বুক ধড়ফড় করা (Palpitations)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

হৃৎস্পন্দন অস্বাভাবিক হওয়াকে  বুক ধড়ফড় করা বলে। হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে বা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যেতে পারে। বুক ধড়ফড় করার সাথে অন্যান্য যে লক্ষণগুলো দেখা দেয় সেগুলো হল শ্বাসকষ্ট ও মাথা ঝিমঝিম করা। হৃদরোগের কোনো সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও এ লক্ষণ দেখা দিলে তা খুব বেশি মারাত্মক হয় না। তবে বুক ধড়ফড় করা করোনারি হার্ট ডিজিজ, অ্যাজমা বা এম্ফাইসেমার লক্ষণ হতে পারে।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-

অ্যাঞ্জাইনা (Angina) দুশ্চিন্তা/উদ্বেগ (Anxiety)
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট (Cardiac arrest) ক্রনিক রিউম্যাটিক ফিভার/ক্রনিক বাতজ্বর (Chronic rheumatic fever)
হার্ট ব্লক (Heart block) হার্ট ফেইলিয়র (Heart failure)
ইশকেমিক হার্ট ডিজিজ (Ischemic heart disease) পেরিকার্ডাইটিস (Pericarditis)
অ্যারিদমিয়া (Arrhythmia) পালমোনারী হাইপারটেনশন (Pulmonary hypertension)
এন্ডোকার্ডাইটিস (Endocarditis) পালমোনারী ফাইব্রোসিস (Pulmonary fibrosis)
হিট স্ট্রোক (Heat stroke) করোনারী অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস (Coronary atherosclerosis)
অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশন (Orthostatic hypotension) গ্রেভস ডিজিজ (Graves disease)
হাশিমোতো থাইরয়েডাইটিস (Hashimoto thyroiditis) অ্যাবডোমিনাল অ্যাওর্টিক অ্যানিউরিজম (Abdominal aortic aneurysm)
ম্যাগনেসিয়াম ডেফিসিয়েন্সি (Magnesium deficiency) মাইট্রাল ভাল্ভ ডিজিজ (Mitral valve disease)
মায়োকার্ডাইটিস (Myocarditis) হাইপারকোলেস্টেরোলেমিয়া (Hypercholesterolemia)
সাইনাস ব্র্যাডিকার্ডিয়া (Sinus bradycardia) সাবঅ্যাকিউট থাইরয়ডাইটিস (Subacute thyroiditis)
প্যারোক্সিসমাল সুপ্রাভেন্ট্রিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়া (Paroxysmal supraventricular tachycardia) অ্যাওর্টিক ভাল্ভ ডিজিজ (Aortic valve disease)
অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন (Atrial fibrillation)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি  বুক ধড়ফড় করার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে-

  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা।
  • প্যানিক অ্যাটাক বা অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হওয়া।
  • গর্ভবতী হওয়া।
  • উত্তেজক পদার্থ আছে এমন ঔষধের (ঠাণ্ডা বা এ্যাজমার জন্য ব্যবহৃত ঔষধ) ব্যবহার।
  • থায়রয়েড গ্রন্থি অত্যাধিক সক্রিয় হয়ে পড়লে (হাইপারথায়রয়েডিজম)।
  • হৃৎপিণ্ডে অন্য কোনো ত্রুটি, যেমন- অ্যারিদমিয়া বা পূর্বে হার্ট অ্যাটাক হওয়া।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতিঃ শ্বেতাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ হৃদস্পন্দনের সামান্য অস্বাভাবিকতা সাধারণত হৃৎপিণ্ডের কোনো ক্ষতি করে না। তবে কোনো ব্যক্তির হৃদস্পন্দন যদি বেড়ে যায় এবং দীর্ঘদিন ধরে তা চলতে থাকে, তাহলে হৃৎপিণ্ড বড় হয়ে যাওয়ার বা হার্ট ফেইলিয়র হওয়ার ঝুঁকি থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনের (দ্রুত হৃৎস্পন্দন যার ফলে রক্ত সরবরাহ কমে যায়) কারণে বুক ধড়ফড় করার সমস্যা হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনে আক্রান্ত হওয়ার পরও তেমন কোনো মারাত্মক ক্ষতি হয় না। তবে কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে হার্ট ফেইলিয়রের বিভিন্ন লক্ষণ দিতে পারে। অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনের কারণে রক্ত জমাট বেঁধে গেলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।  

হেলথ টিপস্‌

বুক ধরফর করা খুব পরিচিত একটি সমস্যা। এ সমস্যা প্রতিরোধে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করা যেতে পারে-

  • মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার পরিমাণ কমাতে হবে।
  • ক্যাফেইন, অ্যালকোহল ও ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে।
  • মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য এড়িয়ে চলতে হবে।
  • উত্তেজক পদার্থ আছে এমন ঔষধ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।