হৃদস্পন্দন কমে যাওয়া (Decreased Heart Rate)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

লক্ষণটি ব্র্যাডিকার্ডিয়া ( Bradycardia) নামেও পরিচিত।

প্র্রতি মিনিটে হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন সংখ্যাকে হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনের হার বলা হয়। হৃৎপিণ্ড একটি পেশীবহুল অঙ্গ, যা শরীরে রক্তের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে। হৃদস্পন্দনের হার হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা নির্দেশ করে। এছাড়া শরীরের তাপমাত্রা, নাড়ির গতি, নিশ্বাস নেওয়ার হার ও রক্তচাপের মতো হৃদস্পন্দনের হারও শরীরের সার্বিক অবস্থার একটি পরিমাপক। বিশ্রামরত অবস্থায় একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বা শিশুর হৃদস্পন্দনের সংখ্যা ৬০-১০০ হয়ে থাকে। মিনিটে ৬০টির কম হৃদস্পন্দনের সংখ্যাকে ধীর গতির হৃদস্পন্দন হিসেবে ধরা হয়। ধীর গতির এই হৃদস্পন্দনকেই ব্র্যাডিকার্ডিয়া বলে। ব্র্যাডিকার্ডিয়ার কারণে যদি হৃৎপিণ্ড যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন পূর্ণ রক্ত শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রেরণ না করতে পার, তাহলে গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্র্যাডিকার্ডিয়ার কোনো লক্ষণ বা এর কারণে সৃষ্ট কোনো জটিলতা দেখা দেয় না্।  পেসমেকার ও অন্যান্য কিছু চিকিৎসার মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডের গতি স্বাভাবিক রাখা সম্ভব।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-                                     

 

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

বয়স বৃদ্ধি পেলে ব্র্যাডিকার্ডিয়া বা হৃদস্পন্দনের হার কমে যাওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। বয়স্ক ব্যক্তিদের সাধারণত ব্র্যাডিকার্ডিয়ার সাথে সম্পর্কযুক্ত হৃদরোগগুলি হয়ে থাকে।

 

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাত:  শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পরতা সম্ভাবনা থাকে। কৃষ্ণা্ঙ্গ, হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

 

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ না। তবে ব্র্যাডিকার্ডিয়ার কারণে কোনো ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেলে তার স্মৃতি  লোপ পেতে পারে।।

হেলথ টিপস্‌

ব্র্যাডিকার্ডিয়া প্রতিরোধ করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমানো। আপনার যদি হৃৎপিণ্ডের কোনো রোগ থাকে, তাহলে ব্র্যাডিকার্ডিয়া প্রতিরোধ করার জন্য সঠিকভাবে চিকিৎসা পদ্ধতি মেনে চলুন। এছাড়া নিম্নোক্ত বিষয়গুলি অনুসরণ করুন:

  • ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস: নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং কম চর্বিযুক্ত খাদ্যগ্রহণ করুন। বেশি পরিমাণে ফলমূল, শাকসবজি ও শস্যজাতীয় খাবার গ্রহণের অভ্যাস করুন।
  • শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ: শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেলে হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনের হার হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • রক্তচাপ ও কলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণে রাখা: জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে এবং প্রয়োজনীয় ঔষধ গ্রহণ করে রক্তচাপ এবং কোলেষ্টরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
  • ধূমপান ত্যাগ করা: আপনি যদি নিজে থেকে ধূমপান ত্যাগ না করতে পারেন, তাহলে এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • অ্যালকোহল ত্যাগ: অ্যালকোহল গ্রহণ হৃৎপিণ্ডের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য অ্যালকোহল গ্রহণ সম্পূর্ণরূপে ত্যাগ করা উত্তম। অ্যালকোহল গ্রহণ করলেও পরিমিত মাত্রায় গ্রহণ করা উচিৎ। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
  • শারীরিক ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: হৃৎপিণ্ডের ঝুঁকি কমানোর জন্য শারীরিক ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন। এ জন্য কিছু কৌশলও শিখে নিতে পারেন।
  • নিয়মিত চেক-আপ: হৃদেরোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য নিয়মিত শরীরের চেক-আপ করান। শরীরে কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে সে ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।