সারা শরীরে ব্যথা (Ache all over)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

লক্ষণটি শরীরে ব্যথা ও শরীরের সাধারণ ব্যথা নামেও পরিচিত।

মাইঅ্যালজিয়া (Myalgia) বা মাংসপেশীর ব্যথা বেশ কিছু রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে। সাধারণত এক বা একাধিক মাংসপেশীর উপর অতিরিক্ত চাপ পড়লে অর্থাৎ মাংসপেশীর অতিরিক্ত সংকোচন-প্রসারণ হলে এই লক্ষণ দেখা দেয়। কোনো ব্যক্তি পূ্র্বে আঘাত না পেলেও তার শরীরে যদি ব্যথা সৃষ্টি হয়, তবে এই ব্যথা ভাইরাসজনিত  ইনফেকশনের  কারণে হতে পারে। এছাড়া মেটাবলিক মাইয়োপ্যাথি (metabolic myopathy), পুষ্টির ঘাটতি এবং ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রোমের (chronic fatigue syndrome) লক্ষণ হিসেবেও সারা শরীরে ব্যথা হওয়া সম্ভব।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে:  যেমন-

যোনিদ্বারের ক্যান্সার (Vulvar cancer) ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস (Chronic pancreatitis)
ভ্যালে ফিভার (Valley fever) চিকেনপক্স (Chickenpox)
ম্যালেরিয়া (Malaria) মেনিনজাইটিস (Meningitis)
গলার ইনফেকশন (Strep throat) খাদ্যনালীর ক্যান্সার (Esophageal cancer)
ফ্লু (Flu) অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার (Pancreatic cancer)
ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া/কুচকির হার্নিয়া (Inguinal hernia) রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস (Rheumatoid arthritis)
অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস (Ankylosing spondylitis) ওভারিয়ান টরশন (Ovarian torsion)
প্রিয়াপিজম (Priapism) বোন ক্যান্সার (Bone cancer)
সিকেল সেল অ্যানিমিয়া (Sickle cell anemia) স্পন্ডাইলোসিস (Spondylosis)
সিস্টেমিক লুপাস ইরাইথেম্যাটোসাস (এস-এল-ই) (Systemic lupus erythematosus (SLE)) থ্রম্বোফ্লেবাইটিস (Thrombophlebitis)
পালমোনারী ইওসিনোফিলিয়া (Pulmonary eosinophilia) অ্যাড্রেনাল অ্যাডেনোমা (Adrenal adenoma)
হেমাটোমা (Hematoma) রেনোড ডিজিজ (Raynaud disease)
রিঅ্যাক্টিভ আর্থ্রাইটিস (Reactive arthritis) র‍্যাবডোমায়োলাইসিস (Rhabdomyolysis)
হেমারথ্রোসিস (Hemarthrosis) হিমোক্রোমেটোসিস (Hemochromatosis)
ডিজেনারেটিভ ডিস্ক ডিজিজ (Degenerative disc disease) এমফাইসিমা (Emphysema)
টেস্টিকুলার ক্যান্সার (Testicular cancer) ভ্যারিকোস ভেইন (Varicose veins)
গুলেন বারে সিন্ড্রোম (Guillain Barre syndrome) লাং কনটিউশন (Lung contusion)
মোনোনিউরাইটিস (Mononeuritis) হিস্টোপ্লাসমোসিস (Histoplasmosis)
ফাইব্রোমায়ালজিয়া (Fibromyalgia) মায়োকার্ডাইটিস (Myocarditis)
নিউরালজিয়া (Neuralgia) শোগ্রেন সিন্ড্রোম (Sjogren syndrome)
সোমাটাইজেশন ডিজঅর্ডার (Somatization disorder) হাইপারনেট্রেমিয়া (Hypernatremia)
প্যাজেট ডিজিজ (Paget disease) ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া (Trigeminal neuralgia)
অ্যাটেলেকটেসিস (Atelectasis) ফ্র্যাকচার অফ দি পেলভিস (Fracture of the pelvis)
ফ্র্যাকচার অফ দি রিব (Fracture of the rib) ক্রনিক পেইন ডিজঅর্ডার (Chronic pain disorder)
ইনজুরি টু ইন্টারনাল অরগান (Injury to internal organ) অ্যাবডোমিনাল হার্নিয়া (Abdominal hernia)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

সাধারণত নিন্মলিখিত বিষয়গুলির জন্য সারা শরীরে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়:

  • লিঙ্গ: পুরুষদের চেয়ে নারীদের সারা শরীরে ব্যথা বেশি হয়ে থাকে।
  • বংশ: কোনো ব্যক্তির বংশ/ পরিবারের কারো সারা শরীরে ব্যথা হওয়ার সমস্যা থাকলে সেই ব্যক্তিরও তা হতে পারে।
  • বাতজনিত রোগ: কোনা ব্যক্তির রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা লুপাসের মতো বাতজনিত রোগ থাকলে তার  সারা শরীরে ব্যথা হতে পারে ।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে । পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাত: শ্বেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ এবং হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উ: সম্ভাব্য কারণ ফ্লু। ফ্লু বা অন্য কোনো ভাইরাসজনিত ইনফেকশনের কারণে এই সমস্যা হতে পারে। এই ধরনের শরীরের ব্যথা সাধারণত ৫-১৪ দিন স্থায়ী হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর স্বাভাবিকভাবেই এই সমস্যার নির্মূল করতে পারে। তবে এর লক্ষণ প্রশমিত করার জন্য ঔষধ গ্রহণ করা যেতে পারে।

উ: হ্যাঁ, হতে পারে। সাধারণ অ্যানেসথেশিয়ার জন্য ব্যবহৃত  কিছু ঔষধের কারণে  মাংসপেশী সংকুচিত হতে পারে। এ জন্য অ্যানেসথিশিয়ার পর কোনো ব্যক্তি জেগে উঠলে তার মাংসপেশী্তে ব্যথা হতে পারে। তবে সময়ের সাথে সাথে এই সমস্যা দূরীভূত হয়।

উ: গর্ভাবস্থায় ঘুমের সমস্যার কারণে মাংসপেশী ও হাড়ে (musculoskeletal) ব্যথা হতে পারে। ব্যায়ামের  মাধ্যমে এই ব্যথা কমানো সম্ভব।

হেলথ টিপস্‌

টান লাগা বা শারীরিক ক্রিয়াকর্মের ফলে মাংসপেশীতে ব্যথা হলে পরবর্তীতে এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করুন:

  • শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করার পূর্বে মাংসপেশী প্রসারণ করুন।
  • ব্যায়াম করার পূর্বে ওয়ার্ম-আপ করুন এবং পরে বিশ্রাম নিন।
  • শারীরিক পরিশ্রম করলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
  • মাংসপেশীর  স্বাভাবিক সংকোচন-প্রসারণ বজায় রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন।