ঘাম হওয়া (Sweating)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

মানবদেহে বিভিন্ন গ্রন্থি রয়েছে যেগুলি দেহের বিভিন্ন জৈবিক প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ ক্ষরণ করে থাকে। সোয়েট গ্ল্যান্ড (sweat gland) বা ঘর্ম গ্রন্থি ত্বকের ডার্মিস স্তরে অবস্থিত এবং সরাসরি ত্বকের উপরিভাগে উন্মুক্ত।  ঘর্ম গ্রন্থি শরীরের অতিরিক্ত পানি, লবণ ও ইউরিয়া ঘাম হিসেবে শরীর থেকে বের করে দেয়, এবং দেহে রক্তের পরিমাণ ও অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য বজায় রাখে। এছাড়া এগুলি দেহের তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। মানবদেহে দুই ধরনের ঘর্ম গ্রন্থি রয়েছে, যথাক্রমে- অ্যাক্রাইন গ্রন্থি (Eccrine glands) ও অ্যাপোক্রাইন গ্রন্থি (apocrine glands)। অ্যাক্রাইন গ্রন্থি দেহের বেশিরভাগ অংশজুড়ে বিস্তৃত। ঘাম হওয়ার প্রক্রিয়া পার্সপিরেশন (Perspiration), ডায়াফ্রোসিস (Diaphoresis), হাইড্রোসিস (Hidrosis) বা কোল্ড সোয়েট (Cold sweat) নামেও পরিচিত।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যেমন:

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলো:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নলিখিত কারণে ঘাম হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়:

  • অতিরিক্ত পরিশ্রমের কাজ করা।
  • গরম আবহাওয়া।
  • মাইগ্রেনের কারণে মাথাব্যথা হওয়া।
  • জেনেটিক ও বংশগত বৈশিষ্ট্য।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।  মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতি: হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা  ১ গুণ কম। শ্বেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। 

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত ঘাম হলে তাকে হাইপারহাইড্রোসিস (hyperhidrosis) বলা হয়। হাইপার (hyper) শব্দের অর্থ অত্যাধিক এবং হাইড্রোসিস (Hidrosis) শব্দের অর্থ ঘাম হওয়া। ঘামের সাহায্যে দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে কিন্তু অত্যাধিক ঘাম হলে তা হাইপারহাইড্রোসিস (hyperhidrosis) নির্দেশ করে।

উত্তরঃ  

  • পামার হাইপারহাইড্রোসিস (Palmar hyperhidrosis)- হাতের তালুতে অত্যাধিক ঘাম হওয়া।
  • এ্যাক্সিলারি হাইপারহাইড্রোসিস (Axillary hyperhidrosis)- বগলে অত্যাধিক ঘাম হওয়া।
  • পেডাল হাইপারহাইড্রোসিস (Pedal hyperhidrosis)- পায়ের পাতায় অত্যাধিক ঘাম হওয়া।
  • ফেসিয়াল হাইপারহাইড্রোসিস (Facial hyperhidrosis)- মুখমণ্ডলে অত্যাধিক ঘাম হওয়া ও লালভাব দেখা দেওয়া।

হেলথ টিপস্‌

অত্যাধিক ঘাম প্রতিরোধ করতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করুন-

  • ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক পরুন।
  • মশলাযুক্ত ও ঝাল জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে মুখমণ্ডল ঘেমে ওঠে, যা ‘গাসটেটরি সোয়েটিং’ (gustatory sweating) নামে পরিচিত। ধারণা করা হয়, এটি স্যালিভেটিং-এর (salivating) একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যা ত্বকের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। তাই ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • অ্যালকোহলের ব্যবহার পরিহার করুন। কেননা অ্যালকোহল পানের সময় ত্বকের নিচে অবস্থিত রক্তনালীগুলো প্রসারিত হয়ে পড়ে এবং একইসাথে দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও অত্যাধিক ঘাম হয়।
  • দিনের যে সময় সূর্যের তাপ প্রখর থাকে, সে সময় সরাসরি সূর্যের আলোতে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন, যেমন- দিনের মাঝামাঝি সময় বা দুপুরবেলায় সূর্যের তাপ বেশি থাকে। এই সময় ঘরের বাইরে যাওয়ার ফলে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
  • অত্যাধিক ঘাম হলে দেহের তাপমাত্রা পুনরায় স্বাভাবিক করতে গোসল করুন বা বাতাসের সাহায্যে ঘাম শুকানোর চেষ্টা করুন।