ব্রণ (Acne)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

শরীরের ত্বকের লোমগ্রন্থি তেল ও ত্বকের মৃত কোষ দ্বারা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ব্রণ হয়ে থাকে। ব্রণ সাধারণত মুখমন্ডলে, ঘাড়ে, বুকে, পিঠে এবং কাঁধে দেখা যায়। যদিও এর কার্যকরী চিকিৎসা রয়েছে কিন্তু ব্রণ স্থায়ী হতে পারে । ব্রণ ও এর দাগ ধীরে ধীরে মিশে যায়,  একটি মিশে যেতে শুরু করলে অন্যটি হঠাৎ করে নতুনভাবে দেখা দেয়।

যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে তাদের মধ্যে প্রায় ৭০ থেকে ৮৭ শতাংশের ব্রণ  হয়ে থাকে, এমনকি ছোট ছোট বাচ্চাদেরও ব্রণ হয়ে থাকে।

ব্রণের তীব্রতা বেশি হলে  ত্বকে দাগের সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে মানসিক চাপও দেখা দেয় । যত দ্রুত এর চিকিৎসা করা হবে ততোই মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা কমবে।

কারণ

চারটি প্রধান কারণ যার ফলে ব্রণ হয়ে থাকেঃ

  • ত্বকে তেল উৎপাদন (Oil production)
  • ত্বকের মৃত কোষ (Dead skin cells)
  • লোমকূপের আবদ্ধতা(Clogged pores)
  • ব্যাকটেরিয়া (Bacteria)

ব্রণ সাধারণত মুখমন্ডলে, ঘাড়ে, বুকে, পিঠে এবং কাঁধে দেখা যায়। ত্বকের এই অংশগুলোতে সবচেয়ে বেশি তেলগ্রন্থি থাকে। যখন লোমকুপ তেল ও ত্বকের মৃত কোষ দ্বারা আবদ্ধ হয়ে যায় তখন ব্রণ সৃষ্টি হয়।

লোমকূপ তেলগ্রন্থির সাথে যুক্ত থাকে, এইসব গ্রন্থি সিবাম নামক একটি তৈলাক্ত পদার্থ নিঃসরন করে যা চুল এবং ত্বককে সিক্ত রাখে। সাধারণত সিবাম লোমকুপের মাধ্যমে পুরো চুল জুড়ে সঞ্চালিত হয়।

যখন ত্বকে প্রচুর পরিমাণে সিবাম এবং মৃত কোষ উৎপন্ন হয়, তখন উভয় মিলে লোমকূপ আবদ্ধতার সৃষ্টি করে , এর ফলে একটি নরম প্রকোষ্ঠ সৃষ্টি হয় এবং এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয় যেখানে ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকতে পারে। যদি এই আবদ্ধ স্থান ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হয়, তবে প্রদাহের সৃষ্টি হয়ে থাকে।

এই আবদ্ধ লোমকূপ গ্রন্থিকোষকে স্ফীত করে এবং হোয়াইটহেডস উৎপন্ন করে । এই প্রকোষ্ঠ যদি ত্বকের উপরের দিকে থাকে তবে তা কালো হয়ে যায় এবং এর ফলে ব্ল্যাকহেডস দেখা দেয়। ব্ল্যাকহেডস দেখলে মনে হয় যে প্রকোষ্ঠে ময়লা জমে আছে, কিন্তু আসলে প্রকোষ্ঠটি তেল এবং ব্যাকটেরিয়া দ্বারা পূর্ণ থাকে যা বাতাসের সংস্পর্শে এলে বাদামী বর্ণ ধারণ করে।

যখন আবদ্ধ লোমকূপ সংক্রমিত হয়, তখন ব্রণটি লাল বর্ণ ধারণ করে এবং ত্বক সিস্টের মত ফুলে উঠে।  ত্বকের ঘর্মগ্রন্থি ব্রনের সাথে সম্পর্কিত নয়।

লক্ষণ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসকেরা নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি চিহ্নিত করে থাকেন:

