কটিভাইটিসের কারণে চোখ হালকা গোলাপী থেকে শুরু করে গাঢ় লালের মাঝে বিভিন্ন বর্ণ ধারণ করতে পারে। তবে বেশিরভাগ কনজাঙ্কটিভাইটিসের ক্ষেত্রে চোখ মাঝারী লাল হয়ে যায়।

উ: সাধারণত কনজাঙ্কটিভাইটিস ১-৩ দিন স্থায়ী হয়। তবে নিরাময়ের বিষয়টি এর তীব্রতার উপর নির্ভর করে। তাই কনজাঙ্কটিভাইটিসে আক্রান্ত হলে আপনাকে ধৈর্যধারণ করে আইড্রপ ব্যবহার করে যেতে হবে।

হেলথ টিপস্‌

কনজাঙ্কটিভাইটিস হলে নিম্নে লিখিত বিষয়গুলি  অনুসরণ করুন-
  • ভেজা কাপড় দিয়ে চোখ মোছা: একটি কাপড় পানিতে ভিজিয়ে নিংড়িয়ে নিন। এবার আপনার চোখ বন্ধ করে চোখের পাতা কাপড়টি দিয়ে মুছুন। স্বাভাবিকভাবে ঠাণ্ডা পানিতে ভেজানো কাপড় দিয়ে চোখ মুছলে আপনি স্বস্তিবোধ করবেন। তবে ভালো লাগলে আপনি গরম পানিতেও কাপড়টি ভিজিয়ে নিতে পারেন। যদি শুধু এক চোখ কনজাঙ্কটিভাইটিসে আক্রান্ত হয় তবে একই কাপড় দিয়ে দুই চোখ স্পর্শ করবেন না। এর ফলে এক চোখ থেকে আরেক চোখে কনজাঙ্কটিভাইটিস বিস্তারের সম্ভাবনা কমে যায়।
  • আই ড্রপের ব্যবহার করা: চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই যে আই ড্রপগুলি ঔষধের দোকানে পাওয়া যায় সেগুলি ব্যবহার করতে পারেন।  কিছু আই ড্রপে অ্যান্টিহিস্টামিন ও অন্যান্য কিছু উপাদান রয়েছে, যেগুলি অ্যালার্জিজনিত কনজাঙ্কটিভাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে।
  • কনট্যাক্ট লেন্সের ব্যবহার বন্ধ করা: আপনি কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহারকারী হলে আপনাকে প্রয়োজনে এর ব্যবহার বন্ধ করতে হতে পারে। যতোক্ষণ পর্যন্ত আপনি চোখে স্বস্তিবোধ না করছেন ততোক্ষণ পর্যন্ত কনট্যাক্ট লেন্সের ব্যবহার বন্ধ রাখুন। কতোক্ষণ আপনি কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করা বন্ধ রাখবেন, তা আপনার কনজাঙ্কটিভাইটিসের কারণের উপর নির্ভর করছে। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

ডাঃ শহিদুল্লাহ সবুজ

মেডিসিন ( Medicine), নিউরোলজি ( স্নায়ুতন্ত্র) ( Neurology)

এমবিবিএস,, এফসিপিএস(মেডিসিন),, এমডি(নিউরোমেডিসিন)

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হায়দার রশীদ (অবঃ)

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), এফআরসিপি(গ্লাসগো-ইউ-কে), ফেলো-কার্ডিওলজী(সৌদি আরব), এফ এ সিসি(আমেরিকা)

ডাঃ মোঃ আবু শোয়েব তালুকদার

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস,, এমআরসিপি(ইউকে)

ডাঃ সেলিম মিয়া

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস(সিএমসি), সিসি(এম আর মেমো হাসপাতাল, ভারত), এসডিএম(মেডিসিন)

ডাঃ মোঃ কাজিম উদ্দিন

মেডিসিন ( Medicine), হেমাটোলজি ( ব্লাড) ( Hematology)

এমবিবিএস, ডিসিপি, এমসিপিএস, এফসিপিএস

ডাঃ আফরিনা শামস চৌধুরী

অফথ্যালমোলজি ( চক্ষু) ( Ophthalmology)

এমবিবিএস(ডিইউ),, সিসিডি,, এফসিপিএস(পার্ট-১), পিজিটি(বারডেম)

ডাঃ মোঃ আবুল খায়ের

মেডিসিন ( Medicine), কার্ডিওলজি ( হার্ট) ( Cardiology)

এমবিবিএস(ডিএমসি), ডি-কার্ড(এনআইসিভিডি), এফসিপিএস(কার্ডিওলজি)

ডাঃ শেখ মোঃ ইউনুস আলী

মেডিসিন ( Medicine), কার্ডিওলজি ( হার্ট) ( Cardiology)

এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস(স্বাস্থ্য), ডি-কার্ড(কার্ডিওলজী), এফসিপিএস(মেডিসিন)