স্থূলতা (Obesity)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

স্থূলতা একটি জটিল ব্যাধি। এর কারণে শরীরে চর্বির পরিমাণ অত্যাধিক পরিমাণে বেড়ে যায়। স্থূলতার জন্য অন্যান্য শারীরিক সমস্যা যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপেরও ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে এ সমস্যাগুলো থেকে খুব সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। খাদ্যাভাস ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে ও শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে খুব সহজে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ঔষধ ও অপারেশনের সাহায্যেও স্থূলতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

কারণ

জিনগত কারণে ও হরমোনের প্রভাবে ওজন বাড়তে পারে। তবে অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার খেলে এবং সে তুলনায় পরিশ্রম কম করলে অতিরিক্ত ক্যালরি আমাদের দেহে চর্বি হিসেবে জমতে থাকে এবং স্থূলতা দেখা দেয়। স্থূলতার কারণগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল:

  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড ও তেলযুক্ত খাবার খেলে ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
  • গর্ভাবস্থায় স্বভাবতই মেয়েদের ওজন বৃদ্ধি পায়। তবে অনেক মেয়েই বাচ্চা হওয়ার পরও এই অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারে না।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের অভাবে স্থূলতা দেখা দিতে পারে।
  • বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার (যেমনঃ arthritis) জন্যও স্থূলতা দেখা দিতে পারে।
  • নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের ব্যবহারের ফলে স্থূলতা দেখা দিতে পারে, যেমন- ডায়াবেটিসের ঔষধ, antidepressants, anti-seizure medications, antipsychotic medications, steroids এবং beta blockers। 

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:

চিকিৎসা

 চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত ঔষধগুলি গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন:

bupropion hydrochloride metformin hydrochloride
orlistat liraglutide

চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত টেস্টগুলি করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন:

ব্লাড গ্লুকোজ, ফাস্টিং (Blood Glucose, Fasting)
এইচ-বি-এ-ওয়ান-সি (HbA1c)
লিপিড প্রোফাইল (Lipid profile)
লিভার ফাংশন টেস্ট (Liver function tests)
থাইরয়েড ফাংশন টেষ্ট (Thyroid function test)

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

বিভিন্ন কারণে এ রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে, যেমন-

  • জিনগত কারণে স্থূলতা দেখা দিতে পারে। মানবদেহ কিভাবে গ্রহণ করা খাবার থেকে শক্তি উৎপাদন করবে এবং পরিশ্রমের সময় কতটুকু ক্যালরি খরচ হবে তা অনেক সময় জিনের উপর নির্ভর করে। ফলে জিনগত ও পরিবেশগত কারণে স্থূলতার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
  • একই পরিবারের সকল সদস্যের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা একই ধরণের হয়ে থাকে। তাই একই পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের মধ্যে স্থূলতা দেখা যেতে পারে।
  • অপর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম করা।
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস থাকা।
  • দীর্ঘদিন ধূমপানের পর হঠাৎ করে ধূমপান ছেড়ে দিলে ওজন বাড়তে পারে। তবে এক্ষেত্রে ওজন বৃদ্ধি ক্ষণস্থায়ী হয়ে থাকে। তাই সুস্থ্যের জন্য অবশ্যই ধূমপান ছাড়তে হবে।
  • গর্ভাবস্থায় স্বভাবতই মেয়েদের ওজন বৃদ্ধি পায়।
  • যেকোনো বয়সে স্থূলতা দেখা দিতে পারে। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের দেহে হরমোনের বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে এবং পরিশ্রমের পরিমাণ কমে যায়। তাই বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্থূলতার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণেও স্থূলতার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার (যেমনঃ arthritis) জন্যও স্থূলতা দেখা দিতে পারে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: মহিলাদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতি: কৃষ্ণাঙ্গ ও হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। শ্বেতাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: প্রথমত স্থূলতা কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। এটি একটি শারীরিক সমস্যা, যা জিনগত বা পরিবেশগত সমস্যার কারণে হতে পারে।

উত্তর: অতিরিক্ত মেদ কমানোর জন্য অবশ্যই প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম বা অনুশীলন করতে হবে। দুপুরের বা রাতের খাবার বাদ দেওয়া যাবে না। সোডা, জুস, দুগ্ধজাতীয় খাবার, এলকোহল এবং ভাজাপোড়া কম খেতে হবে। একই সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি, সবুজ সবজি, টক আচার ও আপেল খেতে হবে। কেননা এসব খাবারে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম থাকে এবং খুব সহজেই এগুলি ক্ষুধা নিবারণ করে।

উত্তর: একটি শিশুর পরবর্তীতে স্থূল হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু বা এ ক্ষেত্রে তার ঝুঁকির পরিমাণ কতটুকু তা তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এই তিনটি বিষয় হল শিশুর ওজন ও উচ্চতার মধ্যে ভারসাম্য আছে কি না, শিশুর ওজন কি হারে বাড়ছে এবং মা-বাবার স্থূলতার সমস্যা আছে কি না। এই তিনটি বিষয় বিবেচনা করে ডাক্তার শিশুর মধ্যে এ সমস্যা শনাক্ত করে থাকেন।

হেলথ টিপস্‌

ওজন কমানোর জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। যেমন-

  • নিজের সমস্যা সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে হবে।
  • একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকতে হবে।
  • ট্রিটমেন্ট প্ল্যান অনুযায়ী চলতে হবে।
  • নির্দেশ অনুযায়ী নিয়মিত ঔষধ খেতে হবে।
  • ওজন কতটুকু কমছে বা বাড়ছে তা নিয়মিত লিখে রাখতে হবে।
  • যেসকল খাবারে ওজন বাড়াতে পারে সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

মেদবৃদ্ধির ঝুঁকি থাকলে বা ওজন বেড়ে গেলে, খুব সহজেই এ সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। অতিরিক্ত ওজন কমানো ও মেদবৃদ্ধি প্রতিরোধ এ দুটো কাজ একই সাথে করা সম্ভব। এক্ষেত্রে যেসব নিয়ম মেনে চলতে হবে সেগুলি  হল-

  • নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
  • যেসকল কারণে মানুষ অতিরিক্ত খাবার খায় (যেমন- কোনো অনুষ্ঠান বা দাওয়াতে গেলে) সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

ডাঃ মোঃ জাহাঙ্গীর রশিদ(কলিন)

মেডিসিন ( Medicine), পালমোনোলজি ( ফুসফুস) ( Pulmonology)

এমবিবিএস(ঢাকা), ডিটিসিডি(ডি,ইউ), এফসিপিএস(আমেরিকা)

অধ্যাপক ডাঃ রাজিবুল আলম

মেডিসিন ( Medicine), রিউম্যাটোলজি ( বাতরোগ) ( Rheumatology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস, এমডি, এমএসিপি(ইউএসএ)

ডাঃ মোঃ সাজ্জাদ হোসেন

মেডিসিন ( Medicine), ডায়াবেটোলজিষ্ট ( Diabetologist)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), ট্রেইন্ড ইন কার্ডিওলজী

ডাঃ রোজিয়াত পারভীন

মেডিসিন ( Medicine), কার্ডিওলজি ( হার্ট) ( Cardiology)

এমবিবিএস, এমডি, বিসিএস, এনআইসিভিডি

ডাঃ শহিদুল্লাহ সবুজ

মেডিসিন ( Medicine), নিউরোলজি ( স্নায়ুতন্ত্র) ( Neurology)

এমবিবিএস,, এফসিপিএস(মেডিসিন),, এমডি(নিউরোমেডিসিন)

ডাঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস (ঢাকা), ডিটিসিডি (ঢাঃবিঃ), এফসিপিএস (আমেরিকা)

ডাঃ মোঃ মুখলেছুর রহমান খান

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস(ঢাকা), ডি-আই এইচ (ব্যাংকক)

ডাঃ আবু রায়হান সিদ্দিক

মেডিসিন ( Medicine)

এম বি বি এস (ডিএমসি), এম আর সি পি (ইউকে)