গনোরিয়া (Gonorrhea)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

এই রোগটি গনোকক্কাল ইনফেকশন (Gonococcal Infection) নামেও পরিচিত।

গনোরিয়া ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা সংঘটিত একটি ইনফেকশন, যা যৌনমিলনের মাধ্যমে ছড়ায়। এই রোগ সাধারণত মূত্রনালী, পায়ুপথ অথবা গলায় হয়ে থাকে। নারীদের ক্ষেত্রে এই রোগ জরায়ুমুখে হতে পারে। গর্ভবতী মহিলারা যদি এই রোগে আক্রান্ত হয় তবে তাদের শিশুদেরো এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।  শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগটি সাধারণত চোখে আক্রমণ করে থাকে।

গনোরিয়া এমন একটি ইনফেকশন যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন লক্ষণ ছাড়াই হয়ে থাকে। কোন কোন সময় এতে আক্রান্ত হলেও টের পাওয়া যায় না। অনিরাপদ যৌনমিলন থেকে বিরত থাকা, অথবা যৌনমিলনের সময় কনডম ব্যবহার করা অথবা শুধুমাত্র একজন সঙ্গীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন ইনফেকশন থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

কারণ

নাইসেরিয়া গনোরিয়া (Neisseria gonorrhoeae) নামক ব্যাক্টেরিয়ার কারণে গনোরিয়া  হয়ে থাকে। এই রোগ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের যৌন সম্পর্ক যেমন ওরাল সেক্স, পায়ুপথ অথবা যোনিপথের সেক্সের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করে।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিতলক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন

চিকিৎসা

 চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত ঔষধগুলি গ্রহণ করার পরামর্শদিয়ে থাকেন:  

azithromycin cefixime trihydrate
ceftriaxone doxycycline
erythromycin

চিকিৎসকেরা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত টেস্টগুলি করার পরামর্শদিয়ে থাকেন:  

সি-বি-সি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট) (CBC, Complete Blood Count)
ই-এস-আর (এরাইথ্রোসাইট সেডিমেন্টেশন রেট) (ESR, Erythrocyte Sedimentation Rate)
নিউক্লিয়িক এসিড এমপ্লিফিকেশন টেষ্ট (Nucleic Acid Amplification Tests)
কালচার এন্ড সেন্সিটিভিটি (Culture & Sensitivity)

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

যে সকল কারণে এই রোগের  ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে-

  • অল্প বয়স্ক ব্যক্তিদের এই রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি। 
  • একের অধিক যৌন সঙ্গী থাকা।
  • পূর্বে গনোরিয়ায় আক্রান্ত হওয়া।
  • অন্যান্য যৌনবাহিত ইনফেকশন থাকা।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতিঃ কৃষ্ণাঙ্গদের ৩গুণ এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।অপরপক্ষে, হিস্পানিকদের ১গুণ, শ্বেতাঙ্গদের ৩গুণ এবং অন্যান্যদের ২গুণ এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ  গনোরিয়া আক্রান্ত মায়ের অপরিণত শিশু প্রসব অথবা বারবার গর্ভপাত হতে পারে। প্রসবের সময় মা এর কাছ থেকে ইনফেকশন বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করে। এর থেকে বাচ্চার অন্ধ্যত্ব, অস্থি সন্ধি/ঘাড়ে ইনফেকশন অথবা রক্তে প্রাণনাশক ইনফেকশন হতে পারে। গর্ভাবস্থায় গনোরিয়া শনাক্ত করা গেলে বাচ্চার এই ধরনের জটিলতা অনেকাংশে  কমানো সম্ভব। সুচিকিৎসার জন্য গর্ভবতী মাকে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপণ্ণ হওয়া উচিৎ।

উত্তরঃ  ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সকল ঔষধ সেবনের সাত দিন পর যৌনমিলন শুরু করা যেতে পারে। 

উত্তরঃ গনোরিয়ার চিকিৎসা করা না হলে পুরুষ এবং নারী উভয়ের স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি এবং স্থায়ী সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর থেকে মহিলাদের পেলভিক ইনফ্লামেটরী ডিজিজ (PID) হতে পারে। পেলভিক ইনফ্লামেটরী ডিজিজ (PID) এর কিছু জটিলতা গুলো হলোঃ

  • একটপিক প্রেগনেন্সি (গর্ভাশয়ের বাহিরে ভ্রূণ তৈরী হলে)
  • ক্ষতগ্রস্ত টিস্যুর সৃষ্টি হয় যা নিষেক নালীতে (fallopian tubes) বাধা প্রদান করে।
  • বন্ধ্যাত্ব
  • তলপেটে দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা।

পুরুষদের ক্ষেত্রে গনোরিয়ার কারনে অণ্ডকো্ষে্র নালীতে প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। মাঝে মধ্যে এর চিকিৎসা করা না হলে রক্তে অথবা সন্ধিতে এ রোগ ছড়িয়ে যেতে পারে, এরকম অবস্থা জীবনের জন্য হুমকি সরূপ হতে পারে।

চিকিৎসা করা না হলে গনোরিয়া থেকে এইডস (AIDS) রোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। যারা অসুরক্ষিত যোনীপথ, পায়ুপথ এবং ওরাল সেক্সে অভ্যস্থ তাদের গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

হেলথ টিপস্‌

নিম্নে গনোরিয়া রোগের কতগুলো প্রতিরোধক টিপস্‌ দেওয়া হলোঃ

  • সেক্সের সময় কনডম ব্যবহার করা: যৌনমিলন থেকে বিরত থাকলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা। কিন্তু যেকোন ধরণের যৌন সম্পর্ক যেমন যোনিপথ, পায়ুপথ অথবা ওরাল সেক্সের ক্ষেত্রে অবশ্যই কনডম ব্যবহার করতে হবে।
  • সঙ্গীকে সেক্স দ্বারা সংক্রমিত ইনফেকশনের টেস্ট/পরীক্ষার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা:  নিজের সঙ্গী গনোরিয়া সহ অন্যান্য সেক্স এর মাধ্যমে ইনফেকশনের পরীক্ষা করিয়েছে কিনা তা জানতে হবে। যদি না করিয়ে থাকে তাহলে তাকে তা করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে।
  • কারও অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে তাদের সাথে যৌনমিলন থেকে বিরত থাকা:  যৌন সঙ্গীর সেক্স দ্বারা সংঘটিত কোন ইনফেকশন যেমন প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া অথবা যৌনাঙ্গে ফুসকুড়ি বা ফোস্কা/ঠোসার লক্ষণ দেখা দিলে তার সাথে যৌন সম্পর্কে যাওয়া যাবে না।
  • গনোরিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে গেলে  নিয়মিত পরীক্ষা করানো: গনোরিয়া ইনফেকশন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ডাক্তারের শরণাপণ্ণ হতে হবে। অতীতে সেক্স দ্বারা সংঘটিত ইনফেকশন অথবা নতুন যৌন সঙ্গী অথবা একের অধিক যৌন সঙ্গী থাকলে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

Mahfuzur Rahman

মেডিসিন ( Medicine), কার্ডিওলজি ( হার্ট) ( Cardiology)

এমবিবিএস, ডি-কার্ড (এনআইসিভিডি), এমসিপিএস (মেডিসিন), এমডি (মেডিসিন)

লেঃ কর্ণেল ডাঃ মুন্সী নূর আহমেদ (অবঃ)

মেডিসিন ( Medicine), ডায়াবেটোলজিষ্ট ( Diabetologist)

এমবিবিএস, ডিসিআইএস, এএফএসআই, সিসিডি(বারডেম)

ডাঃ মোঃ শফিকুর রহমান পাটওয়ারী

মেডিসিন ( Medicine), কার্ডিওলজি ( হার্ট) ( Cardiology)

এমবিবিএস, এমডি(কার্ডিওলজী), এফসিপিএস(মেডিসিন), এমসিপিএস(মেডিসিন), এফইএসসি (ইউরোপ), এফএসসিসি(আমেরিকা), ডিএসসি(আমেরিকা)

প্রফেসর ডাঃ খ্রীষ্টফার এ বাড়ৈ

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস(ঢাকা), ডিটিএম এন্ড এইচ লিভারপুল(ইউকে), এমপিএইচ(ঢাকা)

ডাঃ মোঃ গোলাম মোস্তফা

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস(ঢাক), ডিটিএমএন্ডএইচ(ইংল্যান্ড))

ডাঃ মোঃ মবিনুল রহমান

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস, এমডি(মেডিসিন), এফসিপিএস, এফপি(মেডিসিন)

অধ্যাপক ডাঃ সাদাত আলী

ডার্মাটোলজি এন্ড ভেনেরিওলজি ( চর্ম ও যৌন) ( Dermatology & Venereology)

এমবিবিএস, ডিডিভি(ডিইউ)

ডাঃ মোঃ হাসান মাসুদ

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস(ঢাকা), এমএস(অর্থো), এ ও ফেলো-থাইল্যান্ড