অনিয়মিত হৃদস্পন্দন (Irregular heart beat)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

হৃৎপিণ্ডের সংকোচন ও প্রসারণের ফলে হৃদস্পন্দন হয়ে থাকে। একজন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিমিনিটে ৭০-৮০ বার হৃদস্পন্দন হয়। তবে কোনো কারণে হঠাৎ করে হৃদস্পন্দন বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। এ অবস্থায় হৃৎপিণ্ড তার স্বাভাবিক গতির তুলনায় খুব দ্রুত বা খুব ধীরে স্পন্দিত হতে থাকে। এর কারণে রক্ত স্বাভাবিক নিয়মে দেহের বিভিন্ন অংশে পৌছতে পারে না যার ফলে দেহ বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হয়। হৃদস্পন্দন খুব দ্রুত হলে তাকে ট্র্যাকিকার্ডিয়া (Tachycardia) এবং হৃদস্পন্দন খুব ধীরে হলে তাকে ব্র্যাডিকার্ডিয়া (Bradycardia) বলে। হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হলে তাকে অ্যারিদমিয়া বলে। এর কারণে এটি ব্যক্তির হার্টে বিরূপ প্রভাব পড়ে। কখনও কখনও এর কারণে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টও হতে পারে।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-   

অ্যাঞ্জাইনা (Angina) দুশ্চিন্তা/উদ্বেগ (Anxiety)
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট (Cardiac arrest) হার্ট ব্লক (Heart block)
হার্ট এ্যাটাক (Heart attack) আতঙ্কগ্রস্ততা (Panic attack)
পেরিকার্ডাইটিস (Pericarditis) অ্যারিদমিয়া (Arrhythmia)
সেন্ট্রাল অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস (Central atherosclerosis) এন্ডোকার্ডাইটিস (Endocarditis)
সেন্ট্রাল রেটিনাল আর্টারী অর ভেইন অকলুশন (Central retinal artery or vein occlusion) করোনারী অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস (Coronary atherosclerosis)
অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশন (Orthostatic hypotension) গ্রেভস ডিজিজ (Graves disease)
মাইট্রাল ভাল্ভ ডিজিজ (Mitral valve disease) সাইনাস ব্র্যাডিকার্ডিয়া (Sinus bradycardia)
বিনাইন প্যারোক্সিজমাল পজিশনাল ভার্টিগো (বি-পি-পি-ভি) (Benign paroxysmal positional vertigo (BPPV)) প্যারোক্সিসমাল সুপ্রাভেন্ট্রিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়া (Paroxysmal supraventricular tachycardia)
অ্যাওর্টিক ভাল্ভ ডিজিজ (Aortic valve disease) অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন (Atrial fibrillation)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

  • করোনারী আর্টারী ডিজিজ, হার্টের কোনো অপারেশন এবং হার্টের অন্যান্য সমস্যার কারণে অ্যারিদমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। (Coronary artery disease, other heart problems and previous heart surgery)
  • এছাড়াও উচ্চরক্তচাপ (High blood pressure), কঞ্জেনিটাল হার্ট ডিজিজ (Congenital heart disease), থায়রয়েড সমস্যা (Thyroid problems), নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের ব্যবহার (Drugs and supplements), ডায়াবেটিস (Diabetes), অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপ্নিয়া (Obstructive slip apnea),ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স (Electrolyte imbalance), অত্যাধিক পরিমাণে মদ্যপান (Drinking too much alcohol), ক্যাফেইন ও নিকোটিনের ব্যবহার(Caffeine or nicotine use) এসব কারণেও অ্যারিদমিয়া হতে পারে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতিঃ কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতিদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ হঠাৎ করে হৃদস্পন্দন বাধাপ্রাপ্ত হলে বা হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হলে তাকে অ্যারিদমিয়া বলে। এর কারণে এটি ব্যক্তির হার্টে বিরূপ প্রভাব ফেলে। তবে মেডিকেশন ও অপারেশনের মাধ্যমে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

হেলথ টিপস্‌

নিয়মিত হার্টের যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে অ্যারিদমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বা ঝুঁকি কমানো সম্ভব। নিম্নলিখিত পন্থা অবলম্বন করে হার্টের যত্ন নেওয়া যায়ঃ

  • হৃদপিণ্ডের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন খাবার খেতে হবে।
  • শারীরিক পরিশ্রম বেশি করতে হবে।
  • ধূমপান, মদ্যপান, ক্যাফেইনের ব্যবহার এড়িয়ে যেতে হবে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • মানসিক চাপ কমাতে হবে।