কাশি (Cough)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

গলা বা শ্বাসনালীতে ক্ষতিকর/উত্তেজক কোনো পদার্থের (Irritant) উপস্থিতির কারণে কাশি হয়ে থাকে। এই ক্ষতিকর/উত্তেজক পদার্থের (Irritant) উপস্থিতির কারণে মস্তিষ্ক থেকে তলপেট ও বুকের পেশীতে সংকেত পৌঁছায় যাতে ফুসফুস থেকে প্রবল বাতাস বা নিঃশ্বাসের সাহায্যে উত্তেজক পদার্থটি বের হয়ে আসে।

কাশি হলো এমন একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা আকস্মিকভাবে হয়ে থাকে ও যে প্রক্রিয়ার সাহায্যে শ্বাসনালী থেকে যেকোনো দূষিত পদার্থ ও জীবাণু বাইরে বেরিয়ে আসে। কাশির এই প্রক্রিয়াটি সাধারণত তিনটি পর্যায়ে হয়ে থাকে। প্রথম পর্যায়ে আমরা শ্বাস গ্রহণ করি, দ্বিতীয় পর্যায়ে বাতাস আবদ্ধ শ্বাসরন্ধ্রে চাপ সৃষ্টি করে এবং তৃতীয় ও শেষ পর্যায়ে ফুসফুস থেকে আবদ্ধ শ্বাসরন্ধ্রের ভেতর দিয়ে জোরপূর্বক সশব্দে বাতাস বেরিয়ে আসে, যাকে আমরা কাশি বলে থাকি। কাশি ইচ্ছাকৃত বা স্বতঃস্ফূর্ত হতে পারে। কাশি বা কফ স্বল্পদিনের জন্য হলে তা দেহের তেমন কোনো ক্ষতি করে না। তবে এটি কয়েক সপ্তাহ বা এর বেশিদিন স্থায়ী হলে ও কফের সাথে রক্ত গেলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কাশি দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে তা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে, যেমন- নিদ্রাহীনতা, মাথাব্যথা, মূত্র নিয়ন্ত্রণে রাখতে অসামর্থ্য হওয়া ও পাঁজরের ক্ষতি।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যেমন:

