এ্যাকজিমা (Eczema)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

এ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস (Atopic Dermatitis) বা এ্যাকজিমা (Eczema) এক ধরনের চর্মরোগ। এ অবস্থায় ত্বক লাল বর্ণ ধারণ করে এবং চুলকায়। এ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস যেকোনো বয়সেই হতে পারে, তবে এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিশুদের হয়ে থাকে। এটি একটি Chronic বা দীর্ঘস্থায়ী জটিল অবস্থা, যা সময়ের সাথে সাথে পর্যায়ক্রমে আরও ছড়াতে থাকে এবং এরপর প্রশমিত হয়। এ্যাকজিমার সাথে এ্যাজমা এবং হে ফিভার/জ্বর (Hay fever) দেখা দিতে পারে। এ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিসের এখনও পর্যন্ত কোনো প্রতিকার আবিষ্কৃত হয় নি। তবে চিকিৎসা এবং নিজের যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে চুলকানি ও এর বিস্তার থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। যেমন- খারযুক্ত সাবান ও অন্যান্য যন্ত্রনা সৃষ্টিকারী পদার্থ এড়িয়ে চলতে হবে, প্রয়োজনীয় ক্রিম ও মলম ব্যাবহার করতে হবে, এবং ত্বক শুষ্ক রাখা যাবে না। যদি এ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজ ও ঘুমের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

কারণ

এ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস বা এ্যাকজিমার আসল কারণ এখনও অজানা। সুস্থ ত্বকে সবসময় আর্দ্রতা (moisture) বজায় থাকে যা ব্যাকটেরিয়া এবং যে সকল পদার্থ এ্যালার্জির সৃষ্টি করে সেগুলি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। যেসব কারণে এ্যাকজিমার সৃষ্টি হয় তা হল-

  • শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বক ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারে না। তাই এই ধরণের ত্বক এ্যাকজিমার জন্য দায়ী।
  • জিনের পরিবর্তনের ফলে ত্বকের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ও এ্যাকজিমার সৃষ্টি হয়।
  • দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পেলে এ্যাকজিমা দেখা দেয়।
  • বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া যেমন Staphylococcus Aureus এর কারণে ঘর্মগ্রন্থি বন্ধ হয়ে গেলে এ্যাকজিমার সৃষ্টি হয়।
  • পরিবেশগত কারণেও এ্যাকজিমা দেখা দিতে পারে।

লক্ষণ

চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তিদের মধ্যে সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখতে পানঃ

চিকিৎসা

চিকিৎসকেরা এই রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নের ঔষধগুলো দিয়ে থাকেনঃ

betamethasone dipropionate, topical clindamycin phosphate, topical
cloxacillin fluticasone propionate, topical
hydrocortisone acetate, topical hydroxyzine hydrochloride
ketoconazole, topical diphenhydramine

চিকিৎসকেরা এই রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নের টেস্টগুলো দিয়ে থাকেনঃ

বায়োপসি (Biopsy)
উন্ড ম্যানেজমেন্ট (Wound care management)
স্কিন স্ক্র্যপিং এম/ই ফর ফাঙ্গাস (skin scrapings M/E for fungus)

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

বিভিন্ন কারণে এ্যাকজিমার ঝুঁকি বাড়তে পারে। এ্যাকজিমার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো হল-

  • পরিবারের কোনো সদস্য এ্যাকজিমাতে আক্রান্ত হলে অন্যান্য সদস্যদের এ রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
  • চর্মরোগে আক্রান্ত রোগীর সেবার কাজে নিযুক্ত ব্যক্তির এ্যাকজিমার ঝুঁকি বেশি থাকে।

শিশুদের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো হলঃ

  • শহরাঞ্চালে বসবাসকারী শিশুদের এ রোগের ঝুঁকি বেশি।
  • আফ্রিকান-আমেরিকান শিশুদের এ রোগের ঝুঁকি বেশি।
  • ডে-কেয়ার বা চাইল্ড কেয়ারে থাকা শিশুদের এ রোগের ঝুঁকি বেশি।
  • ADHD (attention-deficit/hyperactivity disorder) তে আক্রান্ত শিশুদের এ রোগের ঝুঁকি বেশি।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে মহিলাদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতিঃ শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম। অপরদিকে কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় নির্দিষ্ট কিছু চর্মরোগ দেখা দেয়। তবে এটি এ্যাকজিমার প্রধান কারণ নয়।

