জ্বরঠোসা (Cold sore)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

ঠোঁট ও ঠোঁটের চারপাশে সৃষ্ট ক্ষুদ্র ফুসকুড়িকে জ্বরঠোসা বলে। সাধারণত এই ফুসকুড়িগুলি পুঞ্জাকারে সৃষ্টি হয়। ফুসকুড়িগুলি ফেটে যাওয়ার পর ক্ষত স্থানের উপর শক্ত আবরণ তৈরি হয়ে থাকে। সাধারণত দুই সপ্তাহের মধ্যেই জ্বরঠোসা কমে/সেরে যায়। জ্বর ঠোসায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শের (যেমন চুম্বন) মাধ্যমে  এই রোগ আরেক ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে। হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের (এইচ-এস-ভি-১)[ herpes simplex virus (HSV-1)] কারণে জ্বরঠোসা হয়ে থাকে। এই ভাইরাসটি জেনিটাল হার্পিস (genital herpes) সৃষ্টিকারী এইচ-এস-ভি-২ ভাইরাসের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এই দুটি ভাইরাস মুখগহ্বর ও যৌনাঙ্গকে আক্রান্ত করে। এইচ-এস-ভি জনিত ইনফেকশনকে স্থায়ীভাবে নিরাময় করা সম্ভব নয়, এবং এর কারণে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পুনরায় ফুসকুড়ি হতে পারে। সাধারণত শারীরিক-মানসিক চাপ এবং শরীরের দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ এই ফুসকুড়ি দেখা দেয়। ভাইরাসরোধী ঔষধ গ্রহণ করে জ্বরঠোসা দ্রুত সারানো যায়্। এই রোগে বারবার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকেও ভাইরাসরোধী ঔষধ কমিয়ে দেয়।

কারণ

কয়েকটি বিশেষ ধরনের হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে জ্বরঠোসা হয়। সাধারণত এইচ-এস-ভি-১ ভাইরাসের কারণেই এই রোগ দেখা দেয়। তবে দুই ধরনের ভাইরাসই মুখমণ্ডল এবং যৌনাঙ্গে ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। হার্পিস ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষতস্থান থেকে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে। এছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত বাসনপত্র, শেভিং রেজার এবং তোয়ালের মাধ্যমেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির ফুসকুড়ি থেকে তরল ক্ষরণের সময় জ্বরঠোসা সবচেয়ে বেশি সংক্রামক অবস্থায় থাকে, তবে আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বকে কোনো ফুসকুড়ি না থাকলেও তার শরীর থেকে জ্বরঠোসার ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে। শরীরে ইনফেকশন সৃষ্টির পর এই ভাইরাস ত্বকের স্নায়ু কোষের মধ্যে সুপ্তাবস্থায় থেকে যায়, এবং পরবর্তীতে আবারও আক্রান্ত স্থান বা তার পাশে ইনফেকশন সৃষ্টি করতে পারে। যেসব কারণে এই ভাইরাস আবারও সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে সেগুলি হল:

  • জ্বর
  • রজঃস্রাব
  • শারীরিক বা মানসিক চাপ
  • ক্লান্তি
  • রোদ লাগা

লক্ষণ

চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তিদের মধ্যে সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষনগুলো দেখতে পানঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

সমগ্র বিশ্বের প্রায় ৯০% প্রাপ্তবয়স্কের শরীরেই জ্বরঠোসা সৃষ্টিকারী ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এমনকি যাদের শরীরে এর ইনফেকশনের কোনো লক্ষণ পাওয়া যায় না, তাদের শরীরেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যেসব ব্যক্তির ইমিউন সিস্টেম দুর্বল (রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা) তাদের শরীরে এই ভাইরাসজনিত সমস্যা বেশি দেখা দেয়। যে সব রোগ ও চিকিৎসা জ্বরঠোসার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে সেগুলি হল:

