সিরোসিস (Cirrhosis)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

সিরোসিস হল ক্ষতযুক্ত লিভারের (ফাইব্রোসিস) শেষ পর্যায়ের অবস্থা। হেপাটাইটিসের মতো লিভারের সমস্যার কারণে এই রোগ দেখা দিতে পারে। তাছাড়া লিভরের ক্ষতি করে এমন দ্রব্য অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলেও সিরোসিস হতে পারে। লিভার শরীরের জন্য ক্ষতিকারক দ্রব্যসমূহকে বিষমুক্ত করা, রক্ত পরিষ্কার করা এবং পুষ্টিকর উপাদান তৈরি করাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে। লিভার সিরোসিসে জন্য কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হলে তা নিরাময় করা সম্ভব নয়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে সিরোসিস সনাক্ত করা সম্ভব হলে, এবং এর মূল কারণটির চিকিৎসা করা সম্ভব হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অধিকতর ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। সিরোসিস বৃদ্ধি পেতে থাকলে লিভারের ক্রিয়াশীলতা কমে আসতে থাকে এবং এটি বড়ো আকার ধারণ করলে জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

কারণ

সিরোসিসের কিছু কিছু কারণ বংশগত বলে ধারণা করা হয়। মূলত নিম্নলিখিত কারণসমূহের জন্য সিরোসিস হয়ে থাকে:

  • শরীরে আয়রনের পরিমাণ বৃদ্ধি।
  • সিসটিক ফাইব্রোসিস হওয়া।
  • লিভারে কপারের পরিমাণ বৃদ্ধি (উইলসন ডিজিজ)।
  • পিত্তনালীর গঠনগত সমস্যা (বিলিয়ারি অ্যাটরেসিয়া)।
  • শর্করা বিপাকের বংশগত(জিনগত) সমস্যা (গ্যালাকটোসেমিয়া বা গ্লাইকোজেন স্টোরেজ ডিজিজ)।
  • পরিপাকতন্ত্রের বংশগত (জিনগত) সমস্যা (অ্যালাগিল সিনড্রম)।
  • ইমিউন সিস্টেমের (রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা) কারণে সৃষ্ট লিভারের সমস্যা (অটোইমিউন হেপাটাইটিস) ।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:

চিকিৎসা

চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত ঔষধগুলি গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন: 

frusemide hydroxyzine hydrochloride
lactulose propranolol hydrochloride
spironolactone thiamine hydrochloride
zinc sulphate diphenhydramine

চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত টেস্টগুলি করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন: 

ব্লাড গ্লুকোজ, র‍্যান্ডম (Blood Glucose, Random)
ইলেক্ট্রোলাইটস, সেরাম (Electrolytes, serum)
এইচ-বি-এ-ওয়ান-সি (HbA1c)
লিপিড প্রোফাইল (Lipid profile)
লিভার ফাংশন টেস্ট (Liver function tests)
সি-বি-সি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট) (CBC, Complete Blood Count)
ইউ-এস-জি ডব্লিউ/এ (USG W/A)

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নে লিখিত বিষয়গুলি সিরোসিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়:

  • বংশ ও জিনগত কারণ: কোনো ব্যক্তির বংশে কেউ সিরোসিসে আক্রান্ত হলে তার নিজেরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • ধূমপান: ধূমপান বিলিয়ারি সিরোসিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
  • অতিরিক্ত ওজন: যেসব ব্যক্তির ওজন বেশি তাদের সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • লিভারের জন্য ক্ষতিকারক ঔষধ: এই ধরনের ঔষধ গ্রহণের কারণেও অনেকের সিরোসিস হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।
  • হেপাটাইটিসজনিত ইনফেকশন: হেপাটাইটিসজনিত ইনফেকশনও সিরোসিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। নারীদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাত: শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উ: সিরোসিসের কারণে লিভারের ক্রিয়াশীলতা নষ্ট হয়ে গেলে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হতে পারে।

উ: বর্তমানে মদ্যপানের চেয়ে অতিরিক্ত ওজনের কারণেই সিরোসিসে বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। অতিরিক্ত ওজন ও হেপাটাইটিসের কারণে লিভারের আকৃতি বেড়ে যায়।

উ: সিরোসিস মারাত্মক আকার ধারণ করলে জীবননাশী হয়ে উঠতে পারে। তবে সব ব্যক্তির সিরোসিসে আক্রান্ত হবার ধরন একই রকম নয়।

হেলথ টিপস্‌

  • অ্যালকোহল পরিহার করা: আপনার সিরোসিসের কারণ যাই হোক না কেন, আপনার উচিৎ অ্যালকোহল গ্রহণ বন্ধ করা। অ্যালকোহল পানের জন্য আপনার লিভারের অধিকতর ক্ষতি হতে পারে।
  • কম সোডিয়ামযুক্ত খাদ্যগ্রহণ করা : অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের কারণে শরীরে পানি জমে, এর ফলে পা ও পেট ফুলে ওঠে । খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির জন্য লবণের পরিবর্তে বিভিন্ন ভেষজ উপাদান ব্যবহার করুন। সেইসব খাদ্য গ্রহণ করুন যেগুলিতে সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে।
  • স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ করা: সিরোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অপুষ্টিতে ভুগতে পারে। এই সমস্যা সমাধানের  জন্য বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ও ফল খেতে হবে। মাছ ও মুরগীর মাংসও খেতে পারেন, তবে কাঁচা সামুদ্রিক খাদ্য পরিহার করুন।
  • ইনফেকশন হতে না দেওয়া: সিরোসিস আক্রান্ত হলে ইনফেকশন প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই অসুস্থ ব্যক্তিদের সঙ্গ পরিহার করুন এবং নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন। আরও সুরক্ষিত থাকতে হেপাটাইটিস এ ও বি, ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টিকা  নিন।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

মেজর জেনারেল ডাঃ এম এ মঈদ সিদ্দিকি (অবঃ)

মেডিসিন ( Medicine), গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস, এমসিপিএস(বিডি), এফআরসিপি(আয়ারল্যান্ড), এফআরসিপি(এডিন), এফসিপিএস(পাক), এফএসিপি(ইউএসএ)

ডাঃ মোঃ নাজমুল হক

গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology)

এমবিবিএস, এমডি(গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজী)

ডাঃ রকিবুল ইসলাম

মেডিসিন ( Medicine), গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology)

এম বি বি এস, , এম ডি(গ্যাসট্রোলজি),, এফ সি পি এস (মেডিসিন)

ডাঃ মোঃ সাইফ উদ্দৌলা

গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology)

এমবিবিএস (ডিএমসি) , এমসিপিএস (মেডিসিন) , এমডি (গ্যাস্ট্রো)

ডাঃ মোঃ দেলোয়ার হোসাইন

গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস (মেডিসিন), এফসিপিএস(গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি)

ডাঃ মোঃ ফজল করিম

মেডিসিন ( Medicine), হেপাটোলজি ( লিভার) ( Hepatology)

এমবিবিএস(ডিএমসি), এফসিপিএস(মেডিসিন), এমডি(হেপাটোলজী)

অধ্যাপক ডাঃ এ.এস.এম বজলুল করিম

পেডিয়াট্রিকস ( Pediatrics), গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology)

এমবিবিএস(ঢাকা), , এফসিপিএস,, ফেলো শিশু পুষ্টি পরিপাকতন্ত্র ও লিভার ডিজিজেস( অস্ট্রোলিয়া)

অধ্যাপক ডাঃ স্বপন চন্দ্র ধর

গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology), মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), এমডি(গ্যাষ্ট্রো), এমএসিজি(ইউএসে)