শুষ্ক বা খসখসে মাথার ত্বক (Dry or Flaky Scalp)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

লক্ষণটি খুশকি ও মাথার ত্বকের শুষ্কতা নামেও পরিচিত।

মাথার ত্বক থেকে উঠে যাওয়া মৃত কোষকে খুশকি বলে। খুশকি ও মাথার ত্বকের শুষ্কতা ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা। যেহেতু স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের কোষের বিনাশ ঘটে, তাই মাথার ত্বকে কিছুটা খুশকি সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক (৪৮৭,০০০টি কোষ/ সেমি২)।  তবে কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে স্থায়ীভাবে বা  কোনো নির্দিষ্ট কারণে বেশি পরিমাণে (৮০০,০০০টি কোষ/সেমি২) খুশকি সৃষ্টি হতে পারে। এর সাথে সাথে ত্বকে লাল লাল ভাব ও চুলকানি হতে পারে।

খুশকি কোনো গুরুতর সংক্রামক রোগ নয়, তবে এর কারণে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই সমস্যার চিকিৎসা করাও কঠিন হয়ে পড়ে। তবে খুশকি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। নিয়মিত সাধারণ শ্যাম্পু ব্যবহার করে অল্প মাত্রার খুশকি রোধ করা যেতে পারে। তবে খুশকি তীব্র রূপ নিলে ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত শ্যাম্পু প্রয়োগ করা প্রয়োজন।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-                                     

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

যে কোনো ব্যক্তির খুশকি হতে পারে, তবে নিম্নোক্ত বিষয়গুলি খুশকির ঝুঁকি বৃদ্ধি করে-

·       বয়স: সাধারণত একজন ব্যক্তি পূর্ণবয়স্ক হওয়ার পর তার খুশকির সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা মধ্যবয়স অব্দি থেকে যেতে পারে। তবে বৃদ্ধরাও এই সমস্যায় ভুগতে পারেন। কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে খুশকির সমস্যা সমগ্র জীবনব্যাপী স্থায়ী হয়।

·       লিঙ্গ: যেহেতু খুশকির সমস্যা পুরুষদের বেশি হয়, তাই গবেষকরা ধারণা করেন যে, পুরুষদের কিছু হরমোন খুশকি হওয়ার পিছনে ভূমিকা রাখে। এছাড়া পুরুষদের মাথার ত্বকে তেল উৎপন্নকারী গ্রন্থি বেশি থাকে। খুশকি সৃষ্টির পিছনে এই তেল উৎপন্নকারী গ্রন্থিগুলিরও ভূমিকা আছে।

·       তৈলাক্ত চুল ও মাথার ত্বক: ম্যালাসেজিয়া (Malassezia) নামক ফাঙ্গাস খাদ্য হিসেবে মাথার ত্বকের তেল গ্রহণ করে থাকে। তাই যেসব ব্যক্তির ত্বক ও চুল বেশি পরিমাণে তৈলাক্ত, তাদের খুশকি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

·       অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: জিঙ্ক, ভিটামিন বি ও বিশেষ ধরনের স্নেহজাতীয় উপদানসমৃদ্ধ খাদ্যগ্রহণ না করলে খুশকি হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

·       বিশেষ কিছু রোগ:  অজানা কারণে পারকিনসন্স ডিজিজের মতো স্নায়বিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সেবোরিক ডার্মাটাইটিস ও  খুশকি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া এইচ-আই-ভি, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খুশকি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কোনো ব্যক্তির শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলেও তারও খুশকির সমস্যা হতে পারে।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাত: শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্প্যানিক ও অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ বিভিন্ন ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। কেটোকোনাজল (ketoconazole), সেলেনিয়াম সালফাইড (selenium sulfide), জিঙ্ক পাইরিথিওন (zinc pyrithione) এবং স্যালিসাইলিক অ্যাসিড (salicylic acid) যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে। শ্যাম্পুতে কাজ না হলে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন।

হেলথ টিপস্‌

নিয়মিত শ্যাম্পু করার পাশাপাশি খুশকি রোধ করার জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলি অনুসরণ করুন:

  • মানসিক ও শারীরিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: মানসিক ও শারীরিক চাপ সমগ্র শরীরকে প্রভাবিত করে কিছু রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।  খুশকি হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও শারীরিক ও মানসিক চাপের ভূমিকা রয়েছে।
  • স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যগ্রহণ: আপনার খাদ্যতালিকায় এমন খাদ্য রাখুন যেগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জিঙ্ক, ভিটামিন বি ও বিশেষ ধরনের স্নেহজাতীয় উপাদান থাকে। এই উপাদানগুলি খুশকি কমাতে সাহায্য করে।
  • প্রসাধনী দ্রব্যের কম ব্যবহার: হেয়ার স্প্রে, জেল, মস ও হেয়ার ওয়াক্স ব্যবহার করলে সেগুলি জমে চুলে ও মাথার তালুকে তৈলাক্ত করে দিতে পারে।
  • রোদ এড়িয়ে চলা: খুশকির নিরাময়ের জন্য রোদ উপকারী। কিন্তু যেহেতু আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি আপনার ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত করে, এবং ত্বকের ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে, তাই রৌদ্রস্নান করবেন না। তাই ঘরের বাইরে অল্প সময় অতিবাহিত করুন, এবং মুখমণ্ডল ও শরীরে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।