লিভারের রোগ (Liver disease)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

এটি লিভার ডিজিজ (Liver Disease), ডিজিজ অফ লিভার( Disease of Liver), হেপাটিক ডিজিজ (Hepatic Disease), হেপাটিক ডিজ অর্ডার(Hepatic Disorder), হেপাটোসেলুলার ডিজিজ (Hepatocellular Disease) ও  হেপাটোপ্যাথি (Hepatopathy) নামেও পরিচিত। লিভারের একটি লম্বাটে ত্রিকোণাকৃতির অঙ্গ যা  তলপেটের ডান দিকে পাঁজরের নিচে অবস্থিত। লিভার খাদ্য পরিপাকে এবং দেহকে বিষাক্ত পদার্থ থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

লিভারের রোগ জীনগত কারণে হতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন ভাইরাসের কারণে এবং মদ্যপান করলে লিভারের রোগ হতে পারে। অতিরিক্ত মেদের কারণেও লিভারের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সময়ের সাথে সাথে লিভারের ক্ষতির ফলে লিভার সিরোসিস হয়, যা থেকে লিভার ফেইলর দেখা দিতে পারে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুও হতে পারে।

কারণ

অনেক কারণে লিভারের রোগ হতে পারে-

ইনফেকশন (Infection):

পরজীবি এবং ভাইরাস লিভারকে আক্রান্ত করতে পারে, এর ফলে লিভারে ইনফ্লামেশন বা জ্বালাপোড়া হয় এবং লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যায়। যে ভাইরাসের কারণে লিভারের ক্ষতি হয় তা রক্ত, বীর্য, দূষিত পানি, অস্বাস্থ্যকর খাবার বা আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মাধ্যমে ছড়ায়। যে কারণে লিভার ইনফেকশন বেশি হয় তা হলো হেপাটাইটিস ভাইরাস। এগুলি  হল:

  • হেপাটাইটিস এ (Hepatitis A)
  • হেপাটাইটিস বি (Hepatitis B)
  • হেপাটাইটিস সি (Hepatitis C)
  • হেপাটাইটিস ডি (Hepatitis D)
  • হেপাটাইটিস ই (Hepatitis E)

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অস্বাভাবিকতা (Immune system abnormality)

মাঝে মাঝে দেহের রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলো দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে থাকে, যার ফলে লিভার আক্রান্ত হয়। অটোইমিউন লিভার ডিজিজের মধ্যে রয়েছে:

  • অটোইমিউন হেপাটাইটিস (Autoimmune hepatitis)।
  • প্রাইমারী বিলিয়ারী সিরোসিস (Primary biliary cirrhosis)।
  • প্রাইমারী স্ক্লেরোসিং কোলানজাইটিস (Primary sclerosing cholangitis)।

বংশ ও জিনগত কারণ (Genetics)

বাবা, মা বা উভয়ের থেকে সন্তানের মধ্যে একটি অস্বাভাবিক জিন আসে, যার ফলে লিভারে অনেক ধরনের পদার্থ জমা হয় এবং তার ফলে লিভারের ক্ষতি হয়। জেনেটিক লিভার ডিজিজের মধ্যে রয়েছে:

  • হেমোক্রোমাটোসিস (Hemochromatosis)।
  • হাইপারএক্সেলুরিয়া এন্ড অক্সালোসিস (Hyperoxaluria and oxalosis)।
  • উইলসন’স ডিজিজ (Wilson's disease)।

ক্যান্সার বা অন্যান্য বৃদ্ধি (Cancer and other growths)

  • লিভার ক্যান্সার (Liver cancer)।
  • বাইল ডাক্ট ক্যান্সার (Bile duct cancer)।
  • লিভার এডেনোমা (Liver adenoma)।

অন্যান্য কারণ (Other)

লিভারের রোগ অন্যান্য যেসব কারণে হতে পারে:

