অ্যাট্রোপিক ভ্যাজাইনাইটিস (Atrophic vaginitis)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

শরীরের ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কম হয়ে গেলে অ্যাট্রোপিক  ভ্যাজাইনাইটিস  হয়ে থাকে। এটি ভ্যাজাইনাল এ্যাট্রোফি (Vaginal atrophy) নামেও পরিচিত। এর ফলে, স্ত্রী-যোনীদ্বারের প্রাচীর সরু ও শুষ্ক হয়ে যায় এবং জ্বালাপোড়া করে। এই রোগটি সাধারণত মেনোপোজের পরে বেশী হয়ে থাকে। এছাড়াও শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো এবং অন্যান্য যেসব কারনে শরীরের ইস্ট্রোজেন উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায় সেসব কারনেও এই রোগটি হয়ে থাকে। এই রোগের ফলে অধিকাংশ মহিলাদের জন্য যৌনসহবাস বেদনাদায়ক হয়, ফলে স্বাভাবিকভাবেই যৌনসহবাসের ইচ্ছা কমে যায়। একটি সুস্থ যৌন প্রক্রিয়ার সাথে একটি সুস্থ রেচনতন্ত্র (ইউরিনারী সিস্টেম) ঘনিষ্টভাবে সম্পর্কযুক্ত। এই রোগের জন্য সাধারণ ও কার্যকর চিকিৎসা রয়েছে। শরীরের ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে দেহের উপর এর প্রভাব পড়ে এবং বিভিন্ন পরিবর্তন হয়ে থাকে, তবে তার মানে এই নয় যে রোগীকে এই রোগ জনিত অস্বস্তি নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে।

কারণ

ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে ভ্যাজাইনাল এ্যাট্রোফি হয়ে থাকে। অপরিমিত ইস্ট্রোজেন যোনী টিস্যুকে পাতলা, শুষ্ক, অনমনীয় এবং ভঙ্গুর করে ফেলে।                                                                                                                                                                                                     নিম্নলিখিত কারণগুলোর জন্য ইস্ট্রজেনের মাত্রা কমে যায় এবং ভ্যাজাইনাল অ্যাট্রোপি হয়ে থাকেঃ

  •  মেনোপোজের পূর্ব এবং পরবর্তী অবস্থা ।
  •  বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় ।
  •  ডিম্বাশয়ে অস্ত্রোপ্রচার ।
  • ক্যান্সারের জন্য পেলভিক রেডিয়েশন থেরাপির প্রয়োগ ।
  •  ক্যান্সারের নিরাময়ের জন্য কেমোথেরাপির ব্যবহার।
  • ব্রেস্ট ক্যান্সারে হরমোনাল ট্রিটমেন্টের প্বার্শপ্রতিক্রিয়া ।

 ভ্যাজাইনাল  অ্যাট্রোপি মেনোপোজের পূর্বাবস্থা থেকে বা মেনোপোজ হওয়ার পরেও অনেকদিন পর্যন্ত বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যদিও এটি সাধারণ, তারপরেও সব মহিলারা এই সমস্যা দ্বারা আক্রান্ত নাও হতে পারে। নিয়মিত যৌন সহবাস  ভ্যাজাইনাল টিস্যু্কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

যে যে বিষয়গুলোর কারনে ভ্যাজাইনাল এ্যাট্রোপি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়ঃ

  •  ]ধূমপানঃ ধূমপানের ফলে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়, ফলে যোনী এবং অন্যান্য টিস্যু পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন পায় না এবং এর ফলে দেহে ইস্ট্রোজেনের প্রভাব হ্রাস পায়। আবার যেসব মহিলা ধূমপান করেন তাদের নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই মেনোপোজ হয়ে থাকে।
  • যৌন কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকাঃ যৌন কার্যকলাপের ফলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং যোনী টিস্যুর সুস্থ্যতা বজায় থাকে। তাই যৌন কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকলে এর উপর খারাপ প্রভাব পরে।
  •  ]গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে যাদের নরমাল ডেলিভারীতে বাচ্চা হয় না তাদের এই রোগের সম্ভাবনা বেশী থাকে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ  পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১৬০৬ গুণ কম। মহিলাদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

জাতিঃ  শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। অপরপক্ষে, কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্পানিক এবং অন্যান্য জাতিদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

