অ্যাপ্রেক্সিয়া (Apraxia)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

এপ্র্যাক্সিয়া মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের একটি সমস্যা । এ অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তি নির্দেশানুযায়ী কাজ করতে পারে না।  নির্দেশিত কাজটি আক্রান্ত ব্যক্তি পুরোপুরি বুঝতে পারলেও, আগে থেকেই এই কাজটি তার আয়ত্তে থাকলেও, তার কাজটি সম্পন্ন করার ইচ্ছা থাকলেও ও শারীরিক কোনো সমস্যা এক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি না করলেও তিনি তা করতে পারেন না । মস্তিষ্কে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে এপ্র্যাক্সিয়া দেখা দেয়। জন্মগতভাবে এপ্র্যাক্সিয়া হতে পারে। আবার কখনও কখনও  কোনো ব্যক্তির মধ্যে এ সংক্রান্ত কোনো সমস্যা না থাকলেও  এপ্র্যাক্সিয়া দেখা দেয়, যা এ্যাকোয়ার্ড এপ্র্যাক্সিয়া নামে পরিচিত। জন্মগতভাবে যে এপ্র্যাক্সিয়া দেখা দেয় তার লক্ষণগুলো  ধীরে ধীরে দেখা দেয়। তবে এটি কি কারণে হয়ে থাকে তা এখনও অজানা।

কারণ

মস্তিষ্কের যেসকল ত্রুটি বা রোগের কারণে এপ্র্যাক্সিয়া হতে পারে সেগুলো হলো- স্ট্রোক, ব্রেন টিউমার, কোনো আঘাত বা ইনফেকশনের কারণে মস্তিষ্কের কোনো ত্রুটি হওয়া, অ্যালহঝেইমার ডিজিজ (Alzheimer disease), হান্টিংটন ডিজিজ (Huntington disease), কর্টিকোবেজাল গ্যাংলিয়োনিক ডিজেনারেশন (Corticobasal ganglionic degeneration) বা সংক্ষেপে সি-বি-ডি (CBD) এবং ফ্রন্ট টেম্পোরাল ডিমেনশিয়া (Front temporal dementia)।

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলো:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

এপ্র্যাক্সিয়া স্ট্রোকের সাথে সম্পর্কযুক্ত অর্থাৎ স্ট্রোকের কারণে এপ্র্যাক্সিয়া হতে পারে। তাই যেসকল কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় তা একই সাথে এপ্র্যাক্সিয়ার ঝুঁকিও বৃদ্ধি করে। যেমন:

  • পূর্বে কখনও স্ট্রোক বা অন্যান্য হৃদরোগ (cardiovascular disease) হওয়া।
  • পূর্বে কখনও ইশকেমিক অ্যাটাক হওয়া।
  • কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া।
  • কিডনি ফেইলিয়রের চিকিৎসার জন্য ডায়ালাইসিস করা।
  • উচ্চ রক্তচাপ।
  • ডায়াবেটিস।
  • ধূমপান।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতি: শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম। কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ২ গুণ বেশি। হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ৩ গুণ বেশি।  অন্যান্য জাতির মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ৯ গুণ বেশি।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: শিশুদের ক্ষেত্রে এপ্র্যাক্সিয়া খুব বেশি হয় না। প্রতি ১০০০ জন শিশুর মধ্যে ১-১০ জন বা ৩-৫ শতাংশ শিশুর এপ্র্যাক্সিয়া হয়ে থাকে। তবে অন্যান্য ভাষাগত সমস্যা ছাড়া শুধুমাত্র এপ্র্যাক্সিয়াতে আক্রান্ত শিশুর সঠিক সংখ্যা বলা খুব কঠিন। 

উত্তর: কোনো বস্তু দেখে এর অবিকল প্রতিরূপ আঁকতে ব্যর্থ হলে তাকে কনস্ট্রাকটিভ এপ্র্যাক্সিয়া বলে। মস্তিষ্কের ডান অংশে ক্ষত বা ত্রুটি দেখা দিলে এ সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা নির্ণয়ের জন্য আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিভিন্ন ধরনের দ্বিমাত্রিক জ্যামিতিক নকশা যেমন বৃত্ত, চতুর্ভুজ, পঞ্চভুজ ও বহুভুজের প্রতিরূপ তৈরি করতে বলা হয়। আবার একই সাথে বিভিন্ন ত্রিমাত্রিক নকশারও (১ ইঞ্চি উচ্চতাসম্পন্ন ব্লক) প্রতিরূপ আঁকতে বলা হয়। 

উত্তরঃ এপ্র্যাক্সিয়া, অগোছালো কথা বলা, উচ্চারনে সমস্যা হওয়া, তোতলানোসহ কথা বলার ক্ষেত্রে অন্যান্য সমস্যা হতে পারে। 

হেলথ টিপস্‌

এপ্র্যাক্সিয়া প্রতিরোধ করা সহজ নয়। যেহেতু এপ্র্যাক্সিয়া স্ট্রোকের সাথে সম্পর্কযুক্ত তাই স্ট্রোক প্রতিরোধের মাধ্যমে এপ্র্যাক্সিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিম্নলিখিত উপায়ে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায়-

  • নিয়মিত ব্যায়াম ও অনুশীলন করতে হবে।
  • পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ করতে হবে।
  • ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করতে হবে।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।