বুকের চাপা ব্যথা (Chest tightness)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

ব্যাথা ছাড়াই বুকে চাপ, ভার বা আবদ্ধতা অনুভব হলে তাকে চেস্ট প্রেসার বলে। এ অবস্থায় মনে হয় বুকের উপর ভারী কোনো কিছু চেপে বসে আছে। বুকের যেকোনো অংশেই এই চাপ অনুভূত হতে পারে যেমনঃ বুকের অভ্যন্তরীণ দেওয়ালে অবস্থিত মাংসপেশি, খাদ্যনালী, হৃৎপিন্ড, ফুসফুস, বুকের পাঁজর ও টেন্ডনস। যদি বুকে চাপসহ ব্যাথা অনুভূত হয় তবে তা বুক থেকে ঘাড়, পেট ও মেরুদন্ডে ছড়াতে পারে। বুক জ্বালাপোড়া বা গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজের কারণে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। বুকে ব্যাথা সহ চাপ অনুভূত হলে এবং তা শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে পরিবর্তিত হলে বা মেরুদন্ড পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়লে তা পেশির ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ অথবা প্লুরাইটিক পেইন (pleuritic pain) হতে পারে। চেস্ট প্রেসারের অন্যান্য কারণগুলো হলো দুশ্চিন্তা, অ্যানাফিলাক্সিজ (anaphylaxis- একধরনের অ্যালার্জি জনিত সমস্যা যার কারণে মৃত্যুও হতে পারে), হার্ট অ্যাটাক এবং অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-

অ্যাঞ্জাইনা (Angina) অ্যাজমা (Asthma)
ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (Chronic obstructive pulmonary disease, COPD) ক্রনিক রিউম্যাটিক ফিভার/ক্রনিক বাতজ্বর (Chronic rheumatic fever)
হার্ট ব্লক (Heart block) হার্ট এ্যাটাক (Heart attack)
হার্ট ফেইলিয়র (Heart failure) আতঙ্কগ্রস্ততা (Panic attack)
ইশকেমিক হার্ট ডিজিজ (Ischemic heart disease) পেরিকার্ডাইটিস (Pericarditis)
গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ/ বুকজ্বালা (Gastroesophageal reflux disease) অ্যারিদমিয়া (Arrhythmia)
পা্লমোনারী কঞ্জেশন (Pulmonary congestion) পালমোনারী ফাইব্রোসিস (Pulmonary fibrosis)
করোনারী অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস (Coronary atherosclerosis) এমফাইসিমা (Emphysema)
পালমোনারী এমবলিজম (Pulmonary embolism) অ্যাকালাসিয়া (Achalasia)
সারকোয়ডোসিস (Sarcoidosis) মাইট্রাল ভাল্ভ ডিজিজ (Mitral valve disease)
মায়োকার্ডাইটিস (Myocarditis) সাইনাস ব্র্যাডিকার্ডিয়া (Sinus bradycardia)
প্যারোক্সিসমাল সুপ্রাভেন্ট্রিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়া (Paroxysmal supraventricular tachycardia) নিউমোকোনিওসিস (Pneumoconiosis)
অ্যাকিউট স্ট্রেস রিঅ্যাকশন/ডিজঅর্ডার (Acute stress reaction/disorder) হাইপারট্রোফিক অবস্ট্রাক্টিভ কার্ডিওমায়োপ্যাথি (এইচ-ও-সি-এম) (Hypertrophic obstructive cardiomyopathy (HOCM))

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

জাতিঃ শ্বেতাঙ্গদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে, কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্পানিক ও অন্যান্য জাতির ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা একগুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ দৌড়ানোর ফলে হৃৎপিন্ড অতিরিক্ত ক্রিয়াশীল হয়ে পড়ে এবং হৃৎপিন্ডে রক্তের চাহিদা বেড়ে যায়। কোনো ব্যক্তি করোনারি আর্টারি ডিজিজে আক্রান্ত হলে হৃৎপিন্ডে রক্ত সরবরাহের পরিমাণ কমে যায় ও বুকে ব্যাথা হয় ও চাপ অনুভূত হয়। একই সাথে শ্বাসকষ্ট, চোয়াল ও বামদিকের বাহুতে ব্যথা হয়। 

হেলথ টিপস্‌

নিম্নলিখিত উপায়ে হৃদরোগ ও বুকে ব্যাথা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যেমনঃ

  • অ্যাঞ্জাইনার কারণে বুকে ব্যাথা হলে অতিরিক্ত পরীশ্রম করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। চর্বি ও চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • অ্যালকোহল বা মদ্যপান এড়িয়ে চলতে হবে।
  • ধূমপান পরিহার করতে হবে।
  • মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা কমাতে হবে।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • চিকিৎসকের নির্দেশানা অনুযায়ী ঔষধ খেতে হবে।