উত্তরঃ এ্যাকজিমা এ্যালার্জি ও এ্যাজমার সমগোত্রীয় রোগ, যা এই দুটি রোগের মতই বংশগত কারণে হতে পারে। তবে শুধুমাত্র বংশগত কারণেই এটি হয় না। যদি কোনো বস্তু বা পদার্থের প্রতি এ্যালার্জি থাকে তবে এগুলোর সংস্পর্শে আসলেই এ্যালার্জি ও এ্যাজমার মতই এ্যাকজিমার ক্ষেত্রেও একই ধরণের র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে ভাল ত্বক পরিষ্কারক দ্রব্য (Sensitive skin clesnser) ব্যবহার করতে হবে। অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল করা যাবে না এবং প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ বার ভাল স্কিন লোশন (sensitive skin lotion) ব্যবহার করতে হবে।

উত্তরঃ হ্যাঁ, ত্বকের যেকোনো অংশেই এ্যাকজিমা হতে পারে।

হেলথ টিপস্‌

এ্যাকজিমা ও ত্বকের চুলকানি প্রতিরোধের জন্য নিচের টিপস্‌গুলো কাজে লাগতে পারেঃ

  • সবসময় নরম ও আরামদায়ক পোশাক পরা উচিৎ। সিন্থেটিক বা উলের পোশাকে যদি এ্যালার্জির সমস্যা থাকে তবে এ ধরনের পোশাক এড়িয়ে চলতে হবে।
  • কাপড় ধোয়ার জন্য কৃত্রিম রঙ ও সুগন্ধিবিহীন ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে।
  • ধুলাবালি, ফুলের রেণু ও সিগারেটের ধোঁয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • আক্রান্ত স্থান চুলকানো থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে।
  • দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে হবে।
  • ত্বক কখনই শুষ্ক রাখা যাবে না। সবসময় লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে লোশন বা ক্রিমটি যেন কৃত্রিম রঙ ও সুগন্ধিবিহীন হয়।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

ডাঃ মোঃ নাজমুল হক সরকার

ডার্মাটোলজি এন্ড ভেনেরিওলজি ( চর্ম ও যৌন) ( Dermatology & Venereology)

এমবিবিএস, ডিডিভি, এমসিপিএস

অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আহসান উল্লাহ্‌

ডার্মাটোলজি এন্ড ভেনেরিওলজি ( চর্ম ও যৌন) ( Dermatology & Venereology)

এম বি বি এস, ভি ডি ভি (ডি ইউ)

ডাঃ শফিকুল ইসলাম

ডার্মাটোলজি এন্ড ভেনেরিওলজি ( চর্ম ও যৌন) ( Dermatology & Venereology)

এমবিবিএস (ঢাকা) , এমডি (ডার্মাটোলজি)

ডাঃ মোঃ আব্দুল মান্নান

ডার্মাটোলজি এন্ড ভেনেরিওলজি ( চর্ম ও যৌন) ( Dermatology & Venereology)

এমবিবিএস, এমডি(চর্ম ও যৌন)

অধ্যাপক মোঃ কামরুল হাসান জায়গীরদার

ডার্মাটোলজি এন্ড ভেনেরিওলজি ( চর্ম ও যৌন) ( Dermatology & Venereology)

এম বি বি এস, এম ডি (ডার্মাটোলজি)

ডাঃ শেখ কাওছার উদ্দিন

ডার্মাটোলজি এন্ড ভেনেরিওলজি ( চর্ম ও যৌন) ( Dermatology & Venereology)

এমবিবিএস(রাশিয়া), ডিএমইউ

ডাঃ আনজিরুন নাহার আসমা

ডার্মাটোলজি এন্ড ভেনেরিওলজি ( চর্ম ও যৌন) ( Dermatology & Venereology)

এমবিবিএস, ডিডিভি, এফসিপিএস(চর্ম ও যৌন রোগ)

ডাঃ সিলভিয়া চৌধুরী

ডার্মাটোলজি এন্ড ভেনেরিওলজি ( চর্ম ও যৌন) ( Dermatology & Venereology)

এমবিবিএস(ঢাকা), ডিডিভি(বিএসএমএমইউ)