ঘন ঘন মাসিক (Frequent menstruation)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

লক্ষণটি ঘন ঘন ঋতুস্রাব এবং পলিমেনোরিয়া (Polymenorrhea) নামেও পরিচিত।

জরায়ুর এক ধরনের অস্বাভাবিক রক্তপাতকে পলিমেনোরিয়া বলে। মহিলাদের ঋতুচক্র ২১ দিনের কম হলে এই সমস্যা দেখা দেয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পলিমেনোরিয়া এবং মেটরোরেজিয়ার ( metrorrhagia) মধ্যকার পার্থক্য নির্ণয় করা কঠিন। তবে ২১ দিনের চেয়ে কম সময়ের একটি নির্দিষ্ট ব্যবধানে রক্তপাত হওয়াকেই সাধারণত পলিমেনোরিয়া বলা হয়্। ঋতুচক্রের স্বাভাবিক ব্যাপ্তি সাধারণত ২১ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে হয়ে থাকে। মহিলাদের যেদিন প্রথম রক্তপাত (যে কোনো মাত্রার) হয়, সেই দিনকেই ঋতুচক্রের প্রথম দিন হিসেবে ধরা হয়।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-   

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

অনিয়মিত মাসিক ও জরায়ুর অস্বাভাবিক রক্তপাতের বেশ কিছু কারণ এবং পলিমনোরিয়া হওয়ার  কারণ একই। মানসিক এবং শারীরিক চাপ, অতিরিক্ত ব্যায়াম, নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ গ্রহণ এবং পেরিমেনোপজ (perimenopause) পলিমনোরিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। শরীরের নিম্নাংশের অঙ্গসমূহের রোগও এর কারণ হতে পারে। বিশেষত পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের (polycystic ovarian disease) মতো হরমোনজনিত সমস্যার কারণে পলিমনোরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে।

জাত:  হিস্প্যানিক ও শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে। কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ ২৪ দিনের কম ব্যবধানে ঋতুস্রাব হলে গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। হরমোন, থাইরয়েড ও পিটুইটারি (pituitary) গ্রন্থির সমস্যা বা অন্যান্য কিছু সমস্যার কারণে এমন হতে পারে।     

উত্তরঃ স্থায়ীভাবে মাসে এক বারের বেশি ঋতুস্রাব হলে এই সমস্যার কারণ নির্ণয়ের জন্য গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। ঔষধ গ্রহণ করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু ঘন ঘন ঋতুস্রাব হওয়ার মূল কারণ না জেনে ঔষধ গ্রহণ করা উচিৎ নয়। এ ধরনের অনেক সমস্যাই ঔষধ গ্রহণের মাধ্যমে সমাধান করা যায় না।

হেলথ টিপস্‌

কিছু কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে জন্মনিরোধক ঔষধ ঋতুচক্রের ব্যাপ্তি স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। তবে সব ধরনের ঋতুচক্রের অস্বাভাবিকতা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।

নিয়মিত শ্রোণীচক্রের পরীক্ষা করা হলে প্রজননতন্ত্রের ক্ষতিসাধনকারী সমস্যাগুলি দ্রুত ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকে।

এছাড়া নিম্নলিখিত বিষয়গুলি দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন-

  • ৯০ দিনের চেয়ে বেশি সময় ঋতুস্রাব বন্ধ থাকা, কিন্তু গর্ভধারণ না করা।
  • নিয়মিত থাকার পর পিরিয়ড অনিয়মিত হয়ে যাওয়া।
  • ৭ দিনের বেশি রক্তপাত হওয়া।
  • স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি রক্তপাত হওয়া, এবং ১-২ ঘন্টার মধ্যে একাধিক প্যাড বা ট্যামপন প্রয়োজন হওয়া।
  • ঋতুচক্রের ব্যাপ্তি ২১ দিনের কম বা ৩৫ দিনের বেশি হওয়া।
  • পিরিয়ডের মধ্যবর্তী সময়েও রক্তপাত হওয়া।
  • পিরিয়ডের সময় তীব্র ব্যথা হওয়া।
  • হঠাৎ করে জ্বর হওয়া ও ট্যামপন ব্যবহারের পর অসুস্থ বোধ করা।
  • ঋতুচক্রের উপর লক্ষ্য রাখুন। এ ব্যাপারে সতর্ক হলে কোন বিষয়টি আপনার জন্য স্বাভাবিক এবং কোনটি অস্বাভাবিক, তা বুঝতে সুবিধা হবে। ঋতুচক্র সম্পর্কে আপনার আরও কোনো প্রশ্ন থাকলে চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করুন।