অ্যাকিউট সাইনোসাইটিস (Acute sinusitis) শ্বেতরক্ত কণিকা সম্পর্কিত রোগ (White blood cell disease)
অ্যালার্জি জনিত কনজাঙ্কটিভাইটিস (Allergic Conjunctivitis) অ্যালার্জি (Allergy)
ভিটামিন ‘বি’ এর অভাব জনিত রোগ (Vitamin B deficiency) অ্যাজমা (Asthma)
উকুন সমস্যা (Lice) সাধারণ সর্দি-কাশি (Common cold)
চিকেনপক্স (Chickenpox) কনজাঙ্কটিভাইটিস (Conjunctivitis)
ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (Chronic obstructive pulmonary disease, COPD) ফুসফুসের ক্যান্সার (Lung cancer)
মেনিনজাইটিস (Meningitis) যক্ষা (Tuberculosis)
ডায়াবেটিক ইনসিপিডাস (Diabetes insipidus) হার্ট ফেইলিয়র (Heart failure)
হিমোফিলিয়া (Hemophilia) নাকের পলিপ (Nasal polyp)
ডায়পার র‍্যাশ/ফুসকুড়ি (Diaper rash) গলার ইনফেকশন (Strep throat)
এ্যাকজিমা (Eczema) কান পাকা/কানের প্রদাহ (Otitis media)
ফ্লু (Flu) আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত এ্যালার্জি (Seasonal allergies)
খাবারে অ্যালার্জি (Food allergy) ল্যারিঞ্জাইটিস/বাকযন্ত্রের প্রদাহ (Laryngitis)
গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ/ বুকজ্বালা (Gastroesophageal reflux disease) ফ্যারিঞ্জাইটিস (Pharyngitis)
ফুসফুসের অ্যাবসেস/পূঁজ (Abscess of the lung) অ্যাকিউট অটাইটিস মিডিয়া (Acute otitis media)
অটাইটিস এক্সটারনা (Otitis externa (swimmer's ear)) ব্রঙ্কিয়েক্টেসিস (Bronchiectasis)
পালমোনারী হাইপারটেনশন (Pulmonary hypertension) পাইলোরিক স্টেনোসিস (Pyloric stenosis)
সিস্টিক ফাইব্রোসিস (Cystic fibrosis) পা্লমোনারী কঞ্জেশন (Pulmonary congestion)
পালমোনারী ইওসিনোফিলিয়া (Pulmonary eosinophilia) পালমোনারী ফাইব্রোসিস (Pulmonary fibrosis)
ফরেন বডি ইন দি থ্রোট (Foreign body in the throat) ফ্রেডরিক অ্যাটাক্সিয়া (Friedreich's ataxia)
ক্রনিক সাইনোসাইটিস (Chronic sinusitis) ইনটেস্টাইনাল ম্যালঅ্যাবজর্পশন (Intestinal malabsorption)
জি-৬-পি-ডি এনজাইম ডেফিসিয়েন্সি (G6PD enzyme deficiency) ব্যাকটেরিয়া জনিত কনঞ্জাংটিভাইটিস (Conjunctivitis due to bacteria)
হারপেনজিনা (Herpangina) ভাইরাসজনিত কনজাঙ্কটিভাইটিস (Conjunctivitis due to virus)
কনভারশন ডিজঅর্ডার (Conversion disorder) হাইপারওসমোটিক হাইপারকিটোটিক স্টেট (এইচ-এইচ-এস) (Hyperosmotic hyperketotic state (HHS))
প্লুরাল ইফিউশন (Pleural effusion) এমফাইসিমা (Emphysema)
নিউমোথোরাক্স (Pneumothorax) ক্রুপ (Croup)
এমপায়েমা (Empyema) পয়জনিং ডিউ টু গ্যাস (Poisoning due to gas)
ইয়ার ড্রাম ড্যামেজ (Ear drum damage) ইন্টারস্টিশিয়াল লাং ডিজিজ (Interstitial lung disease)
প্রাইমারী ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি (Primary immunodeficiency) ফ্লুইড ওভারলোড (Fluid overload)
পালমোনারী এমবলিজম (Pulmonary embolism) কাপোসি সারকোমা (Kaposi sarcoma)
অ্যাবসেস অফ নোজ / নাকের ফোঁড়া (Abscess of nose) অ্যাবসেস অফ দি ফ্যারিংস / গলবিলের ফোঁড়া (Abscess of the pharynx)
হিমোলাইটিক অ্যানিমিয়া (Hemolytic anemia) অ্যাকালাসিয়া (Achalasia)
অ্যাকিউট ব্রঙ্কাইটিস (Acute bronchitis) সারকোয়ডোসিস (Sarcoidosis)
মোনোনিউরাইটিস (Mononeuritis) হিস্টোপ্লাসমোসিস (Histoplasmosis)
অ্যাড্রেনাল ক্যান্সার (Adrenal cancer) ম্যাস্টোয়ডাইটিস (Mastoiditis)
মাস্কুলার ডিসট্রফি (Muscular dystrophy) মায়োকার্ডাইটিস (Myocarditis)
ওরাল মিউকোসাল লেশন (Oral mucosal lesion) স্পাইনোসেরিবেলার অ্যাটাক্সিয়া (Spinocerebellar ataxia)
টনসিলার হাইপারট্রফি (Tonsillar hypertrophy) অ্যাটেলেকটেসিস (Atelectasis)
নিউমোকোনিওসিস (Pneumoconiosis) উইলসন ডিজিজ (Wilson disease)
ব্যালানাইটিস (Balanitis) ব্যাসেট ডিজিজ (Behcet disease)
অ্যালার্জি টু অ্যানিমেলস (Allergy to animals) হাইপারট্রোফিক অবস্ট্রাক্টিভ কার্ডিওমায়োপ্যাথি (এইচ-ও-সি-এম) (Hypertrophic obstructive cardiomyopathy (HOCM))
নিউমোনিয়া (Pneumonia)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলো:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

ধূমপায়ীদের কাশি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। এমনকি সিগারেটের ধোঁয়ার কারণেও কাশি ও ফুসফুসের ক্ষতি হতে পারে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা  ১ গুণ কম।

জাতি: শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

হেলথ টিপস্‌

নিম্নলিখিত উপায়ে কাশি/কফ প্রতিরোধ করা সম্ভব:

  • অ্যালার্জেন বা যেসকল পদার্থের সংস্পর্শে অ্যালার্জি হতে পারে সেগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • ধূমপান পরিহার করতে হবে। কেননা ধূমপানের কারণে ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস হতে পারে ও কাশি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
  • এসিড রিফ্লাক্সের কারণেও কাশি হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে খাদ্যাভাসে বিভিন্ন পরিবর্তন আনতে হবে। যেমন- একেবারে অনেক বেশি খাওয়া যাবে না। স্বল্প পরিমাণে কিছুক্ষণ পর পর খেতে হবে। ঘুমানোর কমপক্ষে তিন থেকে চার ঘন্টা আগে খেতে হবে এবং ঘুমানোর সময় মাথা শরীর থেকে উপরে রাখতে হবে।