অনিয়মিত মাসিক (Infrequent Menstruation)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

একজন প্রজনন ক্ষমতাসম্পন্ন নারীর  প্রতি ২১-৩৫ দিন পরপর প্রত্যেক মাসে মাসিক বা পিরিয়ড হয়ে থাকে। ৩৫ দিনের অধিক সময় ধরে মাসিক বন্ধ থাকলে এ অবস্থাকে অনিয়মিত মাসিক বা অলিগোম্যানোরিয়া (Oligomenorrhea) বলা হয়। আবার ৯০ দিনের অধিক সময় পর্যন্ত মাসিক সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকলে বা ১৫ বছরের পরও কোনো মেয়ের মাসিক শুরু না হলে তাকে অ্যাম্যানোরিয়া (amenorrhea) বলে।

কারণ

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জন্মবিরতিকরণ পিল ব্যবহারের কারণে মহিলাদের মাসিক অনিয়মিত হয়ে পড়ে। পিল ব্যবহার শুরু করার ৩ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত মাসিক ধীরে ধীরে অনিয়মিত হতে শুরু করে এবং রক্তপাতের পরিমাণ কমতে থাকে। কখনো কখনো সম্পূর্ণভাবে মাসিক বন্ধ হয়ে যায়। তবে সমস্যা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম (polycystic ovary syndrome) বা সংক্ষেপে পি-সি-ও-এস (PCOS) এর লক্ষণ হতে পারে। হরমোনজনিত পরিবর্তন ও ডিম্বাশয়ে সিস্ট হওয়ার ফলেও মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। আবার ডায়াবেটিস বা থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে মাসিক অনিয়মিত হয়ে যায়। রক্তে প্রোল্যাক্টিন (prolactin) নামক প্রোটিনের মাত্রা বেড়ে গেলে বা অ্যান্টিসাইকোটিক (anti-psychotics) এবং অ্যান্টিএপিলেপ্টিক (anti-epileptics) জাতীয় ঔষধ ব্যবহারের কারণে এ লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

বেশি পরিশ্রম বা খেলাধুলার কারণে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। খাদ্যাভাসে বিভিন্ন অস্বাভাবিকতা যেমন ক্ষুধামন্দা বা বুলিমিয়া দেখা দিলে এ লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে বয়ঃসন্ধিকালে এ লক্ষণ দেখা দেওয়া স্বাভাবিক।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

জাতিঃ হিস্প্যানিক ও শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম । অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ আমরা যখন কোনো কারণে দুশ্চিন্তা করি তখন এড্রিনাল গ্রন্থি থেকে কর্টিসল নামক হরমোন নিঃসরণ হতে থাকে। এই কর্টিসল হরমোন এস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন ও ডি-এইচ-ই-এ (DHEA) নামক যৌন হরমোনকে প্রভাবিত করে যার ফলে মাসিক অনিয়মিত হয়ে পড়ে।

উত্তরঃ নিম্নলিখিত সমস্যাগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ-

  • মাসিক চলাকালে সময়ে তীব্র ব্যথা হওয়া।
  • স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি রক্তপাত হওয়া বা জমাট বাঁধা রক্ত নির্গত হওয়া।
  • যোনিপথে স্রাবের সাথে দুর্গন্ধ থাকা।
  • তীব্র জ্বর হওয়া।
  • ৭ দিনের বেশি মাসিক হওয়া।
  • মাসিকের সময় বা মেনোপজের পর যোনিপথে রক্ত দেখা দেওয়া।
  • মাসিক আগে নিয়মিত হলেও তা লক্ষণীয়ভাবে অনিয়মিত হয়ে যাওয়া।
  • মাসিকের সময় বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
  • দীর্ঘ সময় ধরে একটি তুলার প্যাড ব্যবহার করলে, তুলার রক্ত বা ক্লোরিন অথবা রেয়ন জাতীয় তুলা থেকে অ্যালার্জিজনিত কারণে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় (১০২ ডিগ্রীর উপর জ্বর, মাথা ঝিম ঝিম করা, বমি ও মাথা ঝিমঝিম করা) যা টক্সিক শক সিন্ড্রোম নামে পরিচিত।