ডায়রিয়া (Diarrhea)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

দিনে ৩ বা ততোধিক বার পাতলা পায়খানা হওয়াকে ডায়রিয়া বলে। সাধারণত গ্যাসট্রোএনটেরাইটিসের (gastroenteritis) কারণে ডাইরিয়া হয়ে থাকে। যেকোনো ব্যক্তিরই ডায়রিয়া হতে পারে। ডায়রিযার লক্ষণগুলি সাধারণত দুই দিন স্থায়ী হয়। তবে ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজ (inflammatory bowel disease)-এর মতো গুরুতর বা ইরিটেব্‌ল বাওয়েল সিনড্রোমের(irritable bowel syndrome) মতো অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর রোগের লক্ষণ হিসেবে কয়েক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া হতে পারে।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যেমন:

মদ্যপানজনিত লিভারের রোগ (Alcoholic liver disease) শ্বেতরক্ত কণিকা সম্পর্কিত রোগ (White blood cell disease)
ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস (Chronic pancreatitis) পরিপাকতন্ত্রের রক্তক্ষরণ (Gastrointestinal hemorrhage)
অ্যাপেন্ডিসাইটিস (Appendicitis) লিভারের রোগ (Liver disease)
ডায়াবেটিক কিটোএ্যাসিডোসিস (Diabetic ketoacidosis) ডায়পার র‍্যাশ/ফুসকুড়ি (Diaper rash)
বিষক্রিয়াজনিত হেপাটাইটিস (Hepatitis due to a toxin) পাকস্থলীর ক্যান্সার (Stomach cancer)
ফ্লু (Flu) অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার (Pancreatic cancer)
ল্যাক্টোজ ইনটলারেন্স/ দুগ্ধজাত খাবারের প্রতি অসহিষ্ণুতা (Lactose intolerance) বদহজম (Indigestion)
ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (Irritable bowel syndrome) অন্ত্রের ক্যান্সার (Intestinal cancer)
গ্যাস্ট্রাইটিস (Gastritis) অন্ত্রের রোগ (Intestinal disease)
রেক্টাল ডিজঅর্ডার / মলাশয়ের রোগ (Rectal disorder) সিলিয়াক ডিজিজ (Celiac disease)
কার্বন মনোক্সাইড পয়জনিং (Carbon monoxide poisoning) কোলিডোকোলিথায়াসিস (Choledocholithiasis)
অ্যাসেন্ডিং কোলাঞ্জাইটিস (Ascending cholangitis) ইনটেস্টাইনাল ম্যালঅ্যাবজর্পশন (Intestinal malabsorption)
কোলনিক পলিপ (Colonic polyp) গ্লুকোকরটিকোয়েড ডেফিসিয়েন্সি (Glucocorticoid deficiency)
ক্রন ডিজিজ (Crohn disease) ইলিয়াস (Ileus)
ডাইভারটিকুলোসিস (Diverticulosis) ইশকেমিয়া অফ দি বাওয়েল (Ischemia of the bowel)
গ্যাস্ট্রোপ্যারেসিস (Gastroparesis) ভলভুলাস (Volvulus)
ম্যাগনেসিয়াম ডেফিসিয়েন্সি (Magnesium deficiency) নন-ইনফেকশস গ্যাস্ট্রোয়েন্টেরাইটিস (Noninfectious gastroenteritis)
মায়োকার্ডাইটিস (Myocarditis) ইন্টাসাসসেপশন (Intussusception)
হাইপারএমেসিস গ্রেভিডেরাম (Hyperemesis gravidarum) হাইপোক্যালসেমিয়া (Hypocalcemia)
ইন্টেস্টাইনাল অবস্ট্রাকশন (Intestinal obstruction) অ্যানিমিয়া অফ ক্রনিক ডিজিজ (Anemia of chronic disease)
ব্যাসেট ডিজিজ (Behcet disease)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যেমন:

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পরতা সম্ভাবনা থাকে। নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাত: কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: হ্যাঁ, হতে পারে। একটি শিশু কোন কোন তরল খাদ্য গ্রহণ করার পর সহ্য করতে পারবে, তা তার জন্মগত কিছু বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে। তবে গরুর দুধ পান করার পর অনেক শিশুর দুধের প্রোটিনের কারণে অ্যালার্জি হয়। এছাড়া অনেক শিশুর গরুর দুধে বিদ্যমান ল্যাকটোজ হজম করার ক্ষমতা থাকে না। এসব কারণে গ্যাস, পেটে ব্যথা ও ডায়রিয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

হ্যাঁ। কোনো ইনফেকশনের কারণে এই সমস্যা তীব্র রূপ (অ্যাকিউট) ধারণ করতে পারে।

হেলথ টিপস্‌

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কয়েক দিনের মধ্যে ডায়রিয়া এমনিতেই সেরে যায়। ডায়রিয়া সেরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত নিম্নোক্ত বিষয়গুলি অনুসরণ করতে চেষ্টা করুন-

  • যতবার পাতলা পায়খানা হবে ততোবার খাবার স্যালাইন খেতে হবে, যাতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা না দেয়।
  • বেশি পরিমাণে পানি, জুস ও অন্যান্য পানীয় পান করুন। তবে ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল পরিহার করুন।
  • পাতলা পায়খানা কমে যেতে থাকলে কিছুটা শক্ত ও আঁশযুক্ত খাবার খেতে শুরু করুন। এ জাতীয় কিছু খাবার হল ক্র্যাকার্স, টোস্ট, ডিম, ভাত ও মুরগীর মাংস।
  • কিছু দিনের জন্য দুগ্ধজাত, চর্বিযুক্ত, আঁশযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পরিহার করুন।
  • ডায়রিয়া নিরাময়ের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াও কিছু ঔষধ গ্রহণ করা যেতে পারে, যেমন- লোপেরামাইড(loperamide), বিসমাথ সাবস্যালিসাইলেট(bismuth subsalicylate)। এই ঔষধগুলি পাতলা পায়খানা কমাতে সাহায্য করে।
  • প্রয়োজনে আপনি প্রোবায়োটিক্স (Probiotics) গ্রহণ করতে পারেন। প্রোবায়োটিক্সের মধ্যে এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া বিদ্যমান থাকে যেগুলি পরিপাকতন্ত্রে অবস্থিত কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়ার অনুরূপ। প্রোবায়োটিক্স উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে। এই ব্যাকটেরিয়াগুলি পরিপাকতন্ত্রে অবস্থিত জীবাণু প্রতিহত করে থাকে। মাখনের মধ্যেও এ জাতীয় উপকারী ব্যাকটেরিয়া বিদ্যমান।