অনৈচ্ছিক মূত্রত্যাগ (Involuntary urination)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

এটি ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স (Urinary incontinence) নামেও পরিচিত। এ অবস্থায় ব্যক্তি মূত্র নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না। এমনকি সাধারণ হাঁচি বা কাশি দেওয়ার ফলেও হঠাৎ করে মূত্রত্যাগ করে ফেলে বা মূত্রত্যাগের চাপ অনুভব করে। এই সমস্যার কারণে  দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরনের অস্বস্থিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। তবে অভ্যাসগত বিভিন্ন পরিবর্তন ও চিকিৎসার সাহায্যে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-

বিনাইন প্রস্টেটিক হাইপারপ্লেসিয়া, বি-পি-এইচ (Benign prostatic hyperplasia, BPH) ভ্যারিকোসিল অফ দা টেস্টিকল (Varicocele of the testicles)
মেনোপজ/রজঃবন্ধ (Menopause) লিঙ্গের উত্থানজনিত সমস্যা (Erectile dysfunction)
কিডনির ক্যান্সার (Kidney cancer) অনিয়মিত মাসিক (Irregular menstrual cycle)
অ্যাট্রোপিক ভ্যাজাইনাইটিস (Atrophic vaginitis) বিনাইন কিডনি সিস্ট (Benign kidney cyst)
প্লাসেন্টা প্রিভিয়া (Placenta previa) প্রস্টেট ক্যান্সার (Prostate cancer)
কারসিনোয়েড সিন্ড্রোম (Carcinoid syndrome) এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্ল্যাসিয়া (Endometrial hyperplasia)
স্পাইনা বিফিডা (Spina bifida) গ্রেভস ডিজিজ (Graves disease)
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচ-পি-ভি) ইনফেকশন (Human papilloma virus (HPV) infection) স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্স (Stress incontinence)
ওভারফ্লো ইনকন্টিনেন্স (Overflow incontinence) ব্লাডার অবস্ট্রাকশন (Bladder obstruction)
পেলভিক অরগান প্রোলেপ্স (Pelvic organ prolapse) অ্যাটনিক ব্লাডার (Atonic bladder)
সাইকোসেক্সুয়াল ডিজঅর্ডার (Psychosexual disorder)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নলিখিত কারণে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়ঃ

  • মহিলাদের ক্ষেত্রে স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্স (Stress incontinence) (হাঁটাচলা বা অন্যান্য শারীরিক পরিশ্রমের কারণে অনিচ্ছাকৃতভাবে অল্প পরিমাণে মূত্রত্যাগ) বেশি দেখা যায়। মেনোপজ, গর্ভধারণ বা সন্তান প্রসবের কারণে মহিলাদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। আবার প্রস্টেট গ্রন্থিতে কোনো ধরনের সমস্যা থাকলে পুরুষদের ক্ষেত্রেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে মূত্রাশয় ও মূত্রনালীর কার্যকারিতা হ্রাস পেতে থাকে, ফলে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • স্থূলতার কারণে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। কেননা শরীরের অতিরিক্ত চর্বি মূত্রাশয় ও এর আশেপাশের পেশীর উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং এগুলোর কার্যক্ষমতা কমিয়ে ফেলে।
  • ডায়াবেটিস ও বিভিন্ন নিউরোলজিক্যাল ডিজিজের কারণে এ লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

 লিঙ্গঃ মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে, পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা একগুণ কম।

জাতিঃ শ্বেতাঙ্গদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে, হিস্প্যানিক, কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্যদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা একগুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স (Urinary incontinence) এর বিভিন ধরনগুলো নিম্নরূপঃ

  • স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্স (Stress incontinence) ঃ হাঁটাচলা বা অন্যান্য শারীরিক পরিশ্রমের কারণে অনিচ্ছাকৃতভাবে অল্প পরিমাণে মূত্রত্যাগ। এটি মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে।
  • আর্জ ইনকন্টিনেন্স (Urge incontinence)/ ওভারঅ্যাক্টিভ ব্লাডার (overactive bladder)ঃ প্রস্রাবের মাত্রাধিক চাপ অনুভব করা ও অনিচ্ছাকৃতভাবে মুত্রত্যাগ করা। এ সমস্যা ঘুমের সময়, খুব অল্প পরিমাণে পানি পান করার পর, এমনকি পানি পড়ার শব্দ শুনলেও হতে পারে।
  • ফাংশানাল ইনকন্টিনেন্স (Functional incontinence)ঃ এ অবস্থায় শারীরিক ও মানসিক অক্ষমতার কারণে ব্যক্তি যথাসময়ে মূত্রত্যাগে ব্যর্থ হয়। যেমনঃ অ্যালঝেইমার ডিজিজে (Alzheimer'sdisease) আক্রান্ত রোগীদের এ সমস্যা হয়ে থাকে।
  • ওভারফ্লো ইনকন্টিনেন্স (Overflow incontinence)ঃ এ অবস্থায় মূত্রথলি সম্পূর্ণভাবে খালি হয় না। সাধারনত মুত্রনালীতে ব্লক বা অবস্ট্রাকশন এবং নার্ভে কোনো ক্ষতি হলে এ সমস্যা হয়ে থাকে।
  • মিক্সড ইনকন্টিনেন্স (Mixed incontinence)ঃ এ অবস্থায় স্ট্রেস ও আর্জ ইনকন্টিনেন্সের লক্ষণগুলো একইসাথে দেখা দেয়।
  • ট্রানজিয়েন্ট ইনকন্টিনেন্স (Transient incontinence)ঃ শারীরিক অসুস্থতা বা ইনফেকশনের কারণে সাময়িকের জন্য এ সমস্যা দেখা দেয়। নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের ব্যবহার, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, মানসিক অসুস্থতা এবং মারাত্মক কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের কারণে এ লক্ষণ দেখা দেয়।

হেলথ টিপস্‌

         লক্ষণ প্রতিরোধে করণীয়:

  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • ক্যাফেইন ও এসিডিক খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
  • কোষ্ঠ্যকাঠিন্য প্রতিরোধে আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।
  • গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শানুযায়ী তলপেটের ব্যায়াম করতে হবে।