দুর্বলতা কোনো একক শারীরিক অবস্থা নয়, বরং কয়েক ধরনের অসুস্থতার সমন্বয়কে দুবর্লতা বলা হয়। যেমন- মাংসপেশী দুর্বল হয়ে পড়া, মাথা ঝিম ঝিম করা, অবসাদ ও ক্লান্তিবোধ। পুরো শরীর জুড়ে বা শরীরের যেকোনো নির্দিষ্ট অংশে দুর্বলতা অনুভব হতে পারে। সাধারণত স্ট্রোক, স্নায়ুতে আঘাত বা মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসের (multiple sclerosis) সময় শরীরের নির্দিষ্ট একটি অংশ দুর্বল হয়ে পড়ে। কখনো কখনো শরীর দুর্বল মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে কর্মক্ষমতা হ্রাস পায় না। এই ধরনের দুর্বলতাকে বলা হয় সাবজেক্টিভ উইকনেস (subjective weakness), যা ইনফেকশনজনিত কারণ যেমন মনোনিউক্লিয়োসিস (mononucleosis) বা ফ্লু এর জন্য হয়ে থাকে। আবার শরীর দুর্বল হয়ে পড়ার সাথে সাথে কর্মক্ষমতা হ্রাস পেলে তাকে অবজেক্টিভ উইকনেস (objective weakness) বলা হয়, যা বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়।
বয়স বাড়ার সাথে একজন ব্যক্তি স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো দুর্বলতা বা অবসাদের ঝুঁকি বাড়ায়:
বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জি।
অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার বা উদ্বেগ।
ক্যান্সার।
সিরোসিস।
এইচ-আই-ভি ইনফেকশন।
কিডনি ফেইলিয়র।
কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিয়র।
বিষণ্নতা।
অপুষ্টি।
রক্তস্বল্পতা।
মাদক সেবন।
অ্যাজমা।
যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে
লিঙ্গ: পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।
জাতি: কৃষ্ণাঙ্গ ও হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। শ্বেতাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।
হেলথ টিপস্
বিভিন্ন কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং এই লক্ষণ সাময়িক বা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। তাই শরীরকে সতেজ ও কর্মক্ষম রাখতে কয়েকটি বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে, যেমন-
অসুস্থ অবস্থায় কাজের অতিরিক্ত চাপ না নিয়ে সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিন।
সুস্থ হয়ে ওঠার পর ধীরে ধীরে দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে শুরু করুন। এ অবস্থায় কোনোভাবেই অতিরিক্ত কাজের চাপ নেয়া যাবে না। এতে দীর্ঘদিনের জন্য পুনরায় অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
অনুশীলনের সময় নিজের শারীরিক অবস্থা ও কর্মক্ষমতা অনুযায়ী ব্যায়াম করুন। শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে এমন ব্যায়াম করা যাবে না।
ঘুমের ঔষধ, অ্যালার্জির ঔষধ বা সর্দি-কাশি নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষধ সেবন করা হলে দুর্বলতা বোধ হতে পারে। তাই এসকল ঔষধের ব্যবহার সীমিত রাখুন। যতটা সম্ভব এই ঔষধগুলো গ্রহণ না করার চেষ্টা করুন।
দৈনিন্দিন খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনুন। প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবার গ্রহণ করুন। দিনের প্রতিটি সময়ের খাবার সময়মত খাওয়া জরুরি। তাই খেয়াল রাখবেন আপনি সময়মত খাবার খাচ্ছেন কি না, বিশেষ করে সকালের নাস্তা।
ধূমপান, অ্যালকোহল, মাদক ও ক্যাফেইন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজের জন্য সময় ভাগ করে নিন। দীর্ঘক্ষণ ধরে কোনো কাজ করবেন না, এবং কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। এতে একঘেয়েমি ও অবসাদবোধ হবে না, এবং কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়বে।
নিয়মিত ৮-১০ ঘন্টা ঘুমান। পরিমিত পরিমাণ ঘুমের অভ্যাস দুর্বলতা বা অবসাদ প্রতিরোধের প্রথম ও প্রধান শর্ত।