 যদি ইস্ট্রোজেন (ক্রিম, ট্যাবলেট বা রিং হিসেবে) সরাসরি যোনীর মধ্যে দেয়া হয়, তবে খুব জলদি এই রোগটি ভাল হতে পারে। তবে সম্পুর্ণরূপে সেরে ওঠার জন্য ২ সপ্তাহ এটি ব্যবহার করতে হবে। মুখ দিয়ে ইস্ট্রোজেন গ্রহন করলে যোনী টিস্যু পুনরায় গঠিত হতে ২ সপ্তাহের বেশি সময় লাগে।

অ্যাট্রোপিক  ভ্যাজাইনাইটিসের ফলে সাদা বা হলদেটে স্রাব দেখা দিতে পারে, তবে  এইক্ষেত্রে স্বাধারনত চুলকানি এবং দূর্গন্ধ থাকে না। এই সমস্যার মূখ্য এবং প্রধান লক্ষন হচ্ছে যোনীর শুস্কতা ও যৌন মিলনের সময় ব্যাথা অনূভব করা। এই রোগের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা হচ্ছে ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রয়োগ, যা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে গ্রহন করতে হবে। তাছাড়া, যোনীতে ব্যবহারের জন্য লুব্রিক্যান্টস এবং ময়েশ্চেরাইজার রয়েছে যা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ব্যবহার করা যায়।

এটি রোগী কি পরিমানে অস্বস্তি বা ব্যাথা অনুভব করছে এবং যৌন মিলনের সময় রক্তপাত হচ্ছে কিনা তার উপর নির্ভর করে। ভ্যাজাইনাল এ্যাট্রোফির কারনে যোনীতে লুব্রিকেশন বা পিচ্ছিলতার অভাব দেখা দেয়, এর ফলে যৌন্ মিলনের সময় প্রচন্ড ব্যাথা অনূভূত হতে পারে এবং এর সাথে ইনফেকশনেরও সম্ভাবনা থাকে।

হেলথ টিপস্‌

নিম্নলিখিত মাধ্যম দ্বারা এই রোগের ফলে সৃষ্ট যোনী শুষ্কতা এবং জ্বালাপোড়া কম করা সম্ভবঃ

  • বিভিন্ন ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের ফলে যোনীর আর্দ্রতা কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পায়।
  • লুব্রিকেন্টস এর ব্যবহার যৌন মিলনের সময় অনুভূত ব্যাথা এবং যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দেয়।
  • যৌনমিলনের ফলে সৃষ্ট উত্তেজনার কারনে যোনীতে যে তৈলাক্ত পদার্থ নিসৃত হয় তা যোনীর জ্বালাপোড়া এবং এর শুষ্কতা হ্রাস করতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

ডাঃ শাওলী বিশ্বাস

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস, পিজিটি(আরএমসি,ডিএমসি এইচ), ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল আল্ট্রাসোনোগ্রাফী(সিসিইউ)

ডাঃ সুফিয়া বেগম(শম্পী)

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস(ঢাকা), এফসিপিএস(গাইনী এন্ড অবস)

অধ্যাপক ডাঃ সালেহা বেগম চৌধুরী

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস

ডাঃ রিনুমা জাহান

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস, এমএস (গাইনোকোলজি)

অধ্যাপক ডাঃ ফেরদৌসি বেগম(ফ্লোরা)

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস (ডিএমসি) , এফসিপিএস (গাইনী এন্ড অব্‌স) , ফেলো ওয়াল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন

অধ্যাপক ব্রিগেঃ জেনারেল ডাঃ হাসিনা সুলতানা (অবঃ)

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস(ডিএমসি),, ডিজিও(ডিইউ), , এফসিপিএস, গাইনী এন্ড অব্‌স, , ল্যাপারোস্কপিক সার্জন, উচ্চতর প্রশিক্ষন ইনফার্টিলিটি(থাইল্যা

অধ্যাপক ডাঃ শামসুন নাহার বেগম হেনা

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস(ঢাকা),, এফসিপিএস(গাইনী এন্ড অবস্)

অধ্যাপক ডাঃ এ কে এম আন্‌ওয়ার-উল আজিম

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

বিএসসি, এমবিবিএস, এফসিপিএস(পাক), এফসিপিএস(বিডি), এফএসিএস, এফআইসিএস, এফআইসিএমসিএইচ