কাশির সাথে শ্লেষ্মা নির্গত হওয়া (Coughing up sputum)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

গলা বা শ্বাসনালীতে ক্ষতিকর/উত্তেজক কোনো পদার্থের (Irritant) উপস্থিতির কারণে কাশি হয়ে থাকে। এই ক্ষতিকর/উত্তেজক পদার্থের (Irritant) উপস্থিতির কারণে মস্তিষ্ক থেকে তলপেট ও বুকের পেশীতে সংকেত পৌঁছায় যাতে ফুসফুস থেকে প্রবল বাতাস বা নিঃশ্বাসের সাহায্যে উত্তেজক পদার্থটি বের হয়ে আসে।

কাশি হলো এমন একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা আকস্মিকভাবে হয়ে থাকে এবং এ প্রক্রিয়ার সাহায্যে শ্বাসনালী থেকে যেকোনো দূষিত পদার্থ ও জীবাণু বাইরে বেরিয়ে আসে। কাশির এই প্রক্রিয়াটি সাধারণত তিনটি পর্যায়ে হয়ে থাকে।  প্রথম পর্যায়ে আমরা শ্বাস নিই, দ্বিতীয় পর্যায়ে বাতাস আবদ্ধ শ্বাসরন্ধ্রে চাপ সৃষ্টি করে এবং তৃতীয় ও শেষ পর্যায়ে ফুসফুস থেকে আবদ্ধ শ্বাসরন্ধ্রের ভেতর দিয়ে জোরপূর্বক সশব্দে বাতাস বেরিয়ে আসে, যাকে আমরা কাশি বলে থাকি। কাশি ইচ্ছাকৃত বা স্বতঃস্ফূর্ত হতে পারে এবং এই কাশির সাথে যখন শ্লেষ্মা বা কফ গেলে তাকে কফ কাশি বলে।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যেমন:

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলো:

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষ ও মহিলাদের ক্ষেত্র এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

জাতিঃ শ্বেতাঙ্গদের ক্ষেত্র এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।  কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: ধূমপানের কারণে দেহে যে বিষক্রিয়া হয় তা প্রতিরোধের জন্য দেহে অধিক পরিমাণে কফ বা শ্লেষ্মা উৎপাদিত হয়। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর অতিরিক্ত উৎপাদিত কফ বা শ্লেষ্মার পরিমাণ আবার স্বাভাবিক হতে কিছুদিন সময় লাগে। এটি সাথে সাথে ঠিক না হলেও নির্দিষ্ট সময় পর সম্পূর্ণভাবে ঠিক হয়ে যায়। 

উত্তর: ফুসফুস, নাসিকা ও সাইনাসে শ্লেষ্মা উৎপাদিত হয় বলে শিশুদের এই কফ দেখা দেয়। শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে আমাদের দেহে যেসকল ক্ষতিকর জীবাণু প্রবেশ করে তা প্রতিরোধের জন্য এই কফ বা শ্লেষ্মা তৈর হয়। শ্বাসনালীর গাত্রে যেসকল রোগ প্রতিরোধকারী কোষ রয়েছে তা নির্দিষ্ট কিছু এ্যান্টিবডির সাহায্যে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করে। মিউকাস বা শ্লেষ্মায় অবস্থিত উপাদান এই ক্ষতিকর জীবাণ নষ্ট করে ও একই সাথে শরীর থেকে বের করে দেয়। 

হেলথ টিপস্‌

কিছু ঘরোয়া উপায়ে এই কফ কাশির চিকিৎসা করা হয়, যেমন-

  • মধু: মধু কফ-কাশি প্রতিরোধে সাহায্যে করে। ২০০৭ সালে এবিসি নিউজের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে ২-১৮ বছর বয়সের শিশুদের রাতে ঘুমানোর আগে মধু খাওয়ানো হলে তা কফ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে অন্যান্য কাশির সিরাপের তুলনায় আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
  • পেঁয়াজ ও চিনি: একটি পেঁয়াজ কুঁচি করে নিয়ে তা ১/২ কাপ চিনির সাথে মিশিয়ে সারারাত রাখতে হবে। এই মিশ্রণটি কফ প্রতিরধে সাহায্য করে।
  • অন্যান্য ভেষজ উপাদান: একিনেশিয়া (Echinacea) ও পেপারমিন্টের সাহায্যেও কফ প্রতিরোধ করা সম্ভব। একিনেশিয়া (Echinacea) ভাইরাল ও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়তা করে। এটি ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায়। পেপারমিন্ট চকলেট কফ উৎপাদনের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। আবার এই দুই উপাদান গরম পানিতে মিশিয়ে চা হিসেবেও পান করা যেতে পারে।