শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া (Apnea)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়াকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অ্যাপনিয়া (Apnea) বলা হয়। রাতে ঘুমানোর সময় স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষেত্রে অসুবিধা দেখা দিলে তাকে স্লিপ অ্যাপনিয়া (Sleep apnea) বলে। এ অবস্থায় শ্বসনতন্ত্রের পেশিগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না এবং ফুসফুসের আয়তন একই থাকে। পুরুষদের ক্ষেত্রে ও যাদের বয়স ৪০ এর উর্ধ্বে তাদের ক্ষেত্রে স্লিপ অ্যাপনিয়া দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেশি। আবার স্থূলতার কারণেও এ লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এ অবস্থায় চিকিৎসা করা না হলে উচ্চ রক্ত চাপ, স্ট্রোক বা হার্ট ফেইলিয়র হতে পারে।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

যেকোনো ব্যক্তি এমনকি একটি শিশুরও স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে। যেসকল কারণে স্লিপ অ্যাপনিয়ার  ঝুঁকি বাড়তে পারে সেগুলো হলোঃ

স্থূলতার কারণে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে কেননা উপরের অংশের শ্বাসনালীর আশেপাশে চর্বি জমলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তবে পাতলা মানুষের ক্ষেত্রেও এ লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

ঘাড়ের আকৃতি স্বাভাবিকের তুলনায় মোটা হলে শ্বাসনালী সরু হয়ে যায় এবং এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

জন্মগতভাবে শ্বাসনালী ছোট হয়ে গেলে বা টনসিলের আকার বড় হয়ে গেলে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের ক্ষেত্রে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ। তবে স্থূলতার কারণে মহিলাদের মধ্যেও এ লক্ষন দেখা দিতে পারে।

যাদের বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে তাদের ক্ষেত্রে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেশি।

পরিবারের অন্যকারো শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থাকলে এ লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

অ্যালকোহোল ও তামাক জাতীয় দ্রব্য ব্যবহারের কারণে এ লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা একগুণ কম।

জাতিঃ শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা একগুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ কনটেনিউয়াস পজিটিভ এয়ারওয়ে প্রেসার (Continuous positive airway pressure) মেশিনের সাহায্যে স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা কিছুটা দূরীভূত হয়। তবে সমস্যা প্রতিরোধের জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ও চিৎ হয়ে শোয়া যাবে না। অপারেশনের মাধ্যমেও এর চিকিৎসা করা হয়। তবে এ সমস্যা গুরুতর পর্যায়ে চলে গেলেই শুধুমাত্র অপারেশন করা হয়। 

উত্ত রঃ খুব সাধারণভাবে বলতে গেলে অ্যাপনিয়া হলো শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া। অপরদিকে, এসফিক্সিয়া হলো অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া। তবে অ্যাপনিয়া্র কারণে এসফিক্সিয়া হতে পারে।

হেলথ টিপস্‌

নিম্নলিখিত উপায়ে অ্যাপনিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যেমনঃ

  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কখনও কখনও শুধুমাত্র ওজন কমানোর মাধ্যমেই স্লিপ অ্যাপনিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিক অনুশীলন করতে হবে। প্রতিদিন ৩০ মিনিটের জন্য হালকা ব্যায়াম করলে এর লক্ষণ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
  • ঘুমের ঔষধের ব্যবহার কমাতে হবে।
  • ঘুমানোর সময় চিৎ হয়ে শোয়া যাবে না কেননা এ অবস্থায় জিহবা ও তালুর পশ্চাৎভাগ গলার সাথে আটকে শ্বাসনালী বন্ধ করে দেয়। তাই একপাশ হয়ে বা পেটের ওপর ভর দিয়ে ঘুমাতে হবে।
  • ধূমপান পরিহার করতে হবে।