যৌনাকাঙ্খা কমে যাওয়া (Loss of sex drive)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

স্বাভাবিক যৌনাকাঙ্খাসম্পন্ন কোনো ব্যক্তির যৌনাকাঙ্খা হ্রাস পাওয়া /না থাকাকে যৌনাকাঙ্খা কমে যাওয়া বলে। সময়ের সাথে সাথে মহিলাদের যৌনাকাঙ্খা স্বাভাবিকভাবেই পরিবর্তিত হয়। যৌনাকাঙ্খার বৃদ্ধি ও হ্রাস সাধারণত ব্যক্তিগত সম্পর্কের শুরু বা শেষ, এবং জীবনযাত্রায় বড় ধরনের পরিবর্তনের (গর্ভধারণ, মেনোপজ ও অসুস্থতা ইত্যাদি) সাথে সম্পর্কযুক্ত। কিছু অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট (antidepressant) এবং অ্যান্টি-সিজার ঔষধ গ্রহণের কারণেও মহিলাদের যৌনাকাঙ্খা কমে যেতে পারে।

যৌনাকাঙ্খা দীর্ঘস্থায়ীভাবে কম থাকার জন্য কোনো ব্যক্তির মানসিক সমস্যা দেখা দিলে তা হাইপোঅ্যাকটিভ সেক্সুয়্যাল ডিজঅর্ডার (hypoactive sexual disorder) হতে পারে।

বয়সের সাথে সাথে পুরুষদের যৌনাকাঙ্খা কমে যাওয়াও স্বাভাবিক। যৌনাকাঙ্খা কমে যাওয়ার মাত্রা ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়। ৬০-৭০ বছর বয়সেও বেশিরভাগ পুরুষদের কিছুটা মাত্রায় যৌনাকাঙ্খা থাকে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে যৌনাকাঙ্খা হ্রাস অন্তর্নিহিত কোনো রোগের সাথেও সম্পর্কযুক্ত হতে পারে। এছাড়া বিষন্নতা, মানসিক চাপ, সেক্স হরমোন হ্রাস [এনডোক্রাইন ডিজঅর্ডারের (endocrine disorder) কারণে] এবং ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণেও পুরুষদের এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে:  যেমন-

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যে সকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি যৌনাকাঙ্খা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে-

  • যৌন সমস্যা।
  • সার্জারি।
  • ক্লান্তি।
  • গর্ভধারণ ও স্তন্যপান করানো।
  • উদ্বিগ্নতা ও বিষন্নতার মতো মানসিক সমস্যা।
  • নিজের শরীর/চেহারা সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা।
  • আত্মসম্মানের অভাব।
  • শারীরিক ও যৌন নিগ্রহণের অভিজ্ঞতা।
  • যৌনতা সম্পর্কে নেতিবাচক অভিজ্ঞতা।
  • যৌনসঙ্গীর সাথে মানসিক দূরত্ব।
  • অমীমাংসিত সমস্যা বা দ্বন্দ্ব।
  • যৌন চাহিদা ও ইচ্ছা সঠিকভাবে প্রকাশ করতে না পারা।
  • সম্পর্কে অবিশ্বাস ও বিশ্বাসভঙ্গ হওয়া।
  • মাদকাসক্তি।
  • বয়স বৃদ্ধি।
  • কিছু নির্দিষ্ট রোগ।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাত: শ্বেতাঙ্গ ও হিস্প্যানিকদের এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

 

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ হ্যাঁ, পারে। বাইসাইকেলের সিটের উপরে দীর্ঘ সময় বসে থাকার কারণে কুঁচকিতে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে, বা কুঁচকি অবশ হয়ে যেতে পারে। এই ক্ষত বা অবশ ভাবের কারণে যৌনাকাঙ্খা হ্রাস পেতে পারে।

উত্তরঃ উল্লিখিত সমস্যাগুলি মেজর ডিপ্রেসিভ জিজঅর্ডারের (major depressive disorder) প্রধান কিছু লক্ষণ। মানসিক চাপের কারণে এ ধরনের বিষন্নতাজনিত সমস্যা হতে পারে। তবে উল্লিখিত সমস্যাগুলি অন্য কোনো রোগের কারণে হচ্ছে কীনা, তা চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন। সাইকোথেরাপি ও কিছু ঔষধ দ্বারা বিষন্নতাজনিত সমস্যার চিকিৎসা করা সম্ভব।

হেলথ টিপস্‌

যৌনাকাঙ্খা কমে যাওয়ার ফলে আপনি ও আপনার যৌনসঙ্গীর বিভিন্ন সমস্যা হতে  পারে। এর ফলে আপনি অত্যন্ত হতাশ বোধ করতে পারেন। এছাড়া এই জন্য আপনার সঙ্গী বঞ্চিতবোধ করতে পারে। ফলস্বরূপ, আপনাদের মাঝে মানসিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার এই মানসিক দ্বন্দ্ব আপনার যৌনাকাঙ্খা আরও কমিয়ে দিতে পারে।

তবে মনে রাখা প্রয়োজন যে, যৌনাকাঙ্খার হ্রাস-বৃদ্ধি জীবনের যে কোনো পর্যায়ে যে কোনো যৌনসম্পর্কের ক্ষেত্রে হতে পারে। তাই সমস্ত মনোযোগ যৌনতার দিকে দেওয়া উচিৎ নয়। যৌনাকাঙ্খা হ্রাস পেলে আপনার সম্পর্কের ব্যাপারে আরও যত্নশীল হোন। স্মরণ রাখবেন যে, স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করলেও আপনার যৌনাকাঙ্খার পরিবর্তন ঘটতে পারে। এছাড়া নিম্নলিখিত বিষয়গুলিও অনুসরণ  করতে পারেন-

  • ব্যায়াম করা।
  • মানসিক চাপ কমানো।
  • যৌনসঙ্গীর সাথে আপনার সমস্যা সম্পর্কে কথা বলা।
  • যৌনসঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করা।
  • যৌনজীবন আকর্ষণীয় করা।
  • বদভ্যাস ত্যাগ করা।