পিঠের নিম্নাংশে ব্যথা (Low back pain)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

পিঠের নিম্নাংশ বলতে পাঁজরের শেষ প্রান্ত ও শ্রোণীর হাড়ের (pelvic bone) মধ্যবর্তী অংশকে বোঝায়। পিঠের ব্যথা স্নায়ু, মাংসপেশী, রক্তসঞ্চালন, লিগামেন্ট, হাড় ও সন্ধির সাথে সম্পর্কযুক্ত হতে পারে। এই ব্যথা যদি স্থায়ী হয়, এবং এর সাথে যদি পিঠে শক্ত ভাব সৃষ্টি হয়, তাহলে তা মাংসপেশীর খিঁচুনির জন্য হতে পারে। আর ব্যথা যদি তীব্র, শিরশির, জ্বালা ও অবশভাবযুক্ত হয়, তাহলে স্পাইনাল নার্ভ পেইনের (spinal nerve pain) কারণে হতে পারে।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে:  যেমন-

ক্রনিক ব্যাকপেইন (Chronic back pain) মেনিনজাইটিস (Meningitis)
মাংসপেশীর খিঁচুনি বা টান (Muscle spasm) কিডনিতে পাথর (Kidney stone)
অ্যানকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস (Ankylosing spondylitis) বিনাইন কিডনি সিস্ট (Benign kidney cyst)
সিউডোহাইপোপ্যারাথাইরয়ডিজম (Pseudohypoparathyroidism) পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ (Polycystic kidney disease)
বোন ক্যান্সার (Bone cancer) সায়াটিকা (Sciatica)
ডিজলোকেশন অফ ভার্টিব্রা (Dislocation of vertebra) স্পন্ডাইলোসিস (Spondylosis)
ফ্র্যাকচার অফ ভার্টিব্রা (Fracture of vertebra) হার্ণিয়েটেড ডিস্ক (Herniated disk)
ব্র্যাকিয়াল নিউরাইটিস (Brachial neuritis) ডিজেনারেটিভ ডিস্ক ডিজিজ (Degenerative disc disease)
ডিজলোকেশন অফ দি ভার্টিব্রা (Dislocation of the vertebra) পালমোনিক ভাল্ভ ডিজিজ (Pulmonic valve disease)
হাইডেটিডিফর্ম মোল (Hydatidiform mole) ফাইব্রোমায়ালজিয়া (Fibromyalgia)
নিউরালজিয়া (Neuralgia) স্পন্ডিলাইটিস (Spondylitis)
স্প্রেইন অর স্ট্রেইন (Sprain or strain) প্যাজেট ডিজিজ (Paget disease)
ক্রনিক পেইন ডিজঅর্ডার (Chronic pain disorder) স্কোলিওসিস (Scoliosis)
ফ্র্যাকচার অফ দি নেক (Fracture of the neck) ইনজুরি টু দি ট্রাঙ্ক (Injury to the trunk)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যে সকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি পিঠের নিম্নাংশের ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে-

  • ৩০ বছরের বেশি বয়স।
  • শরীরের অতিরিক্ত ওজন।
  • গর্ভবতী হওয়া।
  • ব্যায়াম না করা।
  • মানসিক চাপ ও বিষন্নতায় ভোগা।
  • এমন কোনো পেশায় নিয়োজিত থাকা যাতে ভারী ওজন বহন করতে হয় এবং শরীর বাঁকাতে ও মোচড়াতে হয়, অথবা এমন কোনো পেশায় নিয়োজিত থাকা যার কারণে সমগ্র শরীরে কাঁপুনি সৃষ্টি হয়, যেমন- ট্রাক চালনা।
  • ধূমপান করা।

 

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে।

জাত: শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

 

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: মাংসপেশী, লিগামেন্ট, ডিস্ক ও স্নায়ুর ব্যথার কারণে পিঠের নিম্নাংশের বাম পাশে ব্যথা হতে পারে। এর সঠিক কারণ জানার জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়াজন।

উত্তর: ব্যায়াম পিঠের নিম্নাংশের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে ব্যায়াম এই ব্যথা নিরাময়ের সব থেকে কার্যকর উপায় নাও হতে পারে। পিঠের ব্যথা কমানোর জন্য সব ধরনের ব্যায়াম সবার জন্য উপকারী নয়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত ব্যায়াম করলে পিঠে ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি কমে।
 

হেলথ টিপস্‌

পিঠ মজবুত রাখতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করুন-

  • ব্যায়াম করা।
  • মাংসপেশীর শক্তি ও নমনীয়তা বৃদ্ধি।
  • শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা।

 

শরীরের ক্রিয়াশীলতা স্বাভাবিক রাখতে-

  • সঠিকভাবে দাড়ানো: শ্রোণীচক্রের/হিপের অবস্থান স্বাভাবিক রাখুন। শরীরের অঙ্গবিন্যাস সঠিক থাকলে পিঠের মাংসপেশীর উপর কম চাপ পড়ে।
  • সঠিকভাবে বসা: এমন সিটে বসুন যা আপনার পিঠের নিম্নাংশকে ভালোভাবে সহায়তা দেয়, যা ঠিকমতো ঘোরানো যায়, এবং যেটিতে হাত রাখার ব্যবস্থা আছে। পিঠের অবস্থান সঠিক রাখার জন্য পিঠের নিচে বালিশ বা মোড়ানো তোয়ালে রাখতে পারেন।
  • সঠিকভাবে ভার বহন করা: আপনার পায়ের অবস্থান এমনভাবে রাখুন যাতে তা স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে। ভার বহনের সময় পিঠ সোজা রাখুন, এবং পা শুধু হাঁটুতে ভাঁজ করুন। যে বস্তুটি বহন করবেন সেটি শরীরের কাছাকাছি রাখুন।