  • এইচ-আই-ভি/এইডস
  • এ্যাকজিমা
  • তীব্রভাবে দগ্ধ/পুড়ে যাইয়া।
  • ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃৎ কেমোথেরাপি।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: নারীদের এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাত: শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। হিস্প্যানিক, কৃষ্ণাঙ্গ এবং অন্যান্য জাতির মধ্যে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উ: যদি জ্বরঠোসার লক্ষণ ৭ দিনের মধ্যে প্রশমিত না হয়, তাহলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিৎ। যদি আক্রান্ত স্থানে চুলকানি, ব্যথা, লাল লাল ভাব থেকে যায় বা বৃদ্ধি পায়; যদি জ্বর হয়, বা আক্রান্ত স্থান ফুলে ওঠে তাহলেও চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।

উ: জ্বরঠোসা নিরাময়ের কোনো উপায় নেই, তবে এর লক্ষণগুলিকে কমিয়ে রাখা যেতে পারে।

উ: কিছু ভাইরাসরোধী ঔষধ ব্যবহার করে জ্বরঠোসার ভাইরাসের সংক্রমণ কমানো যেতে পারে। যেমন- লেমন বাম ক্রিম (lemon balm cream)। প্রাথমিক অবস্থায় লাইসিন (lysine) ১০০০মিগ্রা দিনে তিনবার গ্রহণ করলে জ্বরঠোসা দ্রুত সেরে যায়। এছাড়া ডার্মাটলোজিস্ট লেজার চিকিৎসা করার পরামর্শও দিতে পারেন।

হেলথ টিপস্‌

জ্বরঠোসার লক্ষণ উপশমের জন্য নিম্নে লিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করা যেতে পারে:

  • ডকোস্যানল (Docosanol): চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াও এই ক্রিমটি ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ক্রিমটি বারবার ব্যবহার করতে হবে। এটি ব্যবহার করলে জ্বরঠোসা স্বাভাবিক সময়ের পূর্বে সেরে যায়।
  • শুষ্ককারী পদার্থ: অ্যালকোহলের মতো শুষ্ককারী পদার্থ প্রয়োগ করলে জ্বরঠোসা দ্রুত সেরে যেতে পারে।
  • বরফ বা ঠান্ডা পানি: ফুসকুড়ির উপর বরফ প্রয়োগ করলে বা ফুসকুড়িগুলি ঠান্ডা পানিতে ভেজানো কাপড় দিয়ে মুছে ফেললে উপকার পাওয়া যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

অধ্যাপক ডাঃ মেজর জেনারেল কে এম ওমর হাসান(অবঃ)

মেডিসিন ( Medicine), নিউরোলজি ( স্নায়ুতন্ত্র) ( Neurology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), এফআরসিপি(গ্লাসগো)

ডাঃ আমিনুল ইসলাম

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস, এমএসসি, এমআরসিপি(ইউকে)

অধ্যাপক ডাঃ একে এম আমিনুল হক

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস, , এফসিপিএস, , এমডি, , এফসিপিএস(আমেরিকা)

ডাঃ মোঃ আব্দুস শাকুর খাঁন

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস, এমসিপিএস(মেডিসিন), এমডি(চেষ্ট)

অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল কাদের আকন্দ

মেডিসিন ( Medicine), কার্ডিওলজি ( হার্ট) ( Cardiology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), এমডি(কার্ডিওলজী), এফএসিসি(আমেরিকা)

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অধ্যাপক ডাঃ শেখ মোঃ বাহার হোসেন (অবঃ)

গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology), মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), এফআরসিপি(এডিন), এফআরসিপি(গ্লাসগো), এফএসিপি(আমেরিকা), এফ গ্রাষ্ট্রো(সাংহাই)

ডাঃ মোহাম্মদ মোরতজা খায়ের

মেডিসিন ( Medicine), পালমোনোলজি ( ফুসফুস) ( Pulmonology)

এমবিবিএস, এমসিপিএস(মেডিসিন), এমডি(চেস্ট)

ডাঃ মোঃ মাসুদুল হক সিরাজী(শামীম)

ডার্মাটোলজি এন্ড ভেনেরিওলজি ( চর্ম ও যৌন) ( Dermatology & Venereology)

এমবিবিএস(এসএসএমসি), বিসিএস(স্বাস্থ্য), এমডি(ডার্মাটোলজী)