ক্রনিক কন্সটিপেশন/ ক্রনিক কোষ্ঠকাঠিন্য (Chronic constipation)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

সাধারণত সপ্তাহে তিন বারের চেয়ে কম মলত্যাগ হলে সেটিকে কোষ্ঠকাঠিন্য হিসেবে ধরা হয়। অনিয়মিত মলত্যাগ এবং মল শক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে মলত্যাগের সময় ব্যথা অনুভূত  হওয়া কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ। এই সমস্যা কয়েক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে হলে তাকে ক্রনিক কন্সটিপেশন বলে। মাঝেমধ্যে কন্সটিপেশন হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার, তবে এই সমস্যাটি অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তির সাধারণ জীবনযাপনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ক্রনিক কন্সটিপেশনের কারণে অনেক ব্যক্তি মলত্যাগের সময় প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব করে থাকেন।

কারণ

মূলত অন্ত্রের মধ্য দিয়ে মল ধীরে গমন করার কারণেই ক্রনিক কন্সটিপেশন হয়ে থাকে। এ জন্যই মল শক্ত ও শুষ্ক হয়ে যায়। এছাড়াও নিম্নলিখিত কারণসমূহের জন্যও ক্রনিক কন্সটিপেশন হয়ে থাকে।

  • কোলন ও মলদ্বারে মল জমাট বাঁধা: কোলন ও মলদ্বারে আবদ্ধতার কারণে মল গমনের গতি অনেক সময় ধীর হয়ে যায়।
  • কোলন ও মলদ্বারের চারপাশের স্নায়ুর সমস্যা: স্নায়ুর সমস্যা অনেক সময় কোলন ও মলদ্বারের মাংশপেশীকে প্রভাবিত করে। এর ফলে এই মাংসপেশী সংকুচিত হয়ে যায় এবং মল অন্ত্রের মধ্য দিয়ে গমন করার সময় সমস্যার সৃষ্টি হয়।
  • মলদ্বারের এবং আশেপাশের মাংসপেশীতে সমস্যা: মলদ্বারের আশেপাশের মাংসপেশীতে সমস্যা থাকার কারণে মলত্যাগে সমস্যা হয়, এবং এই জন্য ক্রনিক কন্সটিপেশন হয়ে থাকে।
  •   হরমোনগত কারণ: হরমোন শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। যে রোগগুলি হরমোনের ভারসাম্যকে ব্যাহত করে সেগুলির কারণেও অনেক সময় ক্রনিক কন্সটিপেশন হতে পারে।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:

চিকিৎসা

চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত ঔষধগুলি গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন: 

bisacodyl castor oil
ispaghula husk lactulose
magnesium hydroxide magnesium sulphate
methyl cellulose docusate

চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত টেস্টগুলি করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন: 

ইলেক্ট্রোলাইটস, সেরাম (Electrolytes, serum)
সি-বি-সি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট) (CBC, Complete Blood Count)
সিটি স্ক্যান অ্যাবডোমেন (CT scan abdomen)
প্লেইন এক্স-রে (Plain x-ray)
এন্ডোস্কপি ওফ লোয়ার জি-আই (Endoscopy of Lower GI)

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নে লিখিত বিষয়গুলি কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে-
  • পানিশূন্যতায় ভোগা।
  • খাদ্যে আঁশজাতীয় উপাদানের অভাব।
  • শারীরিক পরিশ্রমের অভাব।
  • রক্তচাপ কমানোর জন্য ঘুমের ঔষধ, নেশাজাত দ্রব্য ও অন্যান্য ঔষধ গ্রহণ।
  • মহিলাদের এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। নারীদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে।

জাত: হিস্প্যানিক ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। শ্বেতাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ প্রথমে আপনাকে আপনার ক্রনিক কন্সটিপেশনের কারণ খুঁজে বের করতে হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি খাদ্যে আঁশজাতীয় উপাদানের অভাবের কারণে হয়ে থাকে। নিরাময়ের জন্য আপনি নানা ধরনের ল্যাক্সেটিভ(মল নরমকরণ ঔষধ) গ্রহণ করতে পারেন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের নির্দেশ অনুসরণ করুন।

হেলথ টিপস্‌

নীচে ক্রনিক কন্সটিপেশন নিরাময়ের জন্য কিছু ঘরোয়া প্রতিকারের উপায় দেওয়া হলো:

  • মাছের তেল: মাছের তেলে বিদ্যমান ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড খাদ্য পরিপাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ক্রনিক কন্সটিপেশন নিরাময়ে সাহায্য করে।
  • ক্যাস্টর ওয়েল: ক্যাস্টর ওয়েলে মল নরমকারী উপাদান থাকায় এটিকে ক্রনিক কন্সটিপেশন নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ক্রনিক কন্সটিপেশনে আক্রান্ত শিশুদের স্বাভাবিকভাবে মলত্যাগ করতে ক্যাস্টর ওয়েল সাহায্য করেছে। এটি দ্রুততার সাথে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে কাজ করে থাকে।
  • আঁশজাতীয় খাদ্য: আঁশজাতীয় খাদ্যগ্রহণ ক্রনিক কন্সটিপেশন নিরাময়ের জন্য অতি পরিচিত একটি সমাধান। প্রয়োজনীয় পরিমাণে (২০ থেকে ৩৫ গ্রাম) আঁশ যা ফল, শাকসবজি ও বিভিন্ন খাদ্যশস্যে পাওয়া সম্ভব। এই খাদ্যগুলি আমাদের দৈনন্দিক খাদ্য তালিকায় থাকার কারণে এগুলি খুব সহজেই আপনি ক্রনিক কন্সটিপেশন নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
  • ভেষজ চিকিৎসা: ভেষজ চিকিৎসা দীর্ঘ দিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ভেষজ ঔষধ মল তৈরি ও নরম করার মাধ্যমে ক্রনিক কন্সটিপেশন নিরাময় করে থাকে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

ডাঃ মোঃ আবুল খায়ের

মেডিসিন ( Medicine), কার্ডিওলজি ( হার্ট) ( Cardiology)

এমবিবিএস(ডিএমসি), ডি-কার্ড(এনআইসিভিডি), এফসিপিএস(কার্ডিওলজি)

অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ মহিবুর রহমান

গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology)

এমবিবিএস , এফসিপিএস (মেডিসিন) , এমডি (গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজী)

প্রফেসর ডাঃ এম এ মান্নান

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস(ঢাকা), ইসিএফএমজি(ইউএসএ), এমআরসিপি(ইউকে)

অধ্যাপক ডাঃ মোঃ নুরুল আলম তালুকদার

মেডিসিন ( Medicine), কার্ডিওলজি ( হার্ট) ( Cardiology)

এমবিবিএস(ঢাকা), এফসিপিএস(মেডিসিন), ডি-কার্ড(ঢা-বি)

ডাঃ সুমন রায়

মেডিসিন ( Medicine), ডায়াবেটোলজিষ্ট ( Diabetologist)

এমবিবিএস(ডিইউ), পিজিটি(মেডিসিন), সিসিডি(বারডেম)

ডাঃ মোঃ সাজ্জাদ হোসেন

মেডিসিন ( Medicine), ডায়াবেটোলজিষ্ট ( Diabetologist)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), ট্রেইন্ড ইন কার্ডিওলজী

ডাঃ মোহাম্মদ কামরুল হাসান

গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস মেডিসিন, এমডি(গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজী)

ডাঃ মোঃ জিয়াউল হক

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস, এডিটিসিডি(ডিইউ), এফসিপিএস(ইউএসএ)