লক্ষণটি কথা বলতে সমস্যা হওয়া, অ্যাফাসিয়া(Aphasia), ভারবাল অ্যাপরেক্সিয়া (Verbal apraxia) ও কথা বলতে অক্ষম হওয়া ইত্যাদি নামেও পরিচিত।
মস্তিষ্কের কিছু নির্দিষ্ট অংশের স্বাভাবিক ক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার কারণে কথা বলা ও বোঝায় সমস্যা হলে তাকে অ্যাপরেক্সিয়া বলে। এই সমস্যার জন্য শব্দ স্মরণ করতে অসুবিধা হওয়া থেকে শুরু করে কথা বলা, পড়া ও লেখার সমস্যা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যা প্রতীকি ভাষা বোঝার ক্ষেত্রেও অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে। মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলস্বরূপ এই সমস্যা হয়ে থাকে। মূলত ব্রেন স্ট্রোকের কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়। মস্তিষ্কের যেসব ক্ষতির সাথে অ্যাপরেক্সিয়া সম্পর্কযুক্ত, সেগুলির কারণে ক্যান্সার, মৃগীরোগ ও আলঝাইমারস্ ডিজিজের মতো মস্তিষ্কের অন্যান্য রোগ হতে পারে।
অ্যাফাসিয়া সাধারণত স্ট্রোক বা মাথায় আঘাত লাগার পর হঠাৎ করেই দেখা দেয়। তবে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ব্রেন টিউমার ও অন্যান্য কিছু রোগের কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। অ্যাফাসিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি কতোটা অক্ষম হবেন, তা তার মস্তিষ্কের ক্ষতিগ্রস্ত স্থান এবং ক্ষতির তীব্রতার উপর নির্ভর করে।
অ্যাফাসিয়ার মূল কারণের চিকিৎসা করানোর পর আক্রান্ত ব্যক্তিকে স্পিচ থেরাপি (speech therapy) দেওয়া হয়। স্পিচ থেরাপিতে মূলত ভাষাগত দক্ষতা পুনরূদ্ধারের জন্য আক্রান্ত ব্যক্তিকে কিছু অনুশীলন করানো হয়্। এছাড়া এর সাথে সাথে ভাব প্রকাশের অন্যান্য পদ্ধতিও আক্রান্ত ব্যক্তিকে শেখানো হয়ে থাকে। আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা অনেক ক্ষেত্রে তাদের ভাববিনিময়ের সঙ্গী হিসেবে এই থেরাপিতে অংশগ্রহণ করে।
নিম্নলিখিত বিষয়গুলি কথা বলতে সমস্যা হওয়ার ঝুকিঁ বৃদ্ধি করে:
লার্নিং ডিজ্যাবিলিটি (শিখতে সমস্যা হওয়া) থাকা: যেসব ব্যক্তির লার্নিং ডিজ্যাবিলিটি [ডিসলেক্সিয়া(dyslexia)] থাকে তাদের প্রাইমারি প্রোগ্রেসিভ অ্যাফাসিয়া (primary progressive aphasia) হওয়ার ঝুঁকি বেশি হতে পারে। সম্ভবত এই দু’টি সমস্যা ভাষা ব্যবহার ও বোঝার সাথে সম্পর্কযুক্ত হওয়ার কারণে এমন হয়ে থাকে।
কিছু জিন মিউটেশন (জিন পরিবর্তন) থাকা: কিছু বিরল জিন মিউটেশন এই সমস্যার সাথে সম্পর্কযুক্ত। আপনার পরিবারের/বংশের কিছু ব্যক্তির যদি প্রাইমারি প্রোগ্রেসিভ অ্যাফাসিয়া থাকে, তাহলে আপনারও এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বয়েছে।
যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে
লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।
জাত: হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। কৃষ্ণাঙ্গ, শ্বেতাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে।
হেলথ টিপস্
শিশুদের কথা বলার সমস্যা প্রতিরোধ করতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করুন:
প্রতিদিন আপনার শিশুর সাথে কথা বলুন, পড়ুন এবং খেলা করুন।
শিশুর দাঁত ও মুখের যত্ন নিন।
আপনার শিশু ঠিকমতো শুনতে পায় কিনা, তা পরীক্ষা করান।
শিশুর কথা বলায় সমস্যা আছে কিনা, তা নিশ্চিত হতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করান।