প্রসব পরবর্তী স্তনের সমস্যা (Postpartum problems of the breast)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

সন্তান প্রসবের ৬ মাসের মধ্যে স্তনে বিভিন্ন অস্বাবাভিকতা লক্ষ্য করা যায়। যেমনঃ ব্যথা, স্তন বা স্তনের বোঁটা ফুলে যাওয়া বা লাল হয়ে যাওয়া এবং স্তন থেকে দুধ ছাড়া অন্যকোনো তরল জাতীয় পদার্থ নিঃসৃত হওয়া। এই সমস্যাকে এনগর্জড ব্রেস্ট (Engorged Breast) বলা হয়।

কারণ

প্রসবের আগে থেকেই মায়ের স্তনে দুধ জমতে শুরু করে এবং শিশু জন্মের সাথে সাথেই শালদুধ নিঃসৃত হয় যা শিশুর জন্য খুবই উপকারী। প্রথম ছয় মাস বাচ্চাকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। প্রসব পরবর্তী সময়ে প্রথম কয়েকদিন বাচ্চা ঠিক মত দুধ না পেলে বা কোনো কারণে মা বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে না পারলে অতিরিক্ত দুধ জমে স্তনে ব্যথা হতে পারে। এমনকি দুধ উৎপাদনের পরিমাণ কম হলেও এই সমস্যা হতে পারে। তবে কিছু কিছু মহিলার ক্ষেত্রে দেখা যায় বাচ্চাকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ানোর পরও এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। এছাড়াও মিল্ক ডাক্ট কোনো কারণে বন্ধ হয়ে গেলেও এ সমস্যা হতে পারে। প্রথমবার দুধ উৎপাদন হওয়ার কারণে স্তন অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় অতিরিক্ত দুধ জমার ফলে স্তনে ইনফেকশনসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

যেসকল কারণে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় সেগুলো হলোঃ

  • বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সময় স্তন সম্পূর্নভাবে খালি না করা।
  • বাচ্চাকে নিয়মিত বুকের দুধ না খাওয়ানো।
  • স্তনে অতিরিক্ত দুধ উৎপাদন হওয়া।
  • হঠাৎ করে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দেওয়া।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

জাতিঃ কৃষ্ণাঙ্গ ও হিস্প্যানিকদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে, শ্বেতাঙ্গদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা একগুণ কম এবং অন্যান্য জাতির ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১৪ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ এনগর্জড ব্রেস্ট মারাত্মক আকার ধারণ করলে স্তনে তীব্র ব্যথা হতে পারে ও স্তন ফুলে যেতে পারে। এ অবস্থায় শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। ফলে স্তন সম্পূর্ণভাবে খালি হয় না এবং স্তনের বোঁটা বা নিপলে ক্ষতের সৃষ্টি হয় ও ফেটে যায়। এছাড়াও অতিরিক্ত দুধ জমার ফলে মিল্ক ডাক্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে ও ইনফেকশনের সৃষ্টি করতে পারে যা ম্যাস্টাইটিস নামে পরিচিত। ম্যাস্টাইটিস হলে অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্যে চিকিৎসা করাতে হবে। 

উত্তরঃ এ অবস্থায় অবশ্যই শিশুকে বুকের দুধ দিতে হবে। কেননা বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে স্তনে দুধের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকে ও অতিরিক্ত দুধ জমতে পারে না। 

হেলথ টিপস্‌

প্রসব পরবর্তী সময়ে স্তনে বিভিন্ন অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে করণীয়ঃ

  • শিশুকে নিয়মিত বুকের দুধ দিন। অতিরিক্ত দুধ জমে স্তন শক্ত হয়ে গেলে বুকের দুধ এক্সপেস/বের করে খাওয়াতে হবে। কোন কারণে মা বা শিশু অসুস্থ হলে, নিপল শক্ত হয়ে গেলে হাত, সিরিঞ্জ (সুঁই ফেলে সিরিঞ্জের আগার অংশ গোল করে কেটে বোঁটায় বসিয়ে প্রিস্টন দিয়ে টানতে হবে ) , চামচ , কাপ বা বোতলের সাহায্যে বুকের দুধ টেনে বাচ্চাকে খাওয়াতে হবে।
  • বাচ্চা ঠিক মত দুধ পাচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে।
  • প্রত্যেকবার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় স্তন পুরোপুরিভাবে খালি হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করুন, এতে স্তনে দুধের উৎপাদন সঠিক থাকবে।