ঘাড়ের ব্যথা (Neck pain)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

মাথার নিচে ও ঘাড়ের উপরে অস্বস্তি (চাপা ব্যথা বা তীব্র ব্যথা) অনুভব করা। সাধারণত ঘাড় নড়াচড়া করলে এই অস্বস্তি বৃদ্ধি পায়।

ঘাড়ে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। অস্বাভাবিক অঙ্গস্থিতির (posture) কারণে ঘাড়ের মাংসপেশীর উপর  চাপ পড়তে পারে। যেমন- কম্পিউটারের দিকে ঝুঁকে কাজ করলে বা কুঁজো হয়ে টেবিলে কাজ করলে এই সমস্যা হতে পারে। উইয়্যার-অ্যান্ড-টিয়ার আর্থ্রাইটিস (Wear-and-tear arthritis) ঘাড়ে ব্যথা হওয়ার অন্যতম কারণ।

সাধারণত কোনো গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হিসেবে ঘাড়ে ব্যথা হওয়ার সমস্যা দেখা দেয় না। তবে যদি ঘাড়ে ব্যথা হওয়ার সাথে সাথে হাতে অবশ ভাব, দুর্বলতা এবং কাঁধ বা বাহুতে তীব্র ব্যথা হয়, তাহলে এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-
ক্রনিক ব্যাকপেইন (Chronic back pain) মেনিনজাইটিস (Meningitis)
মাংসপেশীর খিঁচুনি বা টান (Muscle spasm) ব্রুইস (Bruise)
কারপাল টানেল সিন্ড্রোম (Carpal tunnel syndrome) সেরিব্রাল এডিমা (Cerebral edema)
ডিজলোকেশন অফ ভার্টিব্রা (Dislocation of vertebra) স্পন্ডাইলোসিস (Spondylosis)
ফ্র্যাকচার অফ ভার্টিব্রা (Fracture of vertebra) হার্ণিয়েটেড ডিস্ক (Herniated disk)
হাইপারওসমোটিক হাইপারকিটোটিক স্টেট (এইচ-এইচ-এস) (Hyperosmotic hyperketotic state (HHS)) ডিজেনারেটিভ ডিস্ক ডিজিজ (Degenerative disc disease)
ইনজুরি টু দি অ্যাবডোমেন (Injury to the abdomen) কনকাশন (Concussion)
ইনজুরি টু দি ফেস (Injury to the face) ইনজুরি টু দি হিপ (Injury to the hip)
ইনজুরি টু দি স্পাইনাল কর্ড (Injury to the spinal cord) ডিজলোকেশন অফ দি ভার্টিব্রা (Dislocation of the vertebra)
প্রাইমারী ইনসমনিয়া (Primary insomnia) সাবঅ্যারাকনয়েড হেমারেজ (Subarachnoid hemorrhage)
সিন্ড্রোম অফ ইনঅ্যাপ্রোপ্রিয়েট সিক্রেশন অফ এ-ডি-এইচ (Syndrome of inappropriate secretion of ADH (SAIDH)) ফাইব্রোমায়ালজিয়া (Fibromyalgia)
লিম্ফ্যাঞ্জাইটিস (Lymphangitis) নিউরালজিয়া (Neuralgia)
স্পন্ডিলাইটিস (Spondylitis) স্প্রেইন অর স্ট্রেইন (Sprain or strain)
সেরিঙ্গোমায়েলিয়া (Syringomyelia) টরটিকোলিস (Torticollis)
ফ্র্যাকচার অফ দি স্কাল (Fracture of the skull) ব্যাসেট ডিজিজ (Behcet disease)
ক্রনিক পেইন ডিজঅর্ডার (Chronic pain disorder) ইনজুরি টু দি ট্রাঙ্ক (Injury to the trunk)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