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

যে যে বিষয়ের কারণে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়ঃ

  • গর্ভাবস্থা (Pregnancy)
  • স্টেরয়েডের ব্যবহার (Steroid use)
  • টেস্টোস্টেরোন (Testosterone)
  • ইস্ট্রোজেন (Estrogen)
  • ফেনাইটোইন (Phenytoin) জাতীয় ঔষধ
  • অত্যাধিক ঘাম (Excessive sweating)
  • মানসিক চাপ (Stress)
  • বংশ ও জিনগত কারণ (Genetic linkage)
  • এন্ডোক্রাইন ডিজঅর্ডার (Endocrine disorders)

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

লিঙ্গঃ পুরুষদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম। মহিলাদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে।

জাতিঃ শ্বেতাঙ্গ এবং হিস্পানিক মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের গড়পড়তা সম্ভাবনা রয়েছে। অপরপক্ষে, কৃষ্ণাঙ্গ এবং হিস্পানিকদের মধ্যে এই রোগ নির্ণয়ের সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর:  মহিলাদের যে কোনো বয়সে ব্রণ হতে পারে। এটি লাল বর্ণের গুটি, পুঁজযুক্ত গুটি, হোয়াইটহেডস, ব্ল্যাকহেডস প্রভৃতি রুপে দেখা যেতে পারে।

উত্তরঃ শিশুদের ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে, তাই এক্ষেত্রে কোনো লক্ষণ নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। শিশুদের ব্রণ দেখতে কিশোর-কিশোরীদের ব্রণের মতই হয়ে থাকে যাতে লাল রঙের গুটি এবং ব্ল্যাকহেডস দেখা দেয়।

হেলথ টিপস্‌

একবার যদি মুখে ব্রণ উঠতে শুরু করে, তবে এর জন্য সঠিক চিকিৎসার প্রয়োজন কারন তা নতুন করে ব্রন ওঠার ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করবে। চিকিৎসকের সাথে কথা বলে জানতে হবে কিভাবে ত্বককে ব্রণমুক্ত রাখা সম্ভব।

নিম্নে কতগুলো ব্রণের প্রতিরোধক টিপস্‌ দেওয়া হলঃ

  • যে স্থানে ব্রণ আছে সে স্থানটি দিনে দুইবার ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
  • অতিরিক্ত তেল দূর করার জন্য ক্রীম ব্যবহার করতে হবে।
  • তেলমুক্ত মেক-আপ ব্যবহার করতে হবে।
  • ঢিলেঢালা পোষাক পরতে হবে।
  • শারীরিক পরিশ্রমের পর গোসল করতে হবে।
  • যে জায়গায় ব্রন হয়েছে সে জায়গা স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

ডাঃ মোঃ কবীরউজ জামান

মেডিসিন ( Medicine), গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি ( খাদ্যনালী, পরিপাকতন্ত্র) ( Gastroenterology)

এমবিবিএস, , এমসিপিএস, , এফসিজিপি(ইউএসএ)

অধ্যাপক ডাঃ সৈয়দ ওয়াহিদুর রহমান

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস(ঢাকা), এফসিপিএস(মেডিসিন)

ডাঃ আবু রায়হান সিদ্দিক

মেডিসিন ( Medicine)

এম বি বি এস (ডিএমসি), এম আর সি পি (ইউকে)

ডাঃ মোঃ শাহীদুর রহমান খাঁন

মেডিসিন ( Medicine), পালমোনোলজি ( ফুসফুস) ( Pulmonology)

এমবিবিএস, এমসিপিএস(মেডিসিন), এফসিপিএস(মেডিসিন), এমডি(চেষ্ট), এফসিসিপি(ইউএসএ)

ডাঃ মোঃ আব্দুল কাইয়ুম

মেডিসিন ( Medicine), পালমোনোলজি ( ফুসফুস) ( Pulmonology)

এমবিবিএস, এমডি(চেষ্ট), এফসিসিপি(আমেরিকা)

ডাঃ গোবিন্দ চন্দ্র রায়

কার্ডিওলজি ( হার্ট) ( Cardiology), মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস, এফসিপিএস(মেডিসিন), এমডি(কার্ডিওলজী)

প্রফেসর ডাঃ খ্রীষ্টফার এ বাড়ৈ

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস(ঢাকা), ডিটিএম এন্ড এইচ লিভারপুল(ইউকে), এমপিএইচ(ঢাকা)

ডাঃ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর উল আলম (সোহেল)

মেডিসিন ( Medicine)

এমবিবিএস (ডিএমসি), এফসিপিএস (মেডিসিন)