হাঁটুর মাংসপেশীতে টান বা খিঁচুনি (Knee cramps or spasms)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

হাঁটুতে আঘাত লাগা, পুষ্টির অভাব, স্নায়ুর ত্রুটি ও লোকাল স্ট্রেনের ফলে হাঁটুর মাংসপেশীতে খিঁচুনি বা টান দেখা দিতে পারে। আবার হাঁটুর মাংসপেশীর অনৈচ্ছিক সংকোচন-প্রসারণের কারণেও টান লাগতে পারে। এই অনৈচ্ছিক সংকোচন-প্রসারণকে বলা হয় ‘চার্লি হর্স’ (charley horse) যা পায়ের কাফ (calf) মাসল, হ্যামস্ট্রিং (hamstring) ও কোর্য়াডিসেপ্স (quadriceps) এ বেশি হয়ে থাকে। হাঁটুর মাংসপেশীতে টান বা খিঁচুনি হলে ব্যথা হতে পারে এবং কখনো কখনো এই ব্যথা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। যার ফলে মাংসপেশীর ক্ষতি হয় ও কার্যকারিতা হ্রাস পায়। সাধারণত এই খিঁচুনি বা টান শুরু হওয়ার এক মিনিটের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। আবার, কখনো কখনো অধিক সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। সাধারণত দেখা যায় যে, পায়ের মাংসপেশীতে আকস্মিক ও অনৈচ্ছিকভাবে খিঁচুনি বা টান দেখা দিলে হাঁটুতেও টান অনুভূত হয়। আকস্মিকভাবে ব্যথাসহ খিঁচুনি দেখা দিলে সময়িকভাবে তা একজন ব্যক্তিকে দুর্বল করে দেয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘুমন্ত অবস্থায় এই খিঁচুনি বা টা জন্য ঘুম নষ্ট হয়।

কারণ

দীর্ঘক্ষণ মাংসপেশীর সংকোচন-প্রসারণের ফলে এবং ভারী ব্যায়াম  করার ফলে মাংসপেশী শিথিল হয়ে পড়ে, যার ফলে হাঁটুতে খিঁচুনি বা টান দেখা দেয়। এছাড়াও যেসব কারণে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়, সেগুলি হল- ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা, ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স, নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের ব্যবহার এবং অতিরিক্ত ওজন।

অনুশীলন বা ব্যায়ামের সময় হাঁটুতে খিঁচুনি দেখা দিলে স্ট্রেচিংয়ের মাধ্যমে এ সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। এছাড়াও শারীরিক চাপ ও পানিশূন্যতা প্রতিরধে প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে (যাদের বয়স ৬৫ বা এর উর্ধ্বে) এবং যারা নিয়মিত ব্যায়াম করে তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। দেহে ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন কিসমিস, অরেঞ্জ জুস, মিষ্টি আলু ও কলা খেতে হবে।

খিঁচুনি/টানের চিকিৎসা এর ধরনের উপর নির্ভর করে। ভারোত্তলন বা ভারী অনুশীলনের সময় হাঁটুতে টান লেগে যদি অ্যাকিউট ইনজুরি দেখা দেয়, তবে আক্রান্ত স্থানে বরফ দিতে হবে যাতে পরবর্তীতে স্থানটি ফুলে না যায়। আবার যেকোনো ক্রনিক কন্ডিশন যেমন অনুশীলনের সময় ইনফ্লামেশন বা প্রদাহজনিত কারণে খিঁচুনি দেখা দিলেও বরফ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ অবস্থায় হাঁটুতে হিট ট্রিটমেন্ট দেওয়া হলে তা মাংসপেশীতে পুনরায় রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতিঃ কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ৩ গুণ বেশি। হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১২ গুণ কম। শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ২ গুণ কম। অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ৪ গুণ কম।