অস্থিসন্ধি শক্ত হয়ে যাওয়া (Joint stiffness or tightness)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

অস্থিসন্ধি নড়াচড়া করতে অসুবিধা হওয়ার অনুভূতি হওয়া, বা অস্থিসন্ধির নড়াচড়ার ব্যাপ্তি কমে যাওয়াকে অস্থিসন্ধি শক্ত হয়ে যাওয়া বলে। এই সমস্যার সাথে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা হওয়া ও অস্থিসন্ধি ফুলে ওঠার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আঘাত লাগা বা অস্থিসন্ধির রোগের কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে। সাধারণত আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অস্থিসন্ধির আশেপাশের স্থানের[যেমন- বারসা(bursae)] আঘাত বা ইনফ্লামেশনের কারণে সৃষ্ট ব্যথার জন্য অস্থিসন্ধির নড়াচড়া সীমিত হয়ে যেতে পারে।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-   

ব্রেস্ট ক্যান্সার (Breast cancer) ভিটামিন ‘এ’ এর অভাব জনিত রোগ (Vitamin A deficiency)
টাইফয়েড জ্বর (Typhoid fever) লেইশম্যানিয়াসিস বা কালাজ্বর (Leishmaniasis)
রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস (Rheumatoid arthritis) রিউম্যাটিক ফিভার / বাতজ্বর (Rheumatic fever)
রেবিস / জ্বলাতঙ্ক (Rabies) ব্লাস্টোমাইকোসিস (Blastomycosis)
ফ্যাট এমবলিজম (Fat embolism) চ্যাগাস ডিজিজ (Chagas disease)
শ্যাংক্রয়েড (Chancroid) কারসিনোয়েড সিন্ড্রোম (Carcinoid syndrome)
রকি মাউন্টেইন স্পটেড ফিভার (Rocky Mountain spotted fever) সাইটোমেগালোভাইরাস ইনফেকশন (Cytomegalovirus infection)
এডওয়ার্ড সিন্ড্রোম (Edward syndrome) স্কার্ভি (Scurvy)
গ্যাস গ্যাংরিন (Gas gangrene) মেকেল ডাইভারটিকুলাম (Meckel diverticulum)
এয়ার এমবলিজম (Air embolism) লেপ্টোস্পাইরোসিস (Leptospirosis)
স্পোরোট্রাইকোসিস (Sporotrichosis) প্যাটাউ সিন্ড্রোম (Patau syndrome)
প্লেগ (Plague)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলো:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের (rheumatoid arthritis) জন্য অস্থিসন্ধি কতোটা  দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। এই বিষয়টি ইনফ্লামেশন অথবা কিছু নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডির উপরও নির্ভরশীল (টেস্টের মাধ্যমে নির্ণয়যোগ্য)। কোনো ব্যক্তির ঝুঁকি যতো বেশি থাকবে, তার ততো দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাত: শ্বেতাঙ্গ ও হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ৩ গুণ বেশি।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ এক্ষেত্রে ব্যায়াম করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু ব্যায়াম করা শুরু করার পূর্বে সমস্যাটির মূল কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। অস্থিসন্ধি প্রসারণ করা এই সমস্যা দূর করার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। চিকিৎসক আপনাকে এন-এস-এ-আই-ডি (nsaids) গ্রুপের ঔষধ গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারেন।      

উত্তরঃ  আর্থ্রাইটিসের আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক ব্যক্তির শরীরে ব্যথা ও শক্ত হওয়ার অনুভূতি হয়। হাইপোথাইরয়েডিজমের (Hypothyroidism) কারণেও শক্ত হয়ে যাওয়ার অনভূতি হতে পারে। বয়স  বৃদ্ধির সাথে সাথে শরীরে শক্তভাবের সৃষ্টি হয়, কারণ বয়স বাড়লে শরীরের কোলাজেন (collagen) ফাইবার ক্রসলিঙ্কড (crosslinked) হয়ে যায়। যদি অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ঔষধ আক্রান্ত ব্যক্তির শক্তভাব কমাতে সাহায্য করে, তাহলে বুঝতে হবে তার আর্থ্রাইটিস হয়েছে।

হেলথ টিপস্‌

শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে অস্থিসন্ধির উপর কম চাপ পড়ে। এছাড়া ব্যায়াম করা ও সাঁতার কাটার মাধ্যমে মাংসপেশী ও অস্থিসন্ধির শক্তি বৃদ্ধি করা যায়। সাঁতার অস্থিসন্ধির উপর বাড়তি চাপের সৃষ্টি না করেও অস্থিসন্ধির নাড়াচাড়ার ব্যাপ্তি বৃদ্ধি করে।

অস্থিসন্ধির সুরক্ষার জন্য কাজ করা ও বিশ্রাম নেওয়ার সময়ের মধ্যে পরিবর্তন আনুন। প্রতিদিন অন্তত একবার  স্বাভাবিক ব্যাপ্তির মধ্যে শরীরের অস্থিসন্ধি আস্তে আস্তে ঘোরান। প্রয়োজনে অস্থিসন্ধির উপর চাপ ও ব্যথা কমাতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করুন।