ঘাড়ে ব্যথা বিভিন্নভাবে হতে পারে। এর কারণে কিছুক্ষেত্রে সামান্য অসুবিধা সৃষ্টি হয়, আবার কিছু ক্ষেত্রে এর কারণে দুর্বলতাও সৃষ্টি হতে পারে। স্নায়ু মুচড়িয়ে যাওয়ার মতো সামান্য কারণ বা কোনো গুরুতর দুর্ঘটনার কারণেও ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।

নি্ম্নলিখিত বিষয়গুলি ঘাড়ে ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে-

  • সঠিক নিয়ম মেনে ব্যায়াম না করা।
  • ধূমপান করা। ধূমপানের কারণে হাড়ের ঘনত্ব কমে যেতে পারে, ফলে আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • শরীরের অতিরিক্ত ওজন। শরীরের ওজন অতিরিক্ত হলে মেরুদণ্ডের উপর বাড়তি চাপ পড়ে।
  • অঙ্গস্থিতি (posture) ঠিক না থাকা। বিশেষত বসা, দাঁড়ানো বা ঘুমানোর সময় শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অবস্থান ঠিক না থাকা।
  • একই ধরনের কাজ বারবার করা। শরীর অতিরিক্ত বাঁকালে-মোচড়ালে বা ভারী বস্তু ওঠালে শিরদাঁড়ার উপরে চাপ পড়ে, ফলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

 

লিঙ্গ: নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাত: হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে।

 

হেলথ টিপস্‌

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘাড়ের ব্যথা অঙ্গস্থিতি ও বয়সজনিত কারণে হয়ে থাকে। ঘাড়ে ব্যথা রোধ করতে মাথা শিরদাঁড়ার সোজাসুজি রাখুন, যাতে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বল মাথার অবস্থানের প্রতিকূলে ক্রিয়া না করে। এছাড়া দৈনন্দিক জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন এনেও এই ব্যথা প্রতিরোধ করা সম্ভব, যেমন-

  • দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালানো বা কম্পিউটারে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার মাঝে বারবার বিরতি নেওয়া। ঘাড়ের উপর চাপ কমাতে মাথা পিছনে রাখুন। এছাড়া দাঁতে দাঁত চেপে রাখার অভ্যাস পরিহার করুন।
  • আপনার ডেস্ক, চেয়ার ও কম্পিউটার এমনভাবে রাখুন যাতে চোখ কম্পিউটার মনিটরের সমতলে থাকে। তাছাড়া হাঁটু নিতম্বের কিছুটা নিচে রাখুন, এবং চেয়ারের বাহু রাখার জায়গা ব্যবহার করুন।
  • ফোনে কথা বলার সময় ফোন কাঁধ ও কানের মাঝে রেখে কথা বলবেন না। যদি আপনাকে ফোনে বেশি কথা বলতে হয়, তাহলে হেডসেট ব্যবহার করুন।
  • আপনি যদি ডেস্কে কাজ করেন, তাহলে ঘাড় মাঝে মাঝে প্রসারিত করুন। ঘাড় হালকা ঝাঁকি দিয়ে উপরে-নিচে করুন। ঘাড়ের মাংসপেশী প্রসারণ করতে মাথা দুই পাশে হেলানোর সময় ঘাড় নিচে রাখুন।
  • ভারসাম্যপূর্ণ ভিত্তি: বুকের সামনের দিকের অংশ প্রসারণ করলে, এবং শোল্ডার ব্লেড (shoulder blade) ও কাঁধের পিছনের অংশের শক্তি বৃদ্ধি করলে ঘাড়ের জন্য ভারসাম্যপূর্ণ ভিত্তি তৈরি হয়।
  • পেট নিচের দিকে না দিয়ে ঘুমানো: পেট নিচের দিকে রেখে ঘুমালে ঘাড়ের উপর বাড়তি চাপ পড়ে। শোয়ার সময় এমন বালিশ ব্যবহার করুন যা আপনার গলার বাঁকা অংশের জন্য সহায়ক হয়।