দেহভঙ্গিজনিত/অঙ্গবিন্যাসের সমস্যা (Posture problems)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

Posture বলতে সঠিক দেহভঙ্গি অর্থাৎ দাঁড়ানো বা বসার সঠিক ভঙ্গিকে বোঝায়। দুর্বলতা, ব্যথা বা ভারসাম্যহীনতার জন্য দেহভঙ্গিজনিত বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।

কারণ

এ লক্ষণ বিভিন্ন কারণে দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে বিরতি ছাড়া দীর্ঘক্ষণ একইভাবে বসে বা দাঁড়িয়ে কাজ করার ফলে মেরুদন্ড ঐ নির্দিষ্ট অবস্থান অনুযায়ী বেঁকে যায়, যেমন-  এক নাগাড়ে ঝুঁকে কোনো বস্তু নিচ থেকে উপরের দিকে উঠানোর ফলে থোরাসিক স্পাইন (thoracic spine) সামনের দিকে ক্রমশ বেঁকে যেতে থাকে। এছাড়াও শারীরিক পরিশ্রম ও আবেগজনিত কারণেও এ লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলো:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যান্য পেশাজীবীদের তুলনায় বাস ও ট্রাক চালকদের পিঠ ও ঘাড় ব্যথা সহ অন্যান্য হাড় ও মাংশপেশীর (মাস্কিউলোস্ক্যালেটাল ডিজঅর্ডারে) রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। গাড়ি চালানোর জন্য দীর্ঘসময় কোনো বিরতি ছাড়া একই ভঙ্গিমায় বসে থাকার জন্য এ সমস্যাটি হয়ে থাকে। আবার দীর্ক্ষক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে থাকার কারণে দেহের উপরের অংশের প্রান্তীয় বা পার্শ্বীয় ভাগে এবং ঘাড়ে ব্যথা হয়ে থাকে। বিশেষ করে যে হাত দিয়ে কম্পিউটারের মাউস ব্যবহার করা হয় সে হাতে ব্যথা হয়। বিরতিহীনভাবে দীর্ঘক্ষণ অস্বাভাবিক ভঙ্গিমায় বসে থাকার কারণে পিঠে ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতি: কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ২ গুণ বেশি। হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ২ গুণ কম। শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১৯ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: সঠিক ভঙ্গিমায় দাঁড়ানো, বসা ও চলাফেরা খরা খুবই জরুরি। কেননা দেহ ভঙ্গিমায় ত্রুটি থাকলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে. যেমন- মাথাব্যথা, অবসাদ, ঘাড়ের মাংসপেশীতে চাপ অনুভব করা এবং শরীরে ব্যথা হওয়া। এমনকি এর ফলে কর্মক্ষমতাও হ্রাস পেতে পারে। দীর্ঘক্ষণ নিচের দিকে ঝুঁকে কাজ করার ফলে মাংসপেশী ও লিগামেন্ট শরীরের ভারসাম্য সঠিক রাখতে পারে না। যার ফলে শরীরে ব্যথা ও  ক্লান্তি বোধ হয়। দীর্ঘদিন যাবৎ এ সমস্যায় ভুগলে পরবর্তীতে মেরুদন্ড, কাঁধ, কোমর, হাঁটু ও পায়ের পাতায় বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।  

হেলথ টিপস্‌

এই সমস্যা প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করা যেতে পারে:

  • দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করার জন্য আরামদায়ক চেয়ার বেছে নিতে হবে যাতে মেরুদন্ড ও কোমরে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে, এবং মেরুদন্ডের আকৃতি অনুযায়ী দেহের ভারসাম্য সঠিক থাকে। প্রয়োজনে বসার সময় আলাদাভাবে পিঠের পেছনে কুশন ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • চেয়ারে বসার পর পায়ের পাতা মেঝেতে সমান্তরালভাবে রাখতে হবে। বসার স্থান বেশি উঁচু হলে পা রাখার জন্য ছোট টুল ব্যবহার করা যেতে পারে। এর ফলে পায়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে এবং দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পরও ক্লান্তিবোধ কাজ করে না।
  • দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিস  উঁচু স্থানে বা খুব দূরে না রেখে আপনার হাতের কাছেই রাখুন। কেননা উঁচু স্থান থেকে হাত প্রসারিত করে কোনো জিনিস নেওয়ার চেষ্টা করলে পেশীতে চাপ পড়ে। কম্পিউটারে কাজ করার সময় কি-বোর্ড ও মাউস হাতের কাছে রাখতে হবে যাতে কাজ করার সময় হাত ও কাঁধে চাপ না পড়ে।
  • টানা একনাগাড়ে কাজ না করে কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিতে হবে। একভাবে অনেকক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে না থেকে বসা ও দাঁড়ানোর স্থান ও ভঙ্গিমা পরিবর্তন করতে হবে।