মলের সাথে স্রাব বা মিউকাস নির্গত হওয়া (Discharge in Stool)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

লক্ষণটি মিউকাস ইন স্টুল (mucus in stools) ও মলে পুঁজ নামেও পরিচিত।

রক্ত বাদে মলে বিদ্যমান যে কোনো তরলকে (মিউকাস) ডিসচার্জ ইন স্টুল বলে।

মিউকাস এক ধরনের নরম ও ঘন পদার্থ, যা পরিপাক নালীর ভিতরকার আবরণসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে উৎপন্ন হয়। মিউকাস শরীরের বিভিন্ন অংশের উপরিতলকে পিচ্ছিল করে, এবং বিভিন্ন পদার্থকে নির্বিঘ্নে গমন করতে সাহায্য করে। মলে কিছু পরিমাণ মিউকাস থাকা স্বাভাবিক। তবে বেশি পরিমাণ মিউকাসের সাথে ডাইরিয়া, ব্যথা ও রক্ত দেখা দিলে তা অন্ত্রে ইনফেকশন বা ইনফ্লামেশনের মতো রোগের লক্ষণ হতে পারে। এছাড়া কোলন ক্যান্সার, পায়ুর ক্যান্সার  বা অন্ত্রে আবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার কারণেও মলে বেশি পরিমাণ মিউকাস সৃষ্টি হতে পারে। ক্রোন্স ডিজিজ (Crohn’s disease) ও আলসারেটিভ কোলাইটিসের (ulcerative colitis and) মতো অন্ত্রের  প্রদাহজনিত রোগের কারণে পেটে ক্র্যাম্প হতে পারে বা পেট ফুলে উঠতে পারে। এই ধরনের রোগের সাথে সাধারণত ডাইরিয়া দেখা দেয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যও হতে পারে। এছাড়া অন্ত্রের মধ্যকার আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে মলে রক্তও আসতে পারে।

ইরিটেব্‌ল বাওয়েল সিনড্রোমের (irritable bowel syndrome) সাথেও অনুরূপ লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে যেহেতু এটি কোনো প্রদাহজনিত রোগ নয়, এবং যেহেতু এর ফলে অন্ত্রের মধ্যকার আবরণ অক্ষত অবস্থায় থাকে, তাই এই রোগের জন্য খুব কম ক্ষেত্রে মলের সাথে রক্ত দেখা দেয়। মলে রক্ত দেখা দেওয়ার সাথে যদি গ্যাসট্রোইনটেসটিনাল ইনফেকশন (gastrointestinal infection) সম্পর্কযুক্ত হয়, তাহলে মলে রক্ত দেখা দেওয়ার পাশাপাশি ডাইরিয়া এবং পেটের ক্র্যাম্প দেখা দিতে পারে। মলে রক্ত দেখা দেওয়ার সাথে সাথে কিছু ক্ষেত্রে জ্বরও হতে পারে।

মলে রক্ত দেখা দেওয়ার সাথে অন্যান্য কিছু লক্ষণ দেখা দিলে তা  গুরুতর কোনো রোগের ফল হতে পারে। তাই এই সমস্যার সাথে তীব্র জ্বর হলে অথবা মূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়া, পিপাসা বৃদ্ধি পাওয়া, কালো মূত্র, দুর্বলতা, মাথা হালকা অনুভূত হওয়া ও পানিশূন্যতার মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে মলে মিউকাস দেখা দিলে, এবং এর পাশাপাশি জ্বর ও মলত্যাগে কোনো পরিবর্তন হলেও দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের  মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পরতা সম্ভাবনা থাকে। নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাত:  হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ২ গুণ কম। কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পরতা সম্ভাবনা থাকে। অন্যান্য জাতির মানুষের  মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

 

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ মহিলাদের একই সাথে স্তনে ব্যথা, এবং মল ও যৌনাঙ্গে রক্ত দেখা দিলে কি করা উচিৎ?

উত্তরঃ এসব সমস্যা দেখা দিলে গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। ইনফেকশন ও স্বাভাবিক গর্ভপাতের কারণে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই কারো এমন সমস্যা হলে দ্রুত পরীক্ষা করিয়ে তার চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিৎ।

হেলথ টিপস্‌

  • বেশি পরিমাণে তাজা ফলমূল, শাকসবজি এবং অন্যান্য শস্যজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করুন। এই ধরনের খাদ্য গ্রহণ করলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে যায়, ফলে মলে রক্ত আসা বন্ধ হয়। প্রক্রিয়াজাত ও মশলাপূর্ণ খাদ্য পরিহার করা উচিৎ।
  • এছাড়া শরীর থেকে ক্ষতিকারক পদার্থ বের করে দেওয়ার জন্য বেশি পরিমাণে পানি পান করুন।
  • ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন। এছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণে চা ও কফি খাওয়াও একটি ক্ষতিকর অভ্যাস। তাই এমন অভ্যাস খাকলে তা পরিহার করুন।
  • আপনার পাইলস বা হেমোরয়েডের সমস্যা থাকলে পাইলসে তিলের বিজ থেকে তৈরি পুলটিস ব্যবহার করুন। এর পরিবর্তে হাফ চা চামচ তিলের বীজ কিছুটা মাখনের সাথে খেতে পারেন।