শরীরের পার্শ্বীয় ব্যথা (Side pain)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

লক্ষণটি শরীরের পার্শ্বদেশের (Flank) ব্যথা হিসেবেও পরিচিত।

পেটের উপরের অংশে বা পিছনের দিকে সৃষ্ট ব্যথা বা অস্বস্তিকে শরীরের পার্শ্বীয় ব্যথা বলে। এই অংশটি পাঁজরের নিচে, শ্রোণীর(pelvis) উপরে এবং শরীরের প্রান্তে অবস্থিত। সাধারণত পাশের দিকে এই ব্যথার তীব্রতা বেশি হয়।

প্রায় প্রত্যেক ব্যক্তিই কোনো না কোনো সময় কমপক্ষে একবার এই ব্যথা অনুভব করে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ব্যথা অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয়।

তবে মূত্রনালীর ইনফেকশন, কিডনির ইনফেকশন বা পানিশূন্যতার মতো রোগের কারণে স্থায়ী ও তীব্রভাবে এই ব্যথা সৃষ্টি হওয়া সম্ভব। হঠাৎ করে এই ব্যথা তীব্র রূপে সৃষ্টি হলে কিডনির পাথর এর কারণ হতে পারে। এছাড়া ব্যথা যদি ক্রনিক (chronic) হয়, তবে তা অন্যান্য কিছু কারণে সৃষ্টি হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

সাধারণত কিডনির বিভিন্ন সমস্যার লক্ষণ হিসেবে শরীরের পার্শ্বদেশের ব্যথা হয়ে থাকে। কিন্ত অন্যান্য লক্ষণের সাথে এই লক্ষণটি দেখা দিলে তা অন্য কোনো রোগের নিদের্শক হতে পারে। এই ব্যথা ক্রনিক রূপ ধারণ করলে এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-        

অ্যাপেন্ডিসাইটিস (Appendicitis) লিভারের রোগ (Liver disease)
ক্রনিক ব্যাকপেইন (Chronic back pain) ডিম্বাশয়ের সিস্ট (Ovarian cyst)
পিত্তথলির পাথর (Gallstone) কিডনিতে পাথর (Kidney stone)
পেল্ভিক ইনফ্লামেটোরি ডিজিজ (Pelvic inflammatory disease (PID)) পেরিটোনাইটিস (Peritonitis)
বিনাইন কিডনি সিস্ট (Benign kidney cyst) পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ (Polycystic kidney disease)
ট্রাইকোমোনাস ইনফেকশন (Trichomonas infection) কোলিডোকোলিথায়াসিস (Choledocholithiasis)
গ্লুকোকরটিকোয়েড ডেফিসিয়েন্সি (Glucocorticoid deficiency) ইলিয়াস (Ileus)
ইনজুরি টু দি অ্যাবডোমেন (Injury to the abdomen) প্লুরাল ইফিউশন (Pleural effusion)
নিউমোথোরাক্স (Pneumothorax) এপিডিডাইমিটিস (Epididymitis)
ইনজুরি টু দি স্পাইনাল কর্ড (Injury to the spinal cord) পালমোনারী এমবলিজম (Pulmonary embolism)
এপিডুরাল হেমারেজ (Epidural hemorrhage) পায়েলোনেফ্রাইটিস (Pyelonephritis)
অ্যাবডোমিনাল অ্যাওর্টিক অ্যানিউরিজম (Abdominal aortic aneurysm) হাইডেটিডিফর্ম মোল (Hydatidiform mole)
স্পন্ডিলাইটিস (Spondylitis) সেরিঙ্গোমায়েলিয়া (Syringomyelia)
ভালভোডাইনিয়া (Vulvodynia) ফ্র্যাকচার অফ দি পেলভিস (Fracture of the pelvis)
ফ্র্যাকচার অফ দি রিব (Fracture of the rib) ফ্র্যাকচার অফ দি নেক (Fracture of the neck)
ইনজুরি টু ইন্টারনাল অরগান (Injury to internal organ)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

কিডনির ইনফেকশন ও ক্যান্সার থেকে শরীরের পার্শ্বীয় ব্যথা উৎপন্ন হতে পারে। এছাড়া  কিডনি থেকে মূত্রের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলেও এই ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিডনির পাথর ও ক্যান্সারের জন্য মূত্র বাধাগ্রস্ত হওয়ার সমস্যা হতে পারে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতি: শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। হিস্প্যানিক, কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ  বেশি পরিমাণে পানি পান করা কিডনির পাথর প্রতিরোধ করার একটি উপায়। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে শরীরের পার্শীয় ব্যথা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।

উত্তরঃ না, এটি সংক্রামক নয়। ফলে এতে আক্রান্ত ব্যক্তির দ্বারা এটি অন্য কারো শরীরে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে এই ব্যথা সৃষ্টিকারী ইনফেকশন সংক্রামক হতে পারে।

হেলথ টিপস্‌

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করে শরীরের পার্শ্বীয় ব্যথা প্রতিরোধ করা যেতে পারে:

  • নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ।
  • পানিশূনতা যাতে সৃষ্টি না হয় সে জন্য যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করা।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা।