ট্যারা (Crosseyed)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

Cross-eyed বা ট্যারা চোখ, এসোট্রপিয়া (Esotropia) বা এসোডেভিয়েশন (Esodeviation) নামে পরিচিত। এসোট্রপিয়া হলো স্ট্রাবিসমাস বা স্কুইন্ট এর একটি ধরণ, যে অবস্থায় চোখের অবস্থান ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। ফলে একই বস্তুর উপর একই সাথে উভয় চোখ ফোকাস করতে পারে না। একটি চোখ সামনের কোনো বস্তুর ওপর ফোকাস করলে অন্য চোখটি সেদিকে ফোকাস না করে উপরে-নীচে বা ডানে-বাঁয়ে ফোকাস করে। সাধারণ কথায় চোখের এই সমস্যাকে ট্যারা চোখ বলা হয়।

কোনো বস্তুর উপর ফোকাস করতে ছয় ধরনের পেশি একই সাথে উভয় চোখের ক্ষেত্রে কাজ করে। স্ট্রাবিসমাস দেখা দিলে এই পেশিগুলো একত্রে কাজ করতে পারে না। যার ফলে দুই চোখের অবস্থান ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় দুই চোখ থেকে ভিন্ন ভিন্ন দুটি ছবির সংকেত মস্তিষ্কে পৌঁছায়। শিশুদের ক্ষেত্রে, অপেক্ষাকৃত দুর্বল চোখ থেকে পাঠানো ছবিটি মস্তিষ্ক বাতিল করে দেয়। স্ট্রাবিসমাসের সঠিক সময়ে চিকিৎসা করা না হলে এই দুর্বল চোখের দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যায় যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হয় এমব্লিয়োপিয়া (amblyopia)। কখনও কখনও এমব্লিয়োপিয়া থেকে স্ট্রাবিসমাস দেখা দেয়। এমব্লিয়োপিয়া লেজি আই (Lazy Eye) নামেও পরিচিত।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যেমন:

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলো:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

যেসকল কারণে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় সেগুলো হলো:

  • পরিবারের অন্য কারো স্ট্রাবিসমাস, এমব্লিয়োপিয়া বা গ্লুকোমার সমস্যা থাকলে।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে গ্লুকোমা বা চোখে ছানি পড়ার সমস্যা থাকলে।
  • জেনেটিক কারণে চোখের কোনো ক্ষতি হলে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

জাতি: শ্বেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ ও হিস্পানিকদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা একগুণ কম। অপরদিকে, অন্যান্য জাতির ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: সাধারণত চার মাসের নীচের শিশুদের সাময়িকের জন্য চোখ ট্যারা হয়ে থাকে। তবে এর চাইতে বেশি বয়সের শিশুর এই সমস্যা দেখা দিলে তা চোখের অন্য কোনো গুরুতর সমস্যা যেমনঃ চোখে ছানি পড়া বা টিউমারের জন্যও হতে পারে। 

উত্তর: দীর্ঘদিন ধরে স্ট্রাবিসমাসে আক্রান্ত হলে মস্তিষ্ক শুধুমাত্র একটি চোখের ক্ষেত্রেই ক্রিয়াশীল হয়ে পড়ে। তাই স্ট্রাবিসমাস দেখা দেওয়ার সাথে সাথে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও নিউরোসার্জন দেখাতে হবে। 

হেলথ টিপস্‌

চোখের এ সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। তবে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে এর চিকিৎসা করা হলে এ সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়। নবজাতক ও যেসব শিশু এখনও স্কুলে যায় নি তাদের নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতে হবে, বিশেষ করে পরিবারের অন্য কারো যদি স্ট্রাবিসমাসের সমস্যা থাকে। ৩-৫ বছর বয়সী শিশুদের নিয়মিত চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চোখ পরীক্ষা করাতে হবে।