  • ক্রনিক অ্যালকোহল অ্যাবিউজ বা অ্যালকোহল অধিক হারে গ্রহণ করা (Chronic alcohol abuse)।
  • লিভারে চর্বি জমে যাওয়া (Fat accumulating in the liver)।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নলিখিত কারণে লিভারের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়:

  • অতিরিক্ত মদ্যপান করা।
  • ড্রাগ নেওয়ার সময় একই সূচ ব্যবহার করা।
  • শরীরে ট্যাটু বা পিয়ার্সিংস করা হলে।
  • রক্ত আদান-প্রদান।
  • আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত ও তরলের সংস্পর্শে আসা।
  • বিভিন্ন রাসায়নিক বা বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে আসা।
  • ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া।
  • মেদবহুলতা।
  • রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়া।
  • অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতি: কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম। শ্বেতাঙ্গ, হিস্প্যানিক এবং অন্যান্য জাতি মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: লিভার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। লিভার ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যু নতুন টিস্যু দ্বারা প্রতিস্থাপনের ক্ষমতা রাখে। যদি কোন কারণে লিভারের ৫০-৬০% কোষ নষ্ট হয়ে যায় এবং অন্য কোন জটিলতা  না থাকে তবে লিভার এক মাসের মধ্যেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।

উত্তর: না, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগের ফলে কোনো ধরনের ব্যথা অনুভূত হয় না।

হেলথ টিপস্‌

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মেনে চললে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব:

  • অতিরিক্ত মদ্যপান এড়িয়ে চলতে হবে।
  • একই সূচ অনেকজন মিলে ব্যবহার করা যাবে না,
  • যৌনমিলনের সময় কনডম ব্যবহার করতে হবে।
  • হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস বি এর প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন নিতে হবে।
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খেতে হবে। ঔষধ ও অ্যালকহোল একসাথে মিশিয়ে খাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
  • আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত ও ফ্লুইড থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • কীটনাশক এবং অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহারের সময় দস্তানা, টুপি এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

ডাঃ ফাওয়াজ হোসাইন (শুভ)

হেপাটোলজি ( লিভার) ( Hepatology)

এম বি বি এস (ডি এম সি), এম ডি (হেপাটোলজী)

ডাঃ মোঃ শাহেদ আশরাফ

হেপাটোলজি ( লিভার) ( Hepatology)

এমবিবিএস(সিইউ), বিসিএস(স্বাস্থ্য), এমডি-হেপাটোলজি(বিএসএমএমইউ)

ডাঃ ফাওয়াজ হোসাইন(শুভ)

হেপাটোলজি ( লিভার) ( Hepatology)

এমবিবিএস(ডিএমসি), এমডি(হেপাটোলজী)

লেঃ কর্ণেল ডাঃ মোঃ সফিকুল হাসান

হেপাটোলজি ( লিভার) ( Hepatology), মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), এফসিপিএস(গ্যাস্ট্রো) ট্রেইনি

অধ্যাপক ডাঃ ব্রিগ্রেঃ জেনারেল(অবঃ) মোঃ মোখলেসুর রহমান

মেডিসিন ( Medicine), হেপাটোলজি ( লিভার) ( Hepatology)

এমবিবিএস(ঢাকা), এফসিপিএস(মেডিসিন)

ডাঃ মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন গাজী

হেপাটোলজি ( লিভার) ( Hepatology)

এমবিবিএস, বিসিএস(স্বাস্থ্য), এফসিপিএস(২য়)

ডঃ এস এম রোকনুজ্জামান

মেডিসিন ( Medicine), গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology), হেপাটোলজি ( লিভার) ( Hepatology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), এমডি(গ্যাস্ট্রো এন্টারলজি এন্ড হেপাটোলজি)

ডাঃ মোঃ ফজল করিম

মেডিসিন ( Medicine), হেপাটোলজি ( লিভার) ( Hepatology)

এমবিবিএস(ডিএমসি), এফসিপিএস(মেডিসিন), এমডি(হেপাটোলজী)