যোনি পথের ছত্রাকের ইনফেকশন (Vaginal yeast infection)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

যোনি পথের ছত্রাকের ইনফেকশন হলে যোনি বা যোনিপথে ইনফ্লামেশন বা জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হওয়া। এ অবস্থায় যোনিপথে অস্বস্তি, অত্যাধিক চুলকানি ও স্রাব দেখা দেয়। এই ইস্ট ইনফেকশন দ্বারা যোনিপথ ও যোনিপথের মুখে অবস্থিত টিস্যুগুলো আক্রান্ত হয়ে থাকে। এটি  Vaginal Candidias নামে পরিচিত। চার ভাগের তিন ভাগ মহিলা জীবনের কোনো না কোনো সময় এই ইনফেকশন দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এটি কোনো যৌনবাহিত ইনফেকশন নয়। যেকোন সাধারণ প্রক্রিয়ায় এর চিকিৎসা সম্ভব। তবে এই ইনফেকশন বারেবারে দেখা দিলে (সাধারণত এক বছরে চারবার বা এর বেশি) সেক্ষেত্রে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে অধিক যত্নশীল হতে হবে এবং থেরাপির দীর্ঘমেয়াদী কোর্স নিতে হবে।

কারণ

অধিকাংশ মহিলারই কখনো না কখনো যোনি পথে ছত্রাকের ইনফেকশন হয়ে থাকে। এর কারণগুলো নিম্নে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। ক্যানডিডা এলবিকানস খুব পরিচিত একটি ছত্রাকের নাম। এটি ত্বক, পরিপাক নালী, মুখগহ্বর ও যোনিপথে খুব সামন্য পরিমাণে পাওয়া যায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ছত্রাক কোনো ইনফেকশনের সৃষ্টি করে না।

সাধারণ অবস্থায় ক্যানডিডা ও যোনিপথের অন্যান্য জীবাণুর মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকে। কখনও কখনও ক্যানডিডার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে এই ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং যার ফলে যোনি পথে ইস্ট ইনফেকশন দেখা দেয়। যেসকল কারণে ক্যানডিডা এলবিকানসের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় সেগুলো হলোঃ

  • অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার যা যোনিপথে জীবাণুর ভারসাম্য নষ্ট করে।
  • গর্ভাবস্থা বা গর্ভধারণ
  • স্থূলতা বা মেদবৃদ্ধি
  • ডায়াবেটিস

যৌন মিলনের মাধ্যমে ইস্ট ইনফেকশন ছড়ায় না। তবে এই ইনফেকশনে আক্রান্ত সঙ্গীর সাথে যৌন মিলনের ফলে কিছু কিছু ব্যক্তির পুরুষাঙ্গে র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি এবং চুলকানিসহ অন্যান্য লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

যোনিপথের অন্যান্য ইনফেকশন ও ইস্ট ইনফেকশন এক নয়। তবে বারেবারে এই ইনফেকশন দেখা দিলে তা অন্য কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

যেসকল কারণে এ রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো;

  • অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারঃ অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারের কারণে মহিলাদের মধ্যে এ রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। Broad-spectrum অ্যান্টিবায়োটিকের (যা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে) ব্যবহারের ফলে যোনিপথে অবস্থিত উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং যোনিপথে ইস্টের পরিমাণ অধিক হারে বাড়তে থাকে।
  • এস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়াঃ এস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে মহিলাদের মধ্যে এ রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এস্ট্রোজেন হরমোন থেরাপি প্রয়োগ, জন্মবিরতিকণ পিলের ব্যবহার এবং গর্ভাবস্থায় এ রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসঃ অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস মহিলাদের মধ্যে এ রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
  • দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ Corticosteroid থেরাপি বা HIV ইনফেকশনের জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পেলে ইস্ট ইনফেকশন হওয়ার সম্ভবনা বৃদ্ধি পায়।
  • যৌন মিলনঃ যদিও এটি কোনো যৌন ইনফেকশন নয়, তবে যেসকল উপায়ে ক্যানডিডা যোনিপথে প্রবেশ করে তার মধ্যে যৌন মিলন অন্যতম।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

 লিঙ্গঃ মহিলাদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

জাতিঃ কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্পানিক ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে, শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা একগুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ নির্দিষ্ট কিছু উপায়ে স্ত্রী যৌনাঙ্গের ইনফেকশনের ঝুঁকি কমানো যায়। যেসব কাপড় তাপ ও আর্দ্রতা ধরে রাখে ইস্ট ইনফেকশন হলে এসব কাপড় পরিধান করা যাবে না। নাইলনের তৈরী প্যান্টি বা অন্তর্বাস ও টাইট জিন্স পরার কারনে ইস্ট ইনফেকশন হতে পারে। এই ইনফেকশন প্রতিরোধের জন্য অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। অনেকের মতে যেসব মহিলা দই বেশি খায় তাদের এই ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।

হেলথ টিপস্‌

যেসকল উপায়ে যোনি পথে ছত্রাকের ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি কমানো যায় সেগুলো হলোঃ

  • ডুশিং(Douching) করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • কটন বা সুতির অন্তর্বাস এবং ঢিলাঢালা প্যান্ট ও স্কার্ট পরতে হবে।
  • ভেজা জামাকাপড় খুব দ্রুত পরিবর্তন করতে হবে।
  • হট টাব বা বাথ টাবে গোসল করা এড়িয়ে চলতে হবে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

ডাঃ নাসিমা আখতার

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস, ডিজিও(গাইনী এন্ড অবস), এমএস(গাইনী এন্ড অবস)

ডাঃ সানজিদা পারভীন

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস , বিসিএস (স্বাস্থ্য), এফসিপিএস (গাইনী এন্ড অবস্‌)

সহকারী অধ্যাপক ডাঃ রিফাত আরা

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস, এফিপিএস, এমএস(গাইনী এন্ড অবস)

ডাঃ সুফিয়া বেগম(শম্পী)

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস(ঢাকা), এফসিপিএস(গাইনী এন্ড অবস)

ডাঃ হাফিজা আক্তার

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এম বি বি এস (ডি ইউ), এফ সি পি এস (অবস এন্ড গাইনী)

অধ্যাপক ডাঃ ফেরদৌসি বেগম(ফ্লোরা)

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস (ডিএমসি) , এফসিপিএস (গাইনী এন্ড অব্‌স) , ফেলো ওয়াল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন

অধ্যাপক ডাঃ সুলতানা রাজিয়া বেগম

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস, এফসিপিএস (গাইনী), জিএইসিএস অবসটেট্রিক্স

ডাঃ লুবনা শারমিন

গাইনি ও অবসটেট্রিক্স ( Obstetrics & Gynaecology)

এমবিবিএস(এমডি রাশিয়া), সনোলজিস্ট ডিএমইউ(ডিইউ), পিজিটি(গাইনী এন্ড অবস)