বিছানায় মুত্রত্যাগ (Bedwetting)

শেয়ার করুন

বর্ণনা

শিশুদের বিছানায় মূত্রত্যাগ একটি সাধারণ সমস্যা। ৭ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের বিছানায় মূত্রত্যাগকে স্বাভাবিক হিসিবে ধরা হয়। এই বয়সে শিশুদের মূত্রাশয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণরূপে নাও আসতে পারে। তবে এই সময়ের পরও বিছানায় মূত্রত্যাগ অব্যাহত থাকলে সঠিকভাবে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। এই সমস্যার চিকিৎসা করিয়ে এবং শিশুদের ঠিকভাবে মূত্রত্যাগ করা শিখিয়ে সমস্যাটি দূর করা সম্ভব।

কারণ

বিভিন্ন কারণে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারেঃ যেমন-   

  • অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিজঅর্ডার (Attention deficit hyperactivity disorder) (ADHD)
  • ইউরিনারী ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (Urinary tract infection)
  • স্থূলতা (Obesity)
  • কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস (Contact dermatitis)
  • প্রাইমারী ইনসোমনিয়া (Primary insomnia)
  • ব্র্যাকিয়াল নিউরাইটিস (Brachial neuritis)
  • ওভারিয়ান সিস্ট (Ovarian cyst)
  • অ্যালার্জি (Allergy)

সংশ্লিষ্ট লক্ষণসমূহ

এই লক্ষণের সাথে অন্যান্য যেসকল লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলোঃ

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিছানায় মূত্র ত্যাগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে:

  • লিঙ্গ: বিছানায় মূত্রত্যাগের সমস্যা যে কারোরই হতে পারে, তবে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের সমস্যাটি হওয়ার সম্ভাবনা দুই গুণ বেশি।
  • বংশগত কারণ: শিশু অবস্থায় কোনো ব্যক্তির বিছানায় মূত্র ত্যাগের সমস্যা থাকলে তার সন্তানদেরও এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • অ্যাটেনশন ডেফিসিট ( Attention-deficit) হাইপার অ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার (hyperactivity disorder (ADHD): যেসব শিশুদের ADHD থাকে, তাদের মধ্যে বিছানায় মূত্রত্যাগ করার প্রবণতা বেশি।

যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে

 লিঙ্গ: পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পড়তা সম্ভাবনা থাকে । নারীদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১ গুণ কম।

জাতি:  হিস্প্যানিকদের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ২ গুণ কম। শ্বেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য জাতির মানুষের মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দেওয়ার গড়পরতা সম্ভাবনা থাকে।

   

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তরঃ  বিছানায় মূত্রত্যাগ স্নায়ুতন্ত্রের ক্রিয়াশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে নির্দেশ করে।  অধিক শর্করা গ্রহণের মতো খাদ্যাভ্যাসের সমস্যা এই সমস্যাটিকে ত্বরান্বিত করতে পারে। তবে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মূত্রাশয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।  এই নিয়ন্ত্রণ শরীর/মস্তিষ্কের সুসমন্বয়ের উপর নির্ভরশীল।

উত্তরঃ  বিছানায় মূত্রত্যাগ হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে সমস্যাটি একজন ব্যক্তির জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর হতে পারে। বিছানায় মূত্রত্যাগের স্বাভাবিক শতকরা পরিমাণ নিম্নরূপ:

৫ বছর- ১৫%

১০ বছর- ৫%

১৮ বছর- ১%

যদি সমস্যাটি দীর্ঘ সময় (৬ মাসের বেশি সময়) পর আবার দেখা দেয়, বা সমস্যাটি যদি অন্য কোনো স্নায়বিক সমস্যা, মুত্রাশয়ের ইনফেকশন, ব্যথা ও সকাল বেলায় মূত্র ত্যাগের অনিয়ম ইত্যাদির সাথে দেখা দেয়, তাহলে এটিকে অস্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়।

হেলথ টিপস্‌

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণ করে বিছানায় মূত্রত্যাগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব:

  • সন্ধ্যায় শিশুকে কম পরিমাণে পানীয় দেওয়া: শিশুর জন্য পানীয় গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ, তাই দিনের বেলায় শিশুর পানীয় গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন নেই।  সকাল ও দুপুর বেলায় তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় পান করতে দিন, যাতে সন্ধ্যা বেলায় তাদের বেশি পানীয় গ্রহণ করতে না হয়। তবে আপনার শিশু সন্ধ্যাবেলায় খেলাধূলা করলে তার গ্রহণকৃত পানীয়ের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন নেই।
  • ক্যাফেইনযুক্ত বেভারেজ ও খাদ্য পরিহার: ক্যাফেইনযুক্ত বেভারেজ শিশুদের গ্রহণ না করা উত্তম, কারণ ক্যাফেইন মূত্রাশয়ের উত্তেজক হিসেবে কাজ করে। বিশেষত সন্ধ্যা বেলায় শিশুদের ক্যাফেইনযুক্ত বেভারেজ  গ্রহণ করা উচিৎ নয়।
  • শিশুকে দুই বার মূত্রত্যাগ করানো: আপনার শিশুকে বিছানায় যাওয়ার পূর্বে একবার এবং ঘুমানোর ঠিক আগে আগে আরেকবার মূত্রত্যাগ করার অভ্যাস করান। প্রয়োজনে তাকে রাতের বেলায় মূত্রত্যাগ করতে শেখান। রাতের বেলায় শিশুরা যাতে সহজে ঘর থেকে টয়লেটে যেতে পারে সেজন্য ঘরে মৃদু আলোর ব্যবস্থা রাখুন।
  • নিয়মিত মূত্রত্যাগের অভ্যাস করানো: দিনে এবং সন্ধ্যায় শিশুকে দুই ঘন্টা পর পর মূত্রত্যাগের অভ্যাস করান। মূত্রের চাপ সৃষ্টি হলেই শিশুকে মূত্রত্যাগ করতে বলুন।
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসা: আপনার শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তা চিকিৎসা করান। এজন্য চিকিৎসক মল নরমকারী ঔষধ গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারেন।