উত্তর: কোনো কোনো ক্ষেত্রে শারীরিক বা মানসিক চাপের কারণে তোতলানোর সমস্যা বাড়তে পারে, আবার কখনো কখনো কমতে পারে। বিভিন্ন শারীরিক চাপ যেমন হৃদস্পন্দন দ্রুত হয়ে গেলে বা রক্তচাপ বেড়ে গেলে তা তোতলানোর উপর কোনো প্রভাব ফেলে না। আবার ক্ষেত্রবিশেষে দেখা যায়, মানসিক চাপ তোতলানোর সমস্যাকে প্রশমিত করে। যেমনঃ অনেক ব্যক্তি যারা স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারে না, তারা ভীত বা আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়লে আপনাআপনি স্পষ্টভাবে কথা বলতে সক্ষম হয়। মস্তিষ্কে অবস্থিত বিভিন্ন জৈব-রাসায়নিক উপাদানের (বিশেষ করে, এড্রেনালিন ও ডোপামিন) অন্তঃপ্রতিক্রিয়ার ফলে এমন হয়ে থাকে।
টাইম প্রেসার বা নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করার চাপ, কগনেটিভ স্ট্রেস এবং জনসম্মুখে কথা বলতে ভয় কাজ করলে তা তোতলানোর সমস্যাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। অনেকেই মনে করে মনোযোগে বিঘ্ন ঘটলে তা তোতলানোর প্রবণতা কমিয়ে দেয়। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে এই তথ্যটি সত্য নয়।
সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি বাক্যের প্রথম শব্দ, শব্দের প্রথম অংশ বা কন্টেট ওয়ার্ড (content word) (বাক্যের অন্তর্ভুক্ত যে শব্দ বাক্যকে অর্থপূর্ণ করে তোলে) বারবার উচ্চারণ করে বা টেনে কথা বলে। কন্টেট ওয়ার্ডটি স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করতে না পারায় অন্যরা কথার সঠিক অর্থ ধরতে পারে না।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে কথা বলার সময় তোতলানোর সমস্যা বেড়ে যায়। যেমন- কারও নাম উচ্চারণ, টেলিফোনে বা জনসম্মুখে কথা বলা এবং সম্মানিত ব্যক্তির সাথে কথা বলার সময় এ সমস্যার আরো অবনতি ঘটে।
আবার একই কথা বারবার বললে বা একা একা নিচু স্বরে কথা বলার সময় তোলানোর প্রবণতা থাকে না। কথা বলার সময় তোতলানোর সমস্যা থাকা সত্ত্বেও অনেক ব্যক্তি স্পষ্ট উচ্চারণে বই পড়তে পারে।
মস্তিষ্কে ডোপামিনের মাত্রায় তারতম্য দেখা দিলে তা তোতলানোর সমস্যাকে প্রভাবিত করে। এছাড়াও একজন ব্যক্তির মানসিক অবস্থা বা আতঙ্ক, ভয়-ভীতি, হতাশার মতো আবেগ এ সমস্যার উপর প্রভাব